Loading..

প্রকাশনা

০১ আগস্ট, ২০২৩ ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ

শিশুদের ডেঙ্গু নিয়ে যেসব তথ্য জানা জরুরি

শিশুদের ডেঙ্গু নিয়ে যেসব তথ্য জানা জরুরি

আমাদের দেশে প্রতিবছরের মতো এবারও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক সবাই সমানভাবে অসুস্থ হচ্ছেন, ঘটছে প্রাণহানি। আসুন বাচ্চাদের ডেঙ্গু নিয়ে কিছু বিষয় জেনে নেওয়া যাক।

* কোন বয়সের বাচ্চাদের ডেঙ্গু হতে পারে

যে কোনো বয়সের বাচ্চার ডেঙ্গু হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে ১ বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের ডেঙ্গু ইনফেকশনে ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি।

* বাচ্চাদের ডেঙ্গু বড়দের মতোই উপসর্গ নিয়ে আসে

হ্যাঁ, একটু বড় বাচ্চাদের প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই উপসর্গ হতে পারে। যেমন-জ্বর, মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, হাড়ে ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, র‌্যাশ ইত্যাদি। তবে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর উপসর্গ হতে পারে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের মতো (কাশি, সর্দি, জ্বর ইত্যাদি)। এ ছাড়া ছোট বাচ্চারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে ডায়রিয়া, বমি নিয়েও আসতে পারে।

* ডেঙ্গু আক্রান্ত বাচ্চার জ্বর সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য

জ্বর হঠাৎ করে আসতে পারে। জ্বর থার্মোমিটারে মাপলে ১০৪-৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত ১-৭ দিন থাকতে পারে। ডেঙ্গু রোগী জ্বরের ৩-৪ দিনে হঠাৎ করে খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই এ সময় খুব সাবধানে বাচ্চাকে পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। কোনো বিপদ বা লক্ষণ দেখা যায় কিনা।

* ডেঙ্গু আক্রান্ত বাচ্চার বিপদের লক্ষণ কী কী হতে পারে

পেটে ব্যথা অথবা পেটে চাপ দিলে ব্যথা অনুভব করা, অবিরাম বমি, শরীরে পানি জমে ফুলে ওঠা, দুর্বলতা কিংবা অস্থিরতা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা বা ঘুম ঘুম ভাব, ৬ ঘণ্টার মধ্যে একবারও প্রস্রাব না হওয়া- এসব কিছু হলো ডেঙ্গুর সতর্কবার্তা।

* কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন

‘সম্ভাব্য ডেঙ্গু আক্রান্ত’ বাচ্চার ক্ষেত্রে ওপরে উল্লেখিত বিপদের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

* আপনার বাচ্চা ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা কীভাবে বুঝবেন

আপনার বাচ্চা যদি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি এমন এলাকায় বাস করে অথবা বেড়াতে যাওয়ার ইতিহাস থাকে সঙ্গে জ্বর এবং বমি বমি ভাব, বমি, র‌্যাশ, শরীরে ব্যথা-এসবের যে কোনো দুটি উপসর্গ পাওয়া যায়, তাহলে ধরে নিতে হবে ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

* কখন নিবিড় পর্যবেক্ষণ বা হাসপাতালে ভর্তি করাতে হতে পারে

সাধারণত ডেঙ্গু রোগীদের তেমন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল ও বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগী আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যায়। তবে বিপদের লক্ষণ দেখা দিলে আর বাসায় অপেক্ষা করা যাবে না। জরুরি ভিত্তিতে কাছের হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

* ডেঙ্গু আক্রান্ত বাচ্চার কি রক্তপাত হতে পারে?

হ্যাঁ হতে পারে। Dengue fever with haemorrhage কিংবা Dengue haemorrhagic fever-এ রোগীর রক্তপাত হতে পারে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চামড়ায় লাল লাল দাগ হয় কিনা, নাক বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়া কিংবা রক্ত বমি করে কিনা, পায়খানা হয় কিনা, মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্ত যায় কিনা খেয়াল রাখতে হবে। এরকম রক্তপাত হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

* ডেঙ্গু আক্রান্ত বাচ্চার ক্ষেত্রে কী কী করা যাবে না

বাচ্চাকে প্যারাসিটামল ছাড়া আর কোনো ওষুধ দেওয়া যাবে না। ফার্মেসি থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো রকম অ্যান্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। হাসপাতালে ভর্তি ছাড়া কোনো রকম স্যালাইন জাতীয় ওষুধ দেওয়া যাবে না।

* কীভাবে ডেঙ্গু হতে মুক্ত থাকা যেতে পারে

আপনার বাসার আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না। বাসার জানালায় নেট লাগান। মশারি ছাড়া ঘুমাবেন না। বাচ্চাকে সুতির ফুলহাতা আরামদায়ক কাপড় পরাতে পারেন। মশা প্রতিরোধ ক্রিম মাখাতে পারেন।

 

আরো দেখুন