Loading..

প্রেজেন্টেশন

২১ নভেম্বর, ২০২২ ০৪:০৬ অপরাহ্ণ

কম্পিউটারের যন্ত্রপাতি যত্ন

কম্পিউটার যে ঘরে রাখা হয় সেখানে বাইরের জুতা বা স্যান্ডেল নিয়ে না ঢোকাই ভালো। ঘরের প্রবেশপথে পাপোশ বিছিয়ে নিতে পারেন।  প্রতিদিন কম্পিউটারের মাউস, মনিটর, কি-বোর্ড, সিপিইউ পরিষ্কার করতে হবে।  ইউপিএস বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন করে সামান্য ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।

ভাইরাস, স্প্যাম, ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকারক প্রোগ্রামের হাত থেকে কম্পিউটারকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকতে হবে। অ্যান্টিভাইরাস সফটয়্যার নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে।
 সর্বোপরি যে স্থানে কম্পিউটার রাখা হবে, সে স্থানটি যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

মনিটরের যত্ন
 মনিটর যেখানে রাখা হবে সে স্থানটা যথাসম্ভব খোলামেলা থাকতে হবে, যাতে করে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে।
 মনিটরের পেছনে বাতাস চলাচলের ছিদ্রগুলো যেন কোনো কিছুতে ঢাকা না পড়ে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
 প্রয়োজন ছাড়া মনিটর চালিয়ে রাখা যেমন উচিত নয়, তেমনি দীর্ঘদিন বন্ধ রাখাও ঠিক নয়। 
 মনিটরের পাওয়ার এবং ভিডিও কেবল ঠিকমতো প্লাগ ইন না হলে মনিটরের ক্ষতি হতে পারে।
 এলসিডি বা এলইডি মনিটরের পর্দায় হাত দিয়ে স্পর্শ না করাই ভালো। কারণ সামান্য চাপে মনিটরের এলসিডি অকেজো হয়ে যেতে পারে।
 মনিটর পরিবহন এবং রক্ষণাবেক্ষণে খুবই সতর্ক থাকতে হবে, যেন পরিবহনজনিত ঝাঁকির কারণে এর কোনো ক্ষতি না হয়।

 ব্যবহারের পর এটা ঢেকে রাখতে হবে।
 চুম্বকজাতীয় দ্রব্য মনিটর থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে।
 সমতল জায়গায় মনিটর বসানত হবে।
 বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ার আগে তার বা অ্যাডাপটার দেখে নিতে হবে।
 নির্দেশিকায় বলা তরল পরিষ্কারক বা লিকুইড ক্লিনার নতুন ও শুকনো সুতির কাপড় তৈরি করা দ্রবণে ভিজিয়ে কাপড়টি দিয়ে পর্দাটি বাম থেকে ডানে এবং ওপর থেকে নিচের দিকে আলতোভাবে মুছে নিতে হবে। পর্দায় এই তরল সরাসরি স্প্রে করা যাবে না।

সিপিইউয়ের যত্ন
 সাধারণত সিপিইউয়ের সঙ্গে বাকি সব যন্ত্রাংশ যেমন: মাউস, কি-বোর্ড, মনিটর ইত্যাদি যুক্ত থাকে।
 সিপিইউ থেকে সব তার খুলে সেটির ঢাকনা খুলতে হবে। পাতলা সুতির কাপড় তরল পরিষ্কারকে ভিজিয়ে তা দিয়ে মুছতে হবে। তার আগে পেইন্ট ব্রাশ বা ব্লোয়ার দিয়ে ঝুল ও ধুলাবালু ঝেড়ে নিতে হবে।
 সিপিইউ অব্যশই খোলামেলা, ধুলাবালুমুক্ত এবং যথাসম্ভব ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে।
 এ সময়ে কম্পিউটারের র্যা ম, ডিভিডি ড্রাইভ, হার্ডডিস্ক, পাওয়ার সাপ্লাই ও প্রসেসরের সঙ্গে লাগানো ফ্যানটা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এসব কাজ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দক্ষ হাতে করতে হবে।
 কোনো অবস্থাতেই সিপিইউয়ের বাতাস চলাচলব্যবস্থা (ভেন্টিলেশন) বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। নিয়মিত সিপিইউয়ের ভেতরে ও বাইরে পরিষ্কার করতে হবে। কারণ ধুলাবালু জমে গিয়ে সিপিইউয়ের কুলিং সিস্টেম বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
 বিদ্যুৎ সরবরাহে যদি কোনো প্রকার সমস্যা থাকে তাহলে সিপিইউয়ের যাবতীয় কাজ বাধাগ্রস্ত হবে এবং এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সিপিইউতে সরাসরি বৈদ্যুতিক সংযোগ না দেওয়াই ভালো। প্রয়োজনে ইউপিএস ব্যবহার করতে হবে।
 নিয়ম মেনে কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া বারবার রিস্টার্ট করা যাবে না।
 লক্ষ রাখতে হবে যেন সব যন্ত্রাংশ যথাযথভাবে সিপিইউয়ের মধ্যে লাগানো থাকে এবং তাদের ড্রাইভার বা চালক সফটওয়্যারগুলো যেন হালনাগাদ থাকে।
 কম্পিউটারে অপ্রয়োজনীয় ফাইল এবং অ্যাপলিকেশন না রাখাই ভালো।

মাউস

মাউসের যত্ন
 মাউস পাতলা কাপড়, কভার দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
 এর ওপর ভারী কিছু রাখা ঠিক নয়। কারণ এটা খুবই নাজুক প্রকৃতির।
 পানির বোতল, গ্লাস, চা, কফি বা অন্যান্য পানীয় থেকে দূরে রাখতে হবে।
 মাউসের নিচে প্যাড ব্যবহার করতে হবে।
 অপটিক্যাল মাউসগুলোর লাল আলো বের হওয়ার স্থানটাতে এবং এর চারপাশের সব অংশ হালকা কাপড় বা কটনবাড দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। আলতোভাবে মুছতে হবে।
 অনেকে গেমস খেলার সময় উত্তেজনায় মাউস আছড়ে ফেলেন। এটা করা ঠিক নয়।

কি-বোর্ড

কি-বোর্ডের যত্ন
 কি-বোর্ড পাতলা কাপড় বা কভার দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
 পরিষ্কারের জন্য প্রথমে আপনার কম্পিউটার বন্ধ করে নিতে হবে। তারপর তা থেকে কি-বোর্ডের কেব্লটা খুলে নিতে হবে।
 কি-বোর্ডের ওপরের দিকটা নিচু করে সবগুলো স্ক্রু খুলে ফেলতে হবে। কি-বোর্ডের পেছনের অংশটা সাবধানে খুলে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে আর কি-অংশগুলো আলাদা রাখতে হবে।
 •বাটিতে হালকা গরম পানিতে সাবান গুঁড়া অথবা তরল পরিষ্কারক দ্রব্য দিয়ে একটি দ্রবণ তৈরি করে রাখতে হবে। এতে ব্রাশ ভিজিয়ে স্ক্রু এবং কি-বোর্ডের কি অংশগুলো পরিষ্কার করতে হবে। এবার অন্য অংশগুলো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। এরপর কিছুক্ষণ রেখে দিন শুকানোর জন্য।
 সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পর তা আবার একে একে লাগিয়ে ফেলতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনো অংশ যেন ভেজা অবস্থায় না থাকে। তারপর কেব্লটি পিসিতে সংযুক্ত করতে হবে এবং পাওয়ার দিতে হবে।
 কি-বোর্ড পরিষ্কার করার জন্য পেইন্ট ব্রাশ দিয়ে কম্পিউটার থেকে কি-বোর্ড খুলে ভালোমতো ব্রাশ করে কি-বোর্ডের কিগুলোর মাঝখান থেকে ধুলা পরিষ্কার করতে হবে।

ট্যাবলেট, কম্পিউটার ইত্যাদি কাজের জিনিসগুলো নিয়ম করে পরিষ্কার করা চাই। মডেল: মুন, ছবি: নকশা

হার্ডডিস্ক ড্রাইভ ভালো রাখতে হলে
 প্রতি পার্টিশনে অন্তত ২০ শতাংশ জায়গা ফাঁকা রাখতে হবে।
 নিয়মিত ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে হবে।
 সপ্তাহে একবার বুট টাইম ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে হবে অর্থাৎ পেজফাইলসহ সিস্টেম ফাইল ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে হবে।
 হার্ডডিস্কের তাপমাত্রা লক্ষ করতে হবে। দরকার হলে ‘ক্রিটিকাল’ তাপমাত্রা সেট করে দিন, যাতে বেশি গরম হলে আপনি বার্তা পেতে পারেন।
 হার্ডডিস্ককে ধুলাবালু থেকে দূরে রাখতে হবে। মনে রাখবেন ছোট একটা কণা যা আপনার মাথার চুলের দশ ভাগের এক ভাগ সেটাও আপনার ডিস্ক হেড নষ্ট করে দিতে পারে।
 ব্যাকআপের জন্য রেইড বানিয়ে ফেলতে পারেন।
 ছয় মাস বা এক বছর পর পর সুযোগ পেলে হার্ডডিস্কের সব ডেটা ব্যাকআপ নিয়ে ডিস্ক লো লেভেলে ফরম্যাট করে নিতে হবে।
 উইন্ডোজের ইনডেক্সিং বন্ধ করে দিতে হবে। ইনডেক্সিংয়ের মাধ্যমে উইন্ডোজ হার্ডডিস্কের সব ফাইলের তালিকা তৈরি করে এবং সার্চ করলে দ্রুত ফলাফল দেখা যাবে। কিন্তু ইনডেক্সের কারণে অযথাই ডিস্ক ঘুরতে থাকে এবং শক্তি বা ব্যাটারির ক্ষয় হয়।
 হার্ডডিস্কের কেব্ল ও পাওয়ার কেব্ল মজবুতভাবে যুক্ত আছে কি না তা দেখে নিতে হবে। এটি ঢিলা হয়ে গেলে হার্ডডিস্কের ক্ষতি হতে পারে।