Loading..

খবর-দার

৩১ অক্টোবর, ২০২২ ০৮:৫৩ অপরাহ্ণ

দেশে চল্লিশের কম বয়সীদের স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি

স্ট্রোকের ভয়াবহতা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। মস্তিষ্কের রক্তনালির জটিলতার কারণে আকস্মিক চলতশক্তি লোপ পাওয়া ও অচেতন হওয়াকে সাধারণত আমরা স্ট্রোক বলি। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এই রোগের ভীতি বেড়ে যায়। তবে গবেষণা বলছে, পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চল্লিশের কম বয়স্কদের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

প্রতিবছরের মতো এ বছরেও ২৯ অক্টোবর ‘বিশ্ব স্ট্রোক দিবস’ উপলক্ষে সচেতনতা ক্যাম্পেইন বিশ্বব্যাপী উদযাপন হচ্ছে- ‘মুহূর্ত বাঁচাতে পারে সজীবতা এবং অমূল্য সময়’ এই দুটি স্লোগানকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘না করলে সময়ক্ষেপণ, স্ট্রোক হলেও বাঁচবে জীবন’।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা বলেন, স্ট্রোক মস্তিষ্কের রক্তনালির একটি রোগ। সেই রক্তনালি ছিঁড়ে যাওয়া অথবা ব্লক হয়ে যাওয়া স্ট্রোকের কারণ। স্ট্রোক সাধারণত দুই ধরনের। প্রথমটি রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ। একে বলে হেমোরেজিক স্ট্রোক। আর দ্বিতীয়টি রক্তনালি ব্লক হয়ে গিয়ে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত রক্ত না যাওয়া এবং ওই অংশের শুকিয়ে যাওয়া। একে বলে ইস্কেমিক স্ট্রোক।

স্ট্রোকে মস্তিষ্ক প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না, মস্তিষ্কের কোষগুলো বন্ধ হতে শুরু করে এবং মরে যায়। মস্তিষ্কের মতৃ কোষগুলো আর ভালো হয় না, তবে মস্তিষ্কের অন্য কোষগুলোর তার জায়গা নেওয়া সম্ভব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শতকরা ৯০ ভাগ স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে তার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মমাফিক জীবনযাপন করতে হবে। আশার আলো- দ্রুত নির্নয় করতে পারলে ৭০ ভাগের বেশি রোগী স্ট্রোকের মারাত্মক ছোবল থেকে রেহাই পেতে পারেন।

ঢামেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সুমন রানা বলেন, বাংলাদেশেই এখন স্ট্রোকের সর্বাধুনিক চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে গড়ে উঠেছে অত্যাধুনিক নিউরো ক্যাথল্যাব, ইন্টারভেশন ও অপারেশন থিয়েটার যা কমপ্রিহেনসিভ এপ্রোচ বা হাইব্রিড পদ্ধতি নামে জনপ্রিয়।

২০০৬ সালে প্রথম ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক অর্গানাইজেশন এ দিবস পালন করে। ২০১০ সালে স্ট্রোককে পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। স্ট্রোক দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য, স্ট্রোক সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। স্ট্রোকের প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি করা। যেকোনো মানুষের যেকোনো সময় স্ট্রোক হতে পারে। লক্ষণ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই রোগীকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবার সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।