Loading..

খবর-দার

৩১ মে, ২০২৩ ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধুর নাম মনে থাকে না প্রধান শিক্ষকের!

মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেন ঢাকা মহানগরীর ফরিদাবাদে বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামাল। আর উপস্থিত থাকলেও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মনে থাকে না তার। শুধু তাই নয়, বক্তব্যের শেষে বলেন, ‘নামটা আমার নেওয়া উচিত ছিল’। অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ঢাকা মহানগরীর ফরিদাবাদ বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামালের বিরুদ্ধে তদন্ত করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. আরিফুল হক। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি বোর্ডে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি।

প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়— বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামাল ২০১৯ সালে মহান স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চের মূল অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। ২০১৮ সালের বিজয় দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামটা পর্যন্ত উচ্চারণ করতে ভুলে যান তিনি। ওই অনুষ্ঠান শেষে মোস্তাফা কামাল  বলেন, ‘নামটা আমার নেওয়া উচিত ছিল’।

তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সরকার, রাষ্ট্র ও অফিসবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রধান শিক্ষক। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামালের দেওয়া বক্তব্যের অডিও রেকর্ড তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণ হিসেবে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

প্রতিবেদনের সুপারিশে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয়— ‘রাষ্ট্র, সরকার, অফিসবিরোধী কর্মকাণ্ড করা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারণ না করায় প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামালকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যেতে পারে।’

এনসিটিবির নির্দেশ মানেন না প্রধান শিক্ষক

প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামালের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগের প্রমাণ তুলে ধরেন তদন্ত কর্মকর্তা।  জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সচিবের ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি সই করা চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন ফকিরকে সরকারিভাবে প্রশ্নপত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই প্রশ্ন তৈরির কাজে বাধা দেন প্রধান শিক্ষক। তার নির্দেশ না মেনে প্রশ্ন তৈরি করায় শিক্ষক জাকির হোসেন ফকিরকে শোকজও করেন প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামাল।

তদন্ত প্রতিবেদনে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া অপরাধ বিবেচনায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করারও সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

 শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ অমান্য

২০২২ সালের ১৪ নভেম্বরের ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চিঠিতে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক মো. লোকমান হোসেন তালুকদারকে চাকরিতে স্থায়ী করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করেননি প্রধান শিক্ষক। শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী, সহকারী শিক্ষক মো. লোকমান হোসেন তালুকদারকে স্থায়ী করারও সুপারিশ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে।

ভর্তি বাণিজ্য

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামাল অফিস সহকারী আসাদুজ্জামানের যোগসাজশে ভর্তি বাণিজ্য করেন। ভর্তি বাণিজ্য করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় অফিস সহকারী আসাদুজ্জামানকে চাকরির বিধি অনুযায়ী বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয় বোর্ডের তদন্ত প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনের সঙ্গে ভর্তি বাণিজ্যের অডিও রেকর্ডও দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।