Loading..

প্রকাশনা

০৩ আগস্ট, ২০২৩ ১২:২০ পূর্বাহ্ণ

উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি: মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে

উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি: মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে

দেশে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে হাজার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র কয়েকশ। এ তথ্য থেকে দেশে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দক্ষ শিক্ষকের সংখ্যার বিষয়ে একটি ধারণা পাওয়া যায়। এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ শিক্ষার্থী পাশ করেছে। অন্যদিকে এই স্তরে ভর্তিযোগ্য আসন আছে প্রায় সাড়ে ৩৩ লাখ। এবার ভর্তির ক্ষেত্রে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতা হলেও কলেজ পর্যায়ে অন্তত ১৭ লাখ আসন শূন্য থাকতে পারে। পাশ করা শিক্ষার্থীর তুলনায় এ স্তরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আসন বেশি থাকায় শিক্ষার্থীরা ভর্তি নিয়ে চিন্তামুক্ত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে কি না, তা নিয়ে শিক্ষার্থীরা চিন্তিত। যেহেতু ভর্তির ক্ষেত্রে এবারও পছন্দের শীর্ষে থাকা কিছু প্রতিষ্ঠানেই তুমুল প্রতিযোগিতা হবে, সেহেতু বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থী সংকটে পড়বে। বস্তুত সব স্তরেই ভালো মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম। এ অবস্থায় দেশে শিক্ষার মান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করতে হলে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

গত দুই দশকে দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে; বেড়েছে ভর্তি ও পাশের হার। শিক্ষাবিদদের মতে, দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেলেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বাড়ছে না মান। এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফল অর্জনের পরও অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারছেন না। এ থেকেও শিক্ষার মানের বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়। শিক্ষার মান বাড়াতে হলে এ খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করার পদক্ষেপও নিতে হবে। আমরা যদি আমাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে চাই, তাহলে শিক্ষার সব স্তরে মান উন্নয়নের পদক্ষেপ নিতে হবে। বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা ও অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে অনুধাবন করতে হবে শিক্ষার মান বাড়ানোর বিষয়টিকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এ খাতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে দরকার যোগ্য, দক্ষ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করার জন্য কেবল সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোই যথেষ্ট নয়; শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা যাতে অক্ষুণ্ন থাকে সে বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে।

উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি কার্যক্রমে যাতে কোনো রকম জটিলতা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে। লক্ষ করা যায়, প্রতিবছর নতুন শিক্ষাবর্ষে এবং নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘উন্নয়ন ফি’র নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। নিয়মবহির্ভূত এসব অর্থ প্রদান করতে গিয়ে অনেক অভিভাবক দিশেহারা হয়ে পড়েন। এসব অনিয়ম রোধে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের বৈষম্য দূর করার পদক্ষেপ নিতে হবে। লক্ষ করা যায়, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাশ করার পর বহু শিক্ষার্থী গ্রাম ছেড়ে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করে। গ্রামীণ এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মান বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হলে এ প্রবণতার অবসান হবে, এটি আশা করা যায়।

 

আরো দেখুন