Loading..

প্রকাশনা

০৩ জুলাই, ২০২২ ১০:২৫ অপরাহ্ণ

পড়াশোনা মনে রাখার সবচেয়ে কার্যকরী কিছু উপায়সমূহ

পড়াশোনা মনে রাখার সবচেয়ে কার্যকরী কিছু উপায়সমূহ

পড়াশোনা এই শব্দটার সাথে ছোট্ট অবুঝ বাচ্চা ব্যতীত সকলেই পরিচিত। কারন, অবুঝ ছোট্ট বাচ্চা ব্যতীত প্রায় সকলেই অর্থাৎ 90% মানুষই পড়াশোনা করেছে অথবা পড়াশোনার সাথে যুক্ত না থাকলেও অনেক দিন আগে হলেও কোনো এক সময় তারা পড়াশোনা করেছেন।

তো যাইহোক, পড়াশোনা জিনিসটাই অনেককেই অনেক বড় বড় উচু জায়গায় নিয়ে যায় আর বড় বড় উচু পসিশনে যেতে হলে পড়াশোনাই যেন পূর্বশর্ত।

পড়াশোনা ছাড়া কেউই ভালো জায়গায় যেতে পারে নাই। সমাজের বা রাষ্ট্রের যত উচু উচু জায়গায় মানুষজন বা ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন যারা এই সমাজব্যবস্থা বা রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনা করেন অথবা সমাজের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন, তারা প্রায় কমবেশি সকলেই পড়াশোনা জানা লোক।

তবে পড়াশোনা ছাডাও অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান এ বড় বড় মানুষজন পরিচালক হয়ে রয়েছেন।  অবশ্য এটা ব্যতিক্রম ছাড়া কিছুই নয়।

কারন, পড়াশোনা করলে খুব সহজেই সেই উচু উচু পসিশনে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু, পড়াশোনা ছাড়া সেই উচু উচু পসিশনে যাওয়া সম্ভব হলেও তা অনেকটাই কঠিন আর অসম্ভব বিষয়ের মত হয়ে থাকে। কপাল থাকলে হয়ত এটা সম্ভব হয়।

তো সে যাই হোক, পড়াশোনা ছাড়া কেউই অত ভালো ভালো আর উচু পসিশনে যাওয়া অনেকটাই অসম্ভব ব্যাপার।

তো যাইহোক, যারা পড়াশোনা করে থাকেন, এটাই তাদের মুখ্যম সময়। এই পড়াশোনা টা হচ্ছে মেরুদণ্ড গঠনের সময়। কর্মজীবন এর মেরুদণ্ড তৈরি হয় এই পড়াশোনা করার ফলেই।

পড়াশোনায় ভালো করতে পারলে আপনার ভবিষ্যৎ কর্মজীবন এ মেরুদণ্ড অনেক শক্ত হবে আর যদি এই পড়াশোনায় একটু দূর্বলতা প্রকাশ করেন অথবা পড়াশোনায় যদি ভালো করতে না পারেন তাহলে আপনার কর্মজীবন এ আপনি ভালো করতে পারবেন না।

সফলতা অনেকটা এই পড়াশোনার উপরই নির্ভর করে। আপনার কর্মজীবন এ সফলতার জন্য এই পড়াশোনায় অনেক বেশি ভালো হতে হবে।

তবে, বেশিরভাগই পড়াশোনায় ভালো করতে পারেন না। পারেন না পরিক্ষা গুলোতে ভালো ফলাফল করতে। অনেকেই পারেন না পড়াশোনা মনে রাখতে।

আপনারা যারা ছাত্রজীবন এ রয়েছেন বা ছাত্র রয়েছেন বা পড়াশোনা করছেন কিন্তু পড়াশোনা মনে রাখতে পারছেন না। পড়াশোনা মনে না রাখতে পারায় আপনারা স্কুলের পরিক্ষা বা বোর্ড পরিক্ষায় ভালো করতে পারেন না।

কিন্তু, অনেক ছাত্র ছাত্রীরাই রয়েছে যারা কিনা পরীক্ষায় অনেক ভালো করে এবং অনেক ভালো একটা রেসাল্ট তৈরি করে সকলকে তাক লাগিয়ে দেয়। কেউ কেউ আবার একটু টেকনিকে অনেক কম পড়েও পড়া মনে রেখে অনেক ভালো রেসাল্ট তৈরি করে। তো এই বিষয় নিয়ে অন্যদিন কথা হবে।

অথচ, আপনারা অনেকেই অনেক বেশি পড়েও পড়া মনে রাখতে পারেন না। কিন্তু, তারা পড়ে মনে রাখতে পারে কেন! এই প্রশ্নটার উত্তর দিতেই আপনাদের সাথে আজ কয়েকটি টিপস শেয়ার করতে যাচ্ছি…যেগুলো আপনাকে পড়া মনে রাখতে অনেক বেশি সহায়তা করবে।

পড়া মনে রাখার টিপস সমূহ

বাস্তব জীবনে আমরা অনেক কিছুই মনে রাখতে পারি, অথচ পড়াশোনার ব্যাপারে গেলে তা সম্পুর্ন উলটো। পড়াশোনা যেন আমরা জোর করেও মনে রাখতে পারি না।

আমরা বাস্তব জীবনে চোখ দিয়ে কত রকম জিনিস দেখি এমনকি দুই থেকে আড়াই ঘন্টা বা তিন ঘন্টার একটা পুরো সিনেমা দেখে আমরা শুরু থেকে শেষ অবদি মনে রাখতে পারি। কোনো নাটক বা অনুষ্ঠানের বেলাতেও তাই।

আমরা যেকোনো কিছু চোখের সামনে ঘটতে দেখলে তা খুব সহজেই দীর্ঘদিন মনে রাখতে পারি।

কিন্তু, পড়াশোনার বেলায় সেটি সম্পুর্ন উলটো।  আমরা চাইলেও পড়া বেশিদিন মনে রাখতে পারি না। কিন্তু, অন্যান্য সকল জিনিসই আমরা অনেক দিন মনে রাখতে পারি।

তো কয়েকটি টিপয়া জানা যাক এবার…

এনিমেটেড পড়াশোনাঃ

ভাবছেন, পড়াশোনা আবার এনিমেটেড হয় নাকি? আসলে আমি কিন্তু পড়াশোনাকে এনিমেটেড করা বা এনিমেশন করতে বলছি না। আমি পড়াশোনার উপকরণ বা বিষয় বস্তুকে এনিমেশন বা এনিমেটেড করতে বলেছি।

আসলে, এনিমেশন হচ্ছে এমন একটা জিনিস যা চাইলে আমরা যেকোনো কিছুকেই নিজের সামনে বাস্তব রুপ দিতে পারবো। যেকোনো কিছুর বাস্তবিক চিত্র একে তাকে প্রান বন্ত করতে পারবো।

Animation শব্দের অর্থই হচ্ছে প্রান-বন্ত করা। যেকোনো জিনিস বা বিষয়বস্তুকে চলমান বা গতিশীল করে জীবিত বা প্রানবন্ত করার নামই হচ্ছে এনিমেশন।

তো এনিমেশন জিনিসটা পড়াশোনায় কিভাবে সাহায্য করবে?

আসলে পড়াশোনাও একটা কাজ। সিনেমা দেখা বা নাটক, চলচ্চিত্র বা কোনো ভিডিও দেখাও একটা কাজ। আমাদের মস্তিষ্ক দুটো কাজকে একই চোখে দেখবে।

কিন্তু, আমরা চলচ্চিত্রে যেকোনো কিছুকে আমরা বাস্তবে দেখতে পাই, অথচ পড়াশোনা কিন্তু আমাদের অনুভব করতে হয় বুঝতে হয়।

কিন্তু, আমরা যদি পড়াশোনার বিষয়বস্তু বা পড়াশোনাকে যদি বাস্তবিক রূপ দিয়ে বা একে অথবা কোনো এনিমেশন ভিডিওতে দেখে থাকি, তাহলে সেই পড়াটা আমাদের দীর্ঘদিন মনে থাকবে।

এর কারন, আমরা ছবিতে যা দেখি তা দীর্ঘদিন মনে রাখতে পারি। আর মস্তিষ্ক ও পড়াশোনার সেই বিষয়বস্তুকে এনিমেশন এর সাহায্যে দেখার কারনে সে সেই বিষয়বস্তু সম্পর্কে অনেক বেশি ভালো মনে রাখতে পারবে।

এছাড়া, আপনি পড়ার সময় আপনার পড়াশোনার বিষয় বস্তুকে নিজ হাতে আকা আকি করতে পারেন। এতে করে আপনার সেই পড়াতা মনে থাকবে অনেকদিন।

পড়ার সাথে সাথে লেখাঃ

পড়ার সাথে সাথে কোন জিনিস যদি লিখে ফেলা যায় তাহলে আমাদের মস্তিষ্কে সেই কাজটা মানে পড়াশোনার বিষয়বস্তু টুকু দুইবার ধারন করবে। মানে পড়ার ফলে একবার আর লেখার ফলে একবার।

এতে করে আমাদের মস্তিষ্ক দীর্ঘদিন পড়াশোনা মনে রাখতে পারবে।

আপনি যখন কোনো এমসিকিও এর জন্য বই পড়বেন তখন খিব গুরুত্ব সহকারে আপনার সেই এমসিকিউ এর যে লেখাটা বা পড়াটা থাকবে মানে যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সেটি দাগাবেন।

অথবা, পুরো গুরুত্বপূর্ণ লাইনটাই দাগাবেন। এতে করে আপনার মস্তিষ্কে সেই জিনিসটা দীর্ঘক্ষন থাকবে।

এছাড়া, দাগিয়ে পড়ার অভ্যাস অর্থাৎ পড়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলো দাগানোর অভ্যাস খুব ভালো একটি অভ্যাস।

এতে করে আপনার আর কষ্ট করে অনেক বেশি সময় দিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে পুরো পৃষ্ঠা টা আর পড়তে হবে না। আপনার বইয়ের সেই পৃষ্ঠায় যে লাইনগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেই লাইনগুলো কিন্তু আপনি অলরেডি দাগিয়েই ফেলেছেন।

যার ফলে আপনার শুধু সেই গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলো পড়লেই পুরো পড়া হয়ে যাবে।

এভাবে আপনার পুরো বই দাগানো থাকলে আপনার পরবর্তীতে আপনার সেই বই আবার পড়তে বা রিভাইস দিতে অনেক কম সময় লাগবে।

এছাড়া, আপনি যখন কোনো লাইন দাগাবেন তখন আপনার মস্তিষ্ক অনেক ভালো ভাবে সেটি খেয়াল করবে আর সেটি অনেকদিন মনে রাখবে।

আপনার সেই দাগানো লাইনটা যদি এমসিকিউ এর জন্য ইম্পর্ট্যান্ট হয়, তাহলে আপনার সেটি পরিক্ষায় অবশ্যই কমন পড়বে এবং আপনি পরিক্ষায় অনেক ভালো ফলাফল করতে পারবেন।

নোট করার অভ্যাস করাঃ

পড়াশোনার নোট অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি সহায়ক আপনার পড়াশোনার ক্ষেত্রে। এটি আপনাকে অনেক বেশি সুবিধা দিবে আপনার পরিক্ষা বা যেকোনো প্রস্তুতি নেয়ার সময়।

পড়াশোনার সময় যদি আপনি নোট করে রাখেন তাহলে আপনার মস্তিষ্ক সেই জিনিসটাকে অনেকদিন মনে রাখার চেষ্টা করবে।

তবে নোট করার সময় অবশ্যই আপনি বিভিন্ন রঙের কালির কলম ব্যবহার করবেন৷ এতে করে আপনার করা নোট টুকু দেখতে অনেক সুন্দর দেখাবে।

আর রঙিন জিনিস আপনার চোখের রেটিনায় পড়লে সে থেকে উৎপন্ন উদ্দীপনা যখন আপনার মস্তিষ্কে পৌছাবে তখন সেই জিনিসটুকু আপনার অনেক বেশি মনে থাকবে।

নোট করার সময় বিভিন্ন রকম চিত্র আকার চেষ্টা করুন এতে করে আপনার মস্তিষ্ক অনেক বেশি ইফেক্টিভ হয়ে আপনার পড়া মনে রাখতে সাহায্য করবে।

নোটের বিষয়বস্তু সমূহ হবে আপনার বইয়ের পড়ার সকল গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলো বা গুরুত্বপূর্ণ সকল শব্দ সমূহ।

এতে করে আপনার নোট টা হবে অনেক ইম্পর্ট্যান্ট বিষয়ে ভরা হবে।আপনি যখন কোনো পরিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিবেন অথবা আপনি যেকোনো কিছুর জন্য প্রস্তুতি নিবেন তখন আপনার নোট টুকু পড়া হলেই আপনার প্রস্তুতি অনেক বেশি ভালো হবে এবং এটি আপনাকে অনেক সময় বাচিয়ে দিবে।

কেননা, একবার আপনার এই বিষয়গুলো নোট করার ফলে আপনার পড়াটা প্রায় কমপ্লিট হয়ে গেছে এবং আপনার অনেক বেশি মনে থাকবে। আপনি যখন বিভিন্ন চিত্র একেছেন বা বিভিন্ন লেখার শব্দ সমূহ নোট করেছেন সে সময় থেকেই সব কিছুই আপনার মুখস্থ হয়ে গেছে।

গোছানো পড়াশোনাঃ

গোছানো পড়াশোনার বিকল্প নেই বললেও চলে। আসলে গোছানো পড়াশোনা কতটা যে হেল্পফুল তা শুধু তারাই বোঝে যারা গুছিয়ে পড়াশোনা করে থাকে।

তো আপনার পড়াশনা মনে রাখার ক্ষেত্রে এই স্টেপটি বা ধাপটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গোছান পড়াশোনা বলতে বিন্যাসিত বা শৃঙ্খলা বদ্ধ সুন্দর নিয়মের মধ্যে ভালোভাবে পড়াশোনা করার জিনিসটাকেই বোঝানো হয়৷ যেখানে সকল পড়াশোনা একটা গোছালো নিয়মে পড়া হয়ে থাকে।

আপনার যদি পড়াশোনা গোছানো থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই এবং অনেক কম সময়েই আপনার পড়া শেষ করতে পারবেন বা আপনার যেকোনো পড়ার লেসন কমপ্লিট করতে পারবেন।

আপনাকে নিয়মিত একই রুটিনেই যে পড়তে হবে এর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে চেষ্টা করবেন যেন আপনার প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করতে।

এটা একটা প্রধান বৈশিষ্ট্য ভালো ছাত্র ছাত্রীদের জন্য৷ যারা কিনা নিয়মিত নিজের নিজের পড়া কমপ্লিট করে রাখে। একটু কম পড়লেও হবে কিন্তু পড়াটা যেন কমপ্লিট হয়।

পরেরদিন হয়ত অন্য কোনো সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে বসলেন কিন্তু আপনার টার্গেট থাকতে হবে যেন আপনি আজকে এই মুহুর্ত থেকে শুরু করে এই পড়াটা পড়তে যতক্ষন লাগে লাগুক পড়াটা আপনি শেষ করবেন ই।

যখন আপনি আপনার পড়াটা শেষ করবেন, তখন আপনার সেই পড়াটুকু পরিপাটি হয়ে গেলো এবং পড়াটা আপনার মনে থাকবে।

এরপর, আপনি যখন দ্বিতীয় বার পড়াটা পড়তে যাবেন তখন আপনার সেই পড়াটার মাঝে ততটা গ্যাপ থাকবে না। আপনার সকল লাইনই পড়া থাকবে এবং আপনার কাছে তখন পড়াটা গোছানো মনে হবে।

তবে গোছানো পড়াশোনা করার আরেকটা পূর্বশর্ত হচ্ছে নিয়মিত পড়াশোনা করা এবং নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। অর্থাৎ, আপনার কি হয় হোক আপনি সেই পড়াটুকু শেষ করবেন।

নিয়মিত যখন আপনি পড়বেন তখন আপনার যেকোনো পড়া খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। আপনার যদি অনেক বেশি বেশি পড়া থাকে তাহলে আপনি যদি নিয়মিত একটু একটু করে পড়তে পারেন তাহলে আপনার সেই পড়াটুকু অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।

কিন্তু, আপনি যদি পড়াটা পড়ার সময় কোন একদিন না পড়েন আবার দুই একদিন পর আরেকদিন না পড়েন তাহলে আপনার সেইদিনের না পড়া পড়াগুলো জমা হতে থাকবে। এবং আপনার পড়ার বাকি পড়ার সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকবে।

এভাবে, আপনার পড়াশোনায় যখন প্রচুর গ্যাপ এর সৃষ্টি হবে। তখন আপনার কাছে পড়াশোনাটা হয়ে উঠবে অগোছালো।

আর তাই আপনি নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে আপনার প্রতিদিনের পড়া টুকু প্রতিদিন পড়া হয়ে যাবে। এবং আপনার পড়াশোনায় কোনো রকম গ্যাপ তৈরি হবে না।

তখন আপনার পড়াশোনা আর অগোছালো থাকবে না আপনার পড়াশোনায় গোছালো ভাব চলে আসবে। তাই, আপনার উচিত পড়াশোনায় জং না ধরানো বা পড়াশোনায় গ্যাপ না তৈরি করা। এতে করে আপনার পড়া পড়াগুলোও মনে থাকবে না।

আর নিয়মিত পড়া পড়তে থাকলে আপনার পড়াশোনাটা গোছানো হবে এবং সেই পড়াগুলো আপনার দীর্ঘদিন মনে থাকবে।

বুঝে বুঝে পড়াঃ

পড়াশোনা মনে না থাকার একটা বড় কারন হলো বুঝে না পড়া। কারন, যেকোন পড়া বুঝে পড়লে আমাদের মস্তিষ্ক খুব সহজেও সেটি মনে রাখতে পারে।

কিন্তু, না বুঝে শুধু মুখস্থ করলে সেটা আজীবনেও মনে থাকে না। না বুঝে মুখস্থ করলে অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিভা নষ্ট হয়। এই নিয়ে একটি বহুল পরিচিত প্রবাদ আছে,” না বুঝে মুখস্থ করার অভ্যাস, প্রতিভাকে ধংস করে।”

আপনি যখন কোনো পড়া বুঝে বুঝে পড়ার চেষ্টা করবেন, তখন আপনার মস্তিষ্ক এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। আপনার মস্তিষ্কে সৃজনশীল কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

আর বুঝে বুঝে পড়ার ফলে আপনার মস্তিষ্কে একটা চাপ তৈরি হয় এবং আপনার মস্তিষ্ক সেই পড়াটাকে গ্রহন করে নেয় এবং আপনার সেই পড়াটুকু দীর্ঘদিন ধরে থাকে।

এভাবে আপনার মস্তিষ্কে মনে রাখার গুন বা ক্ষমতা কয়েক গুন বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি খুব সহজেও যেকোনো পড়া মনে রাখতে পারেন।

তবে, কখনোই না মুখে মুখস্থ করার চেষ্টা করবেন না। বুঝবেন আগে তারপর মুখস্থ করবেন।

আপনি যখন না বুঝে পড়া মুখস্থ করতে যাবেন তখন আপনার সেই পড়াটুকু তো মুখস্থ হলেও আপনি সেটি নিয়া বেশি ভাবনা চিন্তা করবেন না। আপনার মুখস্থ না হলেও যদি আপনি পারেন তাহলেই হবে।

বার বার পড়া বা রিভাইস দেয়া

পড়াশোনা মনে রাখার ক্ষেত্রে এই ধাপটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, যে জিনিস আপনি যত পড়তে পারবেন বা যতবার সেই কাজটি রিপ্রেজেন্ট করবেন, সেই কাজটি আপনার তত বেশি মনে থাকবে।

যারা বিভিন্ন ভর্তি পরিক্ষা বা স্কুলের পরিক্ষা দেয় তারা পরিক্ষার আগে নতুন করে কিন্তু কেউই পড়ে না। সবাই আগের পড়াগুলো পরিক্ষার আগের রাতে শুধু রিপ্লাই করে বা রিভাইস দেয়।

কারন, সে সময় নতুন পড়া পড়লে মনে থাকবে না। যত পারে পূর্বের হওয়া পড়াগুলোকে রিভাইস দিয়ে থাকে এবং এভাবেই মূলত পরিক্ষা গুলোতে তারা ভালো রেসাল্ট তৈরি করতে পারে।

তবে হয়ে যাওয়া পড়াগুলো যে শুধু পরিক্ষার আগের রাতেই রিভাইস দিতে হবে এবং সে রাতে রিভাইস দিয়েই যে খুব ভালো রেসাল্ট তৈরি করা সম্ভব তা কিন্তু নয়!

আপনার যেই পড়াটা একবার আপনি বুঝে বুঝে লাইন বাই লাইন পড়েছেন সেই পড়াটা আপনার মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ মনে রাখতে পারবে না৷ কিন্তু, আপনার মস্তিষ্ক কিছু কিছু মনে রাখে সেই পড়াটুকুর।

আপনি যখন দ্বিতীয়বার সেই পড়াটুকুই পড়বেন তখন আপনার মস্তিষ্ক সেই পড়াটুকু কে আরো বেশি মনে রাখবে। অর্থাৎ, আপনি যখন একবার একট পড়া বুঝে বুঝে পড়বেন তখন আপনার সেই পড়াটুকুর খুব অল্প পরিমাণ মনে থাকবে।

কিন্তু, আপনি যখন দ্বিতীয়বার পড়াটা রিভাইস দিবেন তখন সেই পড়াটুকু আপনার অনেক বেশি মনে থাকবে। একইভাবে, আপনি যদি সেই পড়াটুকুই তৃতীয়বার আবার রিভাইস দেন তাহলে আপনার সেই পড়াটুকুর প্রায় অনেকটাই বা বলতে গেলে ৮০%-৯০% পড়া মনে থাকবে।

শেষ বাণীঃ

পড়াশোনাকে অনেকেই খুব সহজ কাজ বলে অভিহিত করে থাকেন। কারন, অনেকে মনে করে থাকেন রিক্সা চালানো বা এ ধরনের কঠিন পরিশ্রমি কাজ গুলোর তুলনায় পড়াশোনা তো অতি সহজ কাজ।

আসলে তাদের ধারনা অনুযায়ী কথাটা কিছুটা সত্য হলেও এর মাঝে কিছু ঘাপলা আছে। কারন, যতই হোক পড়াশোনা হলেও পড়াশোনা করার ফলে এটি কিন্তু আমাদের মস্তিষ্কের উপর চাপ ফেলে।

যার ফলে আমাদের দেহের কষ্ট না হলেও আমাদের মস্তিষ্কের কিন্তু পরিশ্রম করতে হয়। আর অনেকেই কিন্তু, পড়াশোনা জীবনে করতে পারে না। এর কারন, তারা তাদের মস্তিষ্ক কে কাজে লাগাতে পারে নি।

মোঃ লুৎফর রহমান (এম. এ., এম. এড)

সহকারী শিক্ষক,

ওয়েব ডিজাইনার,

গ্রাফিক্স ডিজাইনার,

ব্লগা্‌র,

ইউটিউব কন্টেন্ট ক্রিয়েটর,

ICT4E জেলা অ্যাম্বাসেডর এটুআই, দিনাজপুর

সেরা কনটেন্ট নির্মাতা, শিক্ষক বাতায়ন, এপ্রিল, ২০২২

MIE Expert -2021-2022

 ইংরেজী মাস্টার ট্রেনার (TMTE Project of British Council Under DPE)

বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষক ইংরেজী, চারু ও কারুকলা এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়,

কুন্দারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর।

E-mail: [email protected]

প্রাথমিক শিক্ষার সকল আপডেট পেতে আমার সাইটে প্রতিদিন ভিজিট করুন। লিঙ্কঃ

https://lutfor11.blogspot.com

 

 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি