Loading..

প্রকাশনা

১০ মে, ২০২৩ ০৫:৫০ অপরাহ্ণ

সমরেশ মজুমদারঃ আমি তো লেখক হতে চাইনি। আমাকে লেখক বানানো হয়েছে।

সমরেশ মজুমদারঃ আমি তো লেখক হতে চাইনি। আমাকে লেখক বানানো হয়েছে।

প্রশ্নঃ কেন লেখক হলেন?

 

সমরেশ মজুমদারঃ আমি তো লেখক হতে চাইনি। আমাকে লেখক বানানো হয়েছে।

 

প্রশ্নঃ কে বা কারা আপনাকে লেখক বানালেন?

 

সমরেশ মজুমদারঃ আমি নাটক লিখতাম। কিন্তু নাটক করার জায়গা পাওয়া যেত না। এর মধ্যে একজন আমাকে বললেন, তুমি নাটকটাকে গল্প করো। তাই করলাম। গল্পটা ছাপা হলো একটি পত্রিকায়। গল্পের সম্মানী হিসেবে আমাকে ১৫ টাকা পাঠানো হয়েছিল। সেই টাকা পেয়ে আমার বন্ধুদের খুব উৎসাহ। তখন কফির দাম ছিল মাত্র আট আনা। তো বন্ধুরা দুই দিন ধরে কফি খেলো। খেয়ে আমাকে বারবার বলতে লাগলো, আরও গল্প লিখতে। এভাবেই আমি লেখক হয়ে উঠলাম।

 

প্রশ্নঃ আপনার সাতকাহন উপন্যাসটি খুবই জনপ্রিয়। এটি লেখার প্রেক্ষাপট কি ছিল?

 

সমরেশ মজুমদারঃ আমি চা বাগানে থাকতাম। আমার বাড়ির পাশে এগারো-বারো বছরের একটি মেয়ে ছিল। সে আমাদের খেলার সাথীও ছিল। তো তাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। কান্না করতে করতে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছে। আমরা তার কান্না দেখে প্রতিবাদ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। মেয়ে চলে গেল। আবার তিনদিন পর ফিরে এলো। বিধবা হয়ে। সেই যে ঘরের ভেতরে ঢুকলো, আর বাইরে এলো না। আমাদের সঙ্গে খেলতেও আসে নাই। এটা আমাকে আঘাত করেছিল। সেই থেকেই সাতকাহন লেখার গল্প খুঁজে পাই।

 

প্রশ্নঃ আপনি দেড় শতাধিক উপন্যাস লিখেছেন। এসব উপন্যাসের প্রতিটিরই চরিত্র বিষয়বস্তু আলাদা। এটা কীভাবে সম্ভব?

 

সমরেশ মজুমদারঃ আমার তো আর হুমায়ূন আহমেদের মতো প্রতিভা নেই। আমি এক সময় ভাবলাম, কীভাবে লেখক হিসেবে আমি জায়গা করতে পারি। তখন বুঝতে পারলাম, এর একটাই উপায় আছে, যদি প্রত্যেকটা লেখা আলাদা করতে পারি। যাতে কোনো পাঠক পড়ে না বলতে পারে, এটা তো আগেই পড়েছি। এটাই আমার বাঁচার একমাত্র পথ।

প্রশ্নঃ তরুণ লেখকদের লেখার ব্যাপারে কিছু বলুন। 

সমরেশ মজুমদারঃ এদের অবস্থা খুব খারাপ।

প্রশ্নঃ আপনার অনেক গল্প-উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র টেলিভিশন নাটক হয়েছে। এতে কী সাহিত্যমান বজায় থাকে?

সমরেশ মজুমদারঃ আপনি যদি কোনো কিছু ফটোকপি করেন তাহলে কি সেটা অরিজিনালের মতো হবে? আমি তো মনে করি, পরিচালক বা প্রযোজককে যখন গল্প-উপন্যাস দেই, তখন মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয় আর কি!

- ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ 

সমরেশ মজুমদারের এই ইন্টারভিউ পড়তে গিয়ে প্রতিটি কথায় যেন জীবন্ত লাগছে। অথচ মানুষটি আর নেই!

Collected

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি