Loading..

মুজিব শতবর্ষ

০৯ আগস্ট, ২০২৩ ০৫:৪৭ অপরাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু-ছিলেন-নিপীড়িত-মানুষের-কণ্ঠস্বর 1

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস কালে কালে খণ্ডিত হয়েছে। অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে যার যার সুবিধামতো সে সে নতুন ইতিহাস লিখতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেনি; কিন্তু সত্য এমন এক অমোঘ শক্তি, যাকে কেউ কোনোদিন শেষ করতে পারেনি। শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে কতখানি ভূমিকা রেখেছিলেন, তা কমবেশি সব বাঙালিই জানেন। সেই বহুল চর্চিত ইতিহাসকেই আবার নতুন করে পাঠককে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য আজ কলম ধরেছি। আশা করি, নবীন-প্রবীণ পাঠক সমাজ আমার এ লেখার সঙ্গে একমত পোষণ করবেন। এখানে আমি ব্যক্তিগত কোনো কাল্পনিক সত্য পরিবেশন করব না-ঐতিহাসিকভাবে যা সত্য, তাকেই তুলে ধরার চেষ্টা করব মাত্র।

ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবে বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রোথিত থাকলেও তা নিয়ে যথেষ্ট অস্পষ্টতা ছিল। কেউ-ই সেই মুহূর্তে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার সাহস পাননি। সেই সময় সেটা দেখা সম্ভবও ছিল না; কিন্তু ১৯৭০ সালের নির্বাচন বাংলাদেশের স্বপ্নকে যেন নতুন করে সবার চোখে দোলা দিয়ে যায়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিব সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হয়ে যখন পাকিস্তানের ক্ষমতায় বসার যোগ্যতা অর্জন করলেন, তখন দেখা গেল পাকিস্তানি শাসক-শোষকরা বাঙালি এ নেতার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে টালবাহানা শুরু করল। শুধু তা-ই নয়, ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে আকস্মিকভাবে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী জোরপূর্বক যুদ্ধ ঘোষণা করে নিরস্ত্র বাঙালিদের বিরুদ্ধে। সেই যুদ্ধের সব দোষ চাপানো হয় বঙ্গবন্ধুর ওপর। বঙ্গবন্ধু ছিলেন পাকিস্তানি সামরিক জান্তার চোখে এক মূর্তিমান আতঙ্ক। তিনি যেভাবে বাঙালি জাতির স্বাধিকারের বিষয়টি পরিষ্কার করে তোলেন, বাঙালি আর কোনো নেতার পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। শেখ মুজিব জানতেন পাকিস্তানিরা কোনোদিনই বাঙালিদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভার দেবে না। অবশ্য এ কথা এখন পাকিস্তানিদের লেখা বিভিন্ন বইপুস্তক থেকেও জানা যাচ্ছে। সিদ্দিক সালিক নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী পাকিস্তানি চক্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিবেশন করেছেন তার ‘Witness to Surrender’ গ্রন্থে। ১৯৭০ সালের জানুয়ারিতে তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর জনসংযোগ অফিসার, ঢাকায় পা দিয়েই তিনি শোনেন ইয়াহিয়া খান বাঙালিকে ‘বেজন্মা (বাস্টার্ড)’ বলে গালাগাল করছেন। এমনকি ইয়াহিয়া খান নিজের লোকদের শুনিয়ে শুনিয়েও শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বাস্টার্ড’ বলেছিলেন। ইয়াহিয়া খান যখন পাকিস্তানের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সংলাপরত, সেই সময়ও ইয়াহিয়া খান তার সঙ্গীদের আশ্বস্ত করতেন এই বলে যে, ‘ব্ল্যাক বাস্টার্ডদের’ ক্ষমতা দেওয়া যাবে না। সিদ্দিক সালিক নিজ কানে এসব কথা শুনেছেন বলে তার বইতে উল্লেখ করেছেন। ভুট্টো ও ইয়াহিয়া খানের ভরসা ছিল চীন ও আমেরিকার ওপর। চীন ভারতবর্ষকে ঠেকিয়ে রাখবে আর আমেরিকা সোভিয়েত ইউনিয়নকে।

আরো দেখুন