Loading..

খবর-দার

২৪ নভেম্বর, ২০২২ ০৫:৩১ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রীর যে উদ্যোগে বদলে গেল ওদের জীবনধারা

গৃহহীন, আশ্রয়হীন, যাদের কোনো সহায় সম্বল এমনকি মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। তাদের কেউ থাকতেন অন্যের বাড়িতে, কেউবা অন্যের জায়গায় বা খাসজমিতে। আবার কেউ রাস্তার ধারের খুপড়ি ঘরে। ছিন্নমূল গৃহহারা ছিল যাদের পরিচয়।

সম্প্রতি মেহেরপুরে এমন ৩৭১টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর দেয়া হয়। এসব ঘর ও জমি পেয়ে বদলে গেছে সুবিধাভোগীদের জীবনমান। তাদের অনেকেরই জীবন পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে এ অসামান্য উপহার। মাথা গোঁজার নিজস্ব ঠিকানা পেয়ে অনেকেই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বদলে ফেলছেন জীবনের গল্প।

মেহেরপুরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তিন ধাপে জেলার তিন উপজেলার ২০ ইউনিয়নে ৩৭১টি ঘর নির্মাণ করে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। চতুর্থ ধাপে নতুন করে বরাদ্দ পাওয়া আরও ২৭টি ঘরের নির্মাণকাজ চলছে।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারের এসব ঘর পেয়ে হাসি ফুটেছে এক সময়ের ভূমিহীন, ছিন্নমূল, গৃহহারা মানুষের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে বদলে গেছে ওদের জীবনমান।

বর্তমানে তারা পরিবার নিয়ে সেই ঘরে বসবাস করার পাশাপাশি হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। বাড়ির উঠানে শাক-সবজি উৎপাদন করে নিজেদের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে কিছু বিক্রি করে লাভবানও হচ্ছেন অনেকে। তবে, বিশুদ্ধ পানি সুবিধার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি এখনও। প্রতি ১০টি বাড়ির জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি করে টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। ফলে নিত্যদিনের অনেক কাজ নিয়ে তাদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: স্বাবলম্বী হতে হাঁস-মুরগি পেলেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা

আশ্রয়ণের বাসিন্দারা বলছেন, ১০টি পরিবারের জন্য একটি টিউবওয়েল হওয়ায় গোসল করিয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠানো, রান্না বান্না এমনকি সাংসারিক কাজ কোন কিছুই সময় মতো করা যায় না।

এদিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার খোকসা গ্রামের মাঠে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৩০টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় সন্তানদের দুরের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে হচ্ছে। এ কারণে সন্তানদের নিরাপদ শিক্ষা জীবন নিয়ে চিন্তিত তারা। তাই সেখানে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি মসজিদ তৈরির দাবি জানিয়েছেন উপকারভোগীরা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা সময় সংবাদকে বলছেন, আমরা দীর্ঘদিন রাস্তা ঘাটে বসবাস করেছি। সরকার আমাদের বাড়ি করে দিয়ে মাথা গোজার ঠাঁই করে দিয়েছে। আমরা এখন খুব ভালো আছি তবে এখানে পানির একটু সমস্যা আছে। বাড়িতে বাস করার পাশাপাশি বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি উপাদান ও গৃহপালিত পশু হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল পালন করতে পারছি। তবে সন্তানদের শিক্ষার জন্য আশেপাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং নামাজের জন্য একটি মসজিদ নির্মাণের দাবি তাদের।

আরও পড়ুন: আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়ে কেমন আছেন তারা

মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম বলেন, ছিন্নমূল, ভূমিহীন ও গৃহহারা মানুষের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামীতে তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা হবে।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের এমন একটি ভালো কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন, যার কারণে আমরা কৃতজ্ঞ। যাদের কিছুই ছিল না, যারা রাস্তায় থাকতো। আবার কেউ কেউ অন্যের ওঠানে থাকতো। তাদের স্থায়ী ঠিকানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবং প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এই জমি ও ঘর তাদের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এ নিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি ২০২১ থেকে শুরু করে ২১ জুলাই ২০২২ পর্যন্ত মোট ২০টি ইউনিয়নে ৩৭১টি ঘর তিন ধাপে হস্তান্তর এবং চতুর্থ ধাপে আবারো নতুন করে বরাদ্দ পাওয়া আরও ২৭টি ঘরের নির্মাণকাজ চলছে।