Loading..

প্রেজেন্টেশন

২০ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩ ০৮:৪২ পূর্বাহ্ণ

নারী-শিশুদের মধ্যে জিংকের ঘাটতি প্রকট হচ্ছে

নারী-শিশুদের মধ্যে জিংকের ঘাটতি প্রকট হচ্ছে


বাংলাদেশের নারী ও শিশুদের মধ্যে জিঙ্কের ঘাটতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রায় ৪৫ শতাংশ নারী এবং ৩২ ভাগ শিশু জিঙ্কের অভাবে ভুগছে।

|রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে বায়োফর্টিফাইড জিঙ্ক রাইস সম্প্রসারণের মাধ্যমে অপুষ্টি দূরীকরণে সম্ভাবতা ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বক্তারা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। গস্নোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (গেইন) বাংলাদেশ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সহযোগিতায় ছিলো এম্পিরিক রিসার্স লিমিটেড।কৃষিমন্ত্রী বলেন, এক সময় আমরা জাপানিদের খাটো বলতাম। এখন আমরা খাটো হয়ে যাচ্ছি। জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। নারী ও শিশুদের মধ্যে জিঙ্কের ঘাটতি আতঙ্কজনক পর্যায়ে চলে গেছে। করোনার সময় আমরা বুঝেছি যে জিঙ্ক কতোটা প্রয়োজনীয়। সে সময় জিঙ্কের ঘাটতি সবার নজরে এসেছে। আমরা এতোদিন পরিকল্পিভাবে ভিটামিন আয়রন আয়োডিন ঘাটতি নিয়ে কাজ করেছি। এখন জিঙ্কের ঘাটতি নিয়ে কাজ করতে চাই। এজন্য ঘাটতি পূরণে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সুপরিকল্পিত টার্গেট নিতে হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে গেইন বাংলাদেশের পোর্টফলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ। তিনি বলেন, অনুপুষ্টির মধ্যে জিঙ্ক স্বল্পতা উল্লেখযোগ্য। সমস্যা সমাধানে জিঙ্কসমৃদ্ধ চাল অন্যতম মাধ্যম হতে পারে। কৃষকদের এ ধান চাষে উৎসাহিত করতে বিশেষ প্রণোদনা বা ব্যাংকঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রম্নদাবা খন্দকার বলেন, জিঙ্ক গ্রোথ, ইমিউনিটি, কগনিটিভ ডেভেলপমেন্ট প্রভৃতির জন্য খুবই দরকার হয়। জিঙ্কের অভাবে নারীদের সন্তান গর্ভধারণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই জিঙ্কের অভাব পূরণে পুষ্টি সমৃদ্ধ চাল জনপ্রিয় করতে হবে।

কৃষিসচিব বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের মানুষের মধ্যে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যাও দিন দিন কমছে। মানুষ আর আগের মতো কাজ করতে পারে না। খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যা এখন খুবই কম। দেশের অপুষ্টি দূরীকরণের জিঙ্ক রাইস এখন সময়ের দাবি।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, দেশের পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নয়নে চালের মাধ্যমে জিঙ্ক দেয়া কতোটা সম্ভব সেটা দেখতে হবে। অন্যান্য ফসলগুলো জিঙ্ক সমৃদ্ধ করা যায় কি না সেজন্যও গবেষণা দরকার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত বছর ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জিঙ্ক সমৃদ্ধ ধানের চাষ হয়েছে। তবে জাতগুলোর চাল মোটা। মিলারদের আগ্রহ কম। জিঙ্ক চালের বাজারজাত কার্যক্রমও গতিশীল নয়। প্রতিটি দোকানে আলাদাভাবে জিঙ্ক চাল বিক্রির ব্যবস্থা করা দরকার।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির বলেন, মানুষের শরীরে জিঙ্কের যে চাহিদা, তার প্রায় ৭০ শতাংশ চালের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব। আমাদের চালগুলোর গড় জিঙ্কের পরিমাণ শতকরা ২৪ পিপিএম। শরীরের জন্য দৈনিক জিঙ্কের চাহিদা ১১ মিলিগ্রাম। এখন পর্যন্ত আমরা ৭টি জিঙ্ক সমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছি। ব্রি ধান৮৪ একটি মিরাকেল জিঙ্ক সমৃদ্ধ জাত। এখন হাই জিঙ্ক সমৃদ্ধ চাল আনছে ব্রি। জিঙ্কের পরিমাণ হবে ৪৫ পিপিএম।

এ সময় এসিআই অ্যাগ্রিবিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. ফা হ আনসারি বলেন, অনেক মেগাভ্যারাইটি রয়েছে, যেগুলোতে কৃষক ও মিলারদের আগ্রহ বেশি। সে জাতগুলোতে জিঙ্ক প্রবেশ করানো যায় কি না সেটা দেখা প্রয়োজন। এছাড়া একটি ভ্যারাইটি জনপ্রিয় করতে হলে অবশ্যই স্বল্পমেয়াদি হতে হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:০৬