Loading..

শিক্ষায় অগ্রযাত্রা

২৯ জুন, ২০২২ ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

জিলহজ্জ মাসের ১ম ১০ দিনের আমল

।।জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশদিনের আমল ও ফযীলত।।


.


প্রথম দশ দিনে নফল রোযা ও রাতে ইবাদত করা।


জিলহজ্ব মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার পর থেকে দশ তারিখ পর্যন্ত যত দিন সম্ভব নফল রোযা রাখা আর রাতের বেলা বেশী বেশী ইবাদত করা যথা নফল নামায, কুরআন তিলাওয়াত, তাসবীহ-তাহলীল, তাওবা-ইস্তিগফার ও রোনাজারী ইত্যাদি ইবাদতের মাধ্যমে রাত কাটানো।


عن أبي هريرة عن النبي صلى الله عليه و سلم : قال ما من أيام أحب إلى الله أن يتعبد له فيها من عشر ذي الحجة يعدل صيام كل يوم منها بصيام سنة وقيام كل ليلة منها بقيام ليلة القدر

হযরত আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জিলহজ্বের দশ দিনের  ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদত তুলনায় বেশী প্রিয়,প্রত্যেক দিনের রোযা এক বছরের রোযার ন্যায় আর প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের ন্যায়। {তিরমিজী: ৭৫৮, সুনানে বায়হাকী কুবরা: ৩৭৫৭}


عن ابن عباس عن النبي صلى الله عليه و سلم أنه قال ما العمل في أيام العشر أفضل من العمل في هذه

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-এই দশ দিনের আমল অপেক্ষা অন্য দিনের আমল প্রিয় নয়। {বুখারী শরীফ: ৯২৬}


.


যারা কুরবানী করার ইচ্ছে পোষণ করছেন, তারা জিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকে হাত পায়ের নখ, মাথার চুল ও অবাঞ্ছিত চুল ইত্যাদি কাটবে না, যদি ৪০ দিন না হয়ে থাকে এগুলো না কাটার মেয়াদ। যদি ৪০ দিনের বেশি হয়ে থাকে, তাহলে এসব কেটে ফেলা আবশ্যক। নতুবা ১০ দিন পর কুরবানীর পর পরিস্কার করবে। এ কাজটি সুন্নাত।


عن أم سلمة أن النبي صلى الله عليه وسلم قال اذا دخلت العشر فأراد أحدكم أن يضحي فلا يمس من شعره ولا من بشره شيئا

হযরত উম্মে সালমা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন যে, যখন [জিলহজ্বের প্রথম] ১০ দিনের সূচনা হয়, আর তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছে করে, সে যেন চুল-নখ ইত্যাদি না কাটে। {সুনানে নাসায়ী: ৪৪৫৪, সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১৪৯, সুনানে বায়হাকী: ১৮৮০৬}


.


যারা হজ্বে যায়নি, তাদের জন্য জিলহজ্ব মাসের নয় তারিখ রোযা রাখা সুন্নাত।


صيام يوم عرفة أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله والسنة التي بعده

হযরত আবু কাতাদা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আরাফার দিনের রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে, এ রোযা তার পূর্বের ও পরের বৎসরের গোনাহ মুছে ফেলবে। {সহীহ মুসলিম: ৭৪০}


তবে যারা হজ্বে গিয়েছেন, তাদের জন্য এদিন রোযা না রাখা উচিত।


أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- نَهَى عَنْ صَوْمِ يَوْمِ عَرَفَةَ بِعَرَفَةَ

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ আরাফার দিনে আরাফার ময়দানে রোযা রাখতে নিষেধ করেছেন। {সুনানে আবু দাউদ: ২৪৪২}


 


أُمَّ الْفَضْلِ – رضى الله عنها – تَقُولُ شَكَّ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فِى صِيَامِ يَوْمِ عَرَفَةَ وَنَحْنُ بِهَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فَأَرْسَلْتُ إِلَيْهِ بِقَعْبٍ فِيهِ لَبَنٌ وَهُوَ بِعَرَفَةَ فَشَرِبَهُ.

হযরত উম্মুল ফযল রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-লোকেরা আরাফার দিন নবী কারীম সাঃ রোযা রেখেছেন কি না? তা নিয়ে সন্দেহে পতিত হলে আমি রাসূল সাঃ এর পানীয় প্রেরণ করলাম, আর নবীজী সাঃ তা পান করলেন। [ফলে সবাই নিশ্চিত হলেন যে, রাসূল সাঃ রোযা রাখেন নি। {সহীহ মুসলিম: ২৬৫১}


.


তাকবীরে তাশরীক বলা।


যিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখের ফজর থেকে তের তারিখের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর একবার তাকবীর বলা ওয়াজিব। পুরুষের জন্যআওয়াজ করে,আর মহিলাদের জন্য নীরবে।


তাকবীর হল-আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। (ফাতওয়া শামী-তৃতীয় খন্ড, ৬১ পৃষ্ঠা, সালাত অধ্যায়, ঈদ পরিচ্ছেদ)


عن بن عباس : أنه كان يكبر من غداة يوم عرفة إلى آخر أيام التشريق


হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ আরাফার দিন তথা ৯ ই জিলহজ্বের ফজর থেকে আইয়ামে তাশরীকের শেষ দিন পর্যন্ত পর্যন্ত তথা ১৩ ই জিলহজ্ব [আসর নামায] পর্যন্ত তাকবীরে তাশরীক পড়তেন। {সুনানে বায়হাকী: ৬০৭১, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ৫৬৮১}


.


ঈদের দিনের সবচেয়ে বড় আমল হল ঈদের নামায শেষে কুরবানী করা।


১০, ১১ম ১২ যিলহজ্বের যে কোন একদিন,কোন ব্যক্তির মালিকানায় যদি নিত্য প্রয়োজন অতিরিক্ত সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ, অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রোপা বা এর সমমূল্যের সম্পদ থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।


পুরুষ-মহিলা সকলের উপরই এ বিধান প্রযোজ্য।


ফাতওয়া শামী-৯/৪৫৩, ৪৫৭

ফাতওয়া আলমগীরী-৫/২৯২


 


عن عائشة : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال ما عمل آدمي من عمل يوم النحر أحب إلى الله من إهراق الدم إنها لتأتي يوم القيامة بقرونها وأشعارها وأظلافها وأن الدم ليقع من الله بمكان قبل أن يقع من الأرض فيطيبوا بها نفسا

হযরত আয়িশা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, কুরবানীর দিনে বনী আদম এমন কোন কাজ করতে পারে না, যা আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত করা তথা কুরবানী করার চেয়ে বেশি প্রিয়। কুরবানীর পশু সকল শিং, তাদের পশম ও তাদের খুরসহ কেয়ামতের দিন [কুরবানীদাতার পাল্লায়] এসে হাজির হবে। আর কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহর নিকট সম্মানের স্থানে পৌছে যায়। সুতরাং তোমরা প্রফুল্ল চিত্তে কুরবানী করবে। {সুনানে তিরমিজী: ১৪৯৩, মুসতাদরাকে হাকেম: ৭৫২৩}


 


عن زيد بن أرقم قال أصحاب رسول الله صلى الله عليه و سلم يا رسول الله ماهذه الأضاحي  ؟ قال ( سنة أبيكم إبراهيم ) قالوا فما لنا فيها ؟ يا رسول الله  قال ( بكل شعرة حسنة ) قالوا فالصوف ؟ يا رسول الله : قال ( يكل شعرة من الصوف حسنة

যায়েদ বিন আরকাম রাঃ বলেন-রাসূল সা. এর সাহাবাগণ বললেন-হে আল্লাহর রাসূল! এ সকল কুরবানীর ফযীলত কি? উত্তরে তিনি বললেন-তোমাদের জাতির পিতা ইবরাহীম আ. এর সুন্নাত। তারা পুনরায় আবার বললেন-হে আল্লাহর রাসূল! তাতে আমাদের জন্য কী সওয়াব রয়েছে? উত্তরে তিনি বললেন-কুরবানীর পশুর প্রতিটি চুলের বিনিময়ে একটি সওয়াব রয়েছে। তারা আবারো প্রশ্ন করলেন-হে আল্লাহর রাসূল! ভেড়ার লোমের কি হুকুম? [এটাতো গণনা করা সম্ভব নয়] তিনি বললেন-ভেড়ার লোমের প্রতিটি চুলের বিনিময়ে একটি সওয়াব রয়েছে। {সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি