Loading..

প্রকাশনা

১৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৮:১৩ পূর্বাহ্ণ

সরকারের গণমুখী কার্যক্রমের ফলে বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে।

সরকারের গণমুখী কার্যক্রমের ফলে বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে ঘটে গেছে বিপ্লব, যা আজ সর্বত্র দৃশ্যমান। সকারের অন্যতম সাফল্য জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন। যার বাস্তবায়ন চলছে। দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। গত ৪ বছরে প্রায় ৯২ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়েছে- যা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। প্রতিবছর ১ জানুয়ারিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি স্কুল-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্যবই পৌঁছে যাচ্ছে। পালিত হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক উৎসব দিবস। আগে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তকের জন্য কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হত। ২/৩ মাসের আগে ক্লাস শুরু করা সম্ভব হতো না। এখন শিক্ষা ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। ১ জানুয়ারি ক্লাস শুরু হচ্ছে। বাড়ছে উপস্থিতি, ঝরে পড়ার হার কমে গেছে। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার ছিল ৪৮ দশমিক ১৫ শতাংশ, বর্তমানে তা 1৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ ।ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেশের ২৩ হাজার ৩০০টি স্কুল-কলেজ-মাদরাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া উপকরণ বিতরণ শুরু হয়েছে। ‘তথ্য প্রযুক্তি’ নতুন বিষয় হিসেবে মাধ্যমিক পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ১৭ বছর পর কারিকুলাম সংস্কার হয়েছে। আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ ও সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের নতুন প্রজন্ম। প্রাথমিক, মাদরাসা ও মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের জেন্ডার সমতা অর্জিত হয়েছে। নারী শিক্ষায় অভূতপূর্ব এ অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশ আজ পৃথিবীতে মডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত। জাতিসংঘের মহাসচিবসহ বিশ্ব নেতারা এজন্য বাংলাদশকে অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন। প্রায় ৫ বছরে মাধ্যমিক পর্যায়ে ১ কোটি ৩২ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪৯ জন ছাত্র-ছাত্রীকে উপবৃত্তি দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠিত হয়েছে। এর মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ে কয়েক লাখ ছাত্রীকে উপবৃত্তি দেয়া হয়েছে। আগামীতে এ ট্রাস্টের মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা সহায়তা দেয়া হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে বর্তমান সরকার সম্পাদিত/গৃহীত কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বিবরণ-   

 ১) জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন।  
২) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ প্রণয়ন।   
৩) গত ৪ বছরে বিনামূল্যে ৯২ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ।  
 ৪) সকল পাঠ্যপুস্তক ই-বুকে রূপান্তর।
৫)পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের যথাযথ ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা। 
৬) ১৭ বছর পর পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী করে সংস্কার ও নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন।
৭) ২৩ হাজার ৩০০ স্কুলে-কলেজ-মাদরাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন।
৮) প্রায় ৫ বছরে মাধ্যমিক পর্যায়ে ১ কোটি ৩২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯৪৯ জন শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান।

৯) প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় স্নাতক পর্যায়ের ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৬ জন ছাত্রীকে মোট ৭৫.১৬ কোটি টাকা উপবৃত্তি প্রদান।  
১০)  মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি প্রবর্তন।
১১) ইংরেজি, গণিত ও কম্পিউটারসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৯ লাখ ১৫ হাজার ৭৫৮ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান।    
১২)  ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭৮৫ জন শিক্ষককে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা।  
১৩) প্রায় ৭ হাজার স্কুল কলেজ ও মাদরাসার একাডেমিক বিল্ডিং নির্মাণ। 
 ১৪) সরকারি পলিটেকনিকে ডাবল শিফট চালু, উপজেলা পর্যায়ে ১০০টি কারিগরি স্কুল স্থাপন, ২৩টি জেলা ও ৩টি বিভাগীয় শহরে মহিলা পলিটেকনিক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।  
১৫) ইভটিজিং-এর বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ সৃষ্টি। 
১৬) কোচিং বাণিজ্য বন্ধে নীতিমালা প্রণয়ন। ১৭) সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের ২য় গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা প্রদান।
১৮) জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন।  
১৯) ১ হাজার মাদরাসায় নতুন বিল্ডিং নির্মাণ, ৩১ মাদরাসায় অনার্স কোর্স চালু, ৩৫ মডেল মাদরাসা স্থাপন, দাখিল মাদরাসা, হাই স্কুল, আলীম, কামীল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বেতন এবং মর্যাদা সাধারণ কলেজের সমান করা হয়েছে। ১ম শ্রেণি থেকে ৯ম-১০ম  শ্রেণি (ইবতেদায়ী থেকে দাখিল) পর্যায়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে বিনামূল্যে বই দেয়া হচ্ছে। ৫ম শ্রেণির সমাপনী ও ৮ম শ্রেণির জেডিসি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।   
২০) জাতীয় সংসদে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস। বাস্তবায়নের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।
২১) ৩১০টি মডেল স্কুল স্থাপন কার্যক্রম গ্রহণ।    
২২) উচ্চ শিক্ষা প্রসারে নতুন ৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, আরো ৬টি স্থাপনের উদ্যোগ এবং ২৫ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন।    
২৩) ৪৮১টি উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের রাজস্ব-খাতে অন্তর্ভুক্তি।
২৪) বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।    
২৫) ঢাকা মহানগরে নতুন ১১টি সরকারি স্কুল ও ৬টি সরকারি কলেজ স্থাপন।   
 ২৬) ১২৮টি উপজেলায় আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার প্রতিষ্ঠা।   
 ২৭) স্কুলে ১ জানুয়ারি ও কলেজে ১ জুলাই ক্লাস শুরু, ১ নভেম্বর জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষা, ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা, ১ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শুরু এবং ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ। 
২৮) প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি।
২৯) বিটিভির মাধ্যমে সেরা শিক্ষকদের মানসম্পন্ন পাঠদান সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সম্প্রচার।
৩০) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট স্থাপনের মাধ্যমে মাতৃভাষা গবেষণা ও সংরক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধি।
৩১) ‘শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে জেলা সদরে অবস্থিত সরকারি পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জেলা সদরের  ৭০টি পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের অবকাঠামো উন্নয়ন।
৩২) প্রথমবারের মতো সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ের ৭ হাজার সেরা মেধাবীকে সনদ ও পুরস্কার প্রদান এবং জাতীয় পর্যায়ে ১২ জনকে ১ লাখ করে টাকা পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।   
৩৩) বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ আইন (বিল) জাতীয় সংসদে উপস্থাপন।  
 ৩৪) প্রায় ৯৯% শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করা সম্ভব হয়েছে।    
৩৫) ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করা হয়েছে।
৩৬) ৩১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩২১টি কলেজ জাতীয়করণের কাজ এগিয়ে চলেছে।
৩৭) সকল শিক্ষকদের ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা প্রদান।
৩৮) এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি প্রদান।

শিক্ষাক্ষেত্রে  বর্তমান সরকারের অবদান অসামান্য সে কথা অনস্বীকার্য। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায়  শিক্ষক-কর্মচারীদের নিম্ন লিখিত দাবিগুলো পূরণ হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় সকল বৈষম্য দূর হবে এবং বর্তমান সরকারের অবদান শতভাগ পূরণ হবে বলে মনে করি।

১) এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ৪৫ থেকে ৬৯ শতাংশ বাড়ি ভাড়া প্রদান করতে হবে।
২) সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো শতভাগ উৎসব ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান করতে হবে।
৩) এমপিওভুক্ত সকল শিক্ষক-কর্মচারীকে শতভাগ পেনশনের আওতায় আনতে হবে।
৪) বদলী ও পদোন্নতির ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৫) সন্তানদের শিক্ষাভাতা প্রদান করতে হবে।
৬) অর্জিত ছুটি ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। 
৭) জাতীয় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন করে সকল শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে। 
৮) সর্বোপরি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক,মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে সকল বৈষম্য দূর করতে হবে।


আমি মনে করি, উল্লিখিত দাবিগুলো বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের পক্ষেই পূরণ করা সম্ভব। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, বিশ্ব বন্ধু, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,মানবতার মা, জননেত্রী শেখ হাসিনা যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষক- কর্মচারীদের দুঃখ-দূর্দশা লাঘব করতে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সকল বৈষম্য দূরীকরণে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে এদেশের আপামর জনসাধারণ বিশ্বাস করেন।

আমার পরিচিতিঃ

মুহাম্মদ ইউছুফ,

পদবী-সুপারিন্টেন্ডেন্ট,

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ কামিল (হাদিস)

সোনারগাঁও দাখিল মাদ্রাসা,গ্রাম-সোনারগাঁও,উপজেলা:রাঙ্গুনিয়া,জেলা:চট্টগ্রাম।

মোবাইল নম্বর-০১৮১৫-৬০৫৩৫৯

ই-মেইল- [email protected]

আমি বাতায়নের সম্মানিত শিক্ষক মন্ডলীর কাছ থেকে দোয়া কামনা করছি




আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি