দীর্ঘ বারো মাসের পাওয়া না পাওয়াকে পেছনে ফেলে নতুন আশার আলো নিয়ে আসে বছরের প্রথম দিন। এদিনে পুরনো বছরের ব্যর্থতা, নৈরাশ্য, ক্লেদ-গ্লানি ভুলে গিয়ে নতুন ভাবে নতুন পথ চলার শুরু হয় স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশায়। এই নিয়েই আমাদের আজকের বিষয় বাংলা নববর্ষ রচনা।
![বাংলা নববর্ষ রচনা বৈশিষ্ট্য রচনা](https://banglarachana.com/wp-content/uploads/2020/11/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7-%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0.png?ezimgfmt=rs:712x400/rscb51/ng:webp/ngcb51)
সূচি তালিকা
ভূমিকা:
পৃথিবীর প্রতিটি জাতিসত্তার কাছে সেই জাতির ঐতিহ্যগত নতুন বছরের সূচনা পরম পবিত্র বলে গণ্য হয়। বাঙালিও এর ব্যতিক্রম নয়। সাধারণ বাঙালি জীবনে বছরের যে কয়েকটি দিন সকল প্রকার ক্লেদ এবং গ্লানিকে ভুলিয়ে মনের অন্তঃস্থলে নতুন আনন্দের উচ্ছ্বাস জাগিয়ে তোলে, সেই দিনগুলির মধ্যে অন্যতম হলো বাংলা নববর্ষের সূচনাকাল।
বাংলা নববর্ষ সুদীর্ঘকাল ধরে প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাঙালি সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে বসন্ত ঋতুর অন্তিম মাস চৈত্রের অবসানে বৈশাখের সূচনার মধ্যে দিয়ে বাঙালি নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। বর্ষবরণের অনাবিল আনন্দে উদ্ভাসিত বাঙালির জীবন পুরাতন বছরের সকল দুঃখ ও গ্লানির কথা ভুলে নতুন করে বাঁচার আশায় বুক বাঁধতে থাকে। এই প্রসঙ্গেই কবি লিখেছেন-
“নিশি অবসান,ওই পুরাতন
বর্ষ হলো গত
আমি আজি ধূলিতলে এ জীর্ণ জীবন
করিলাম নত
বন্ধু হওশত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও
ক্ষমা করো আজিকার মতো
পুরাতন বছরের সাথে
বাংলা সনের ইতিহাস সম্পর্কে বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিভিন্ন মতবাদ প্রচলিত রয়েছে। কোন কোন ঐতিহাসিক মনে করেন সৌর পঞ্জিকা অনুসারে বহুকাল আগে থেকেই সৌর বছরের প্রথম দিন বাংলা, আসাম, কেরালা, মনিপুর, নেপাল ইত্যাদি বিভিন্ন ভারতীয় প্রদেশে মূলত ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে নববর্ষ পালিত হতো।
অন্যদিকে আবার বহু ঐতিহাসিক মনে করেন যে বাংলা বর্ষপঞ্জিকার পরিমার্জন এর মাধ্যমে খাজনা আদায়ের ব্যবস্থা কে একটি সুষ্ঠু রূপ দেওয়ার জন্য মুঘল সম্রাট আকবর সৌর পঞ্জিকা এবং হিজরি সনের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিকার প্রচলন করেন। কিন্তু বহু ঐতিহাসিক আবার এই দাবিকে নাকচ করে দিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিকে হিন্দু ঐতিহ্যের বিক্রমী দিনপঞ্জীর সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করেন।