![img](https://teachers.gov.bd/shared/profile_pictures/kACa46jVYuAvaEm7KM0qMg9UuB8nDNmE0UtQRN5n.jpeg)
সিনিয়র শিক্ষক
![](https://teachers.gov.bd/shared/contents/2023/August/16/publication/image_271193_1692202044.jpg)
১৬ আগস্ট, ২০২৩ ১০:০৭ অপরাহ্ণ
সিনিয়র শিক্ষক
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন
দেখাচ্ছেন তার পূর্ব শর্ত হলো মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন। তাই
শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী ৫+ বয়সী শিশুর জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রচলন করা
হয়েছে। শিশুর সৃজনশীল ও নান্দনিক বিকাশের জন্য খেলাধুলাসামগ্রী, প্রাক-প্রাথমিক
কারিকুলাম ও পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়েছে।
এখন বিশ্বের প্রতিটি মানুষই বুঝতে পারছে বাস্তব জীবনকে উন্নত করতে
হলে শিক্ষার বিকল্প নেই। তাই অধিকাংশ পিতামাতাই ৫+ বছর বয়সেই শিশুকে
প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে ভর্তি করার উদ্যোগ নিচ্ছে। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। ২০১৬
সালে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় শিশুদের অংশগ্রহণ ৭৬% হয়েছে। আমাদের শিক্ষানীতিতে
শিশুর সৃজনশীল ও নান্দনিক বিকাশকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সাধারণ শিশুদের সাথে বিশেষ
চাহিদা সম্পন্ন শিশুদেরও সৃজনশীল বিকাশের প্রতি নজর দেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে
পড়াশুনার পাশাপাশি সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে শিশু সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে
পারছে। শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য সুষ্ঠু দেহ ও মন গঠনের জন্য সৃজনশীলতার
প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শিশুর সৃজনশীল বিকাশে অভিভাবকের মত আমাদের শিক্ষকগণও কম
গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তবে অনেক ক্ষেত্রে শিশুর প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও তা বিকশিত হতে
পারছে না শুধু তার সঠিক ক্ষেত্র তৈরি না করে দিতে পারার কারণে। বর্তমানে প্রাথমিক
শিক্ষায় যে সমস্ত শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তাদের অনেকেরই সর্বোচ্চ ডিগ্রি
রয়েছে এবং তাদের মেধারও অভাব নেই। শুধু সঠিক নির্দেশনা ও আন্তরিকতার মাধ্যমেই
শিশুর মেধাকে বিকশিত করতে পারেন শিক্ষকগণ।
আমাদের শিক্ষাক্রমের সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাথমিক স্তরে শিশুর
সৃজনশীল বিকাশের জন্য চারু ও কারুকলা একটি আবশ্যকীয় বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা
হয়েছে। শিশু শ্রেণিতে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় এবং ইচ্ছেমত আঁকা ও খেলার মাধ্যমে শিশুর
সৃজনশীল বিকাশ ঘটে থাকে। এই সৃজনশীল বিকাশের মাধ্যমে শিশুর কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি
পায়, গুছিয়ে কথা বলতে পারে এবং নিজে কিছু একা একা তৈরি করার চেষ্টা করে। ১ম থেকে ৫ম
শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা সংশ্লিষ্ট কোনো পাঠ্য পুস্তক নেই। শুধুমাত্র
শিক্ষকের জন্য রয়েছে শিক্ষক নির্দেশিকা। যাতে শ্রেণির অর্জন উপযোগী যোগ্যতা
চিহ্নিত করে অধ্যায় ভিত্তিক সাজানো আছে, শিক্ষক তার চিন্তা চেতনার পাশাপাশি শিক্ষক
সহায়িকা বইয়ের সাহায্যে শিশুর সৃজনশীল বিকাশে সহায়তা করে। শ্রেণির কাজ শিশুর
সৃজনশীল বিকাশকে সহায়তা করায় শিশুর মেধাবিকাশ ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে।
শ্রেণির কাজে সকল শিশু একই বিষয়ে সমান পারদর্শী নয়। কোনো কোনো শিক্ষার্থী ছবি
আঁকা, কেউ কেউ কাপড়, মাটি বা কাগজ দিয়ে কেনো কিছু বানাতে পছন্দ করে। এগুলো সবই
শিশুর সৃজনশীল বিকাশকে সমৃদ্ধ করে। শ্রেণির কাজে শিক্ষক খেয়াল রাখবেন শিশু কোন্্
বিষয়ে আগ্রহী ও পারদর্শী। শিশুর আগ্রহ ও পারদর্শীতার উপর ভিত্তি করে তাকে উত্সাহ
দিতে হবে। তার মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে।
শিশু শিক্ষক ও অভিভাবকের কাছ থেকে উত্সাহ ও স্বীকৃতি পেলে সে সেই
কাজে আরো বেশি আগ্রহী ও মনোযোগী হবে। পরবর্তীতে সে আরো ভালো কিছু করার উত্সাহ
পাবে। সমাজে সাধারণ শিশুদের সাথে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সৃজনশীল বিকাশে
সহযোগিতা করলে তারা পরিবারের ও সমাজের বোঝা না হয়ে জনসম্পদে পরিণত হবে। শিশুর
সৃজনশীল বিকাশই পারে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ উপহার দিতে। তাই শিশুর সৃজনশীল বিকাশকে
গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকের সাথে শিক্ষকেরও ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ।