Loading..

প্রকাশনা

২৪ আগস্ট, ২০২৩ ০৮:৫৯ অপরাহ্ণ

নগদ সহায়তা-সঞ্চয়পত্রে কর আগের নিয়মে

নগদ সহায়তা-সঞ্চয়পত্রে কর আগের নিয়মেই

রপ্তানিমুখী শিল্পের নগদ সহায়তা ও সঞ্চয়পত্রের মুনাফাকে আয় হিসাবে গণ্যের বিধান রাখা হয়েছিল নতুন আয়কর আইনে। শিল্পের সক্ষমতা ও ব্যক্তি করদাতাদের করের বোঝা লাঘবে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। অর্থাৎ আগের নিয়মেই নগদ সহায়তা-সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর কাটা হবে এবং সেটিই করদাতার চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচিত হবে। 

এ বিষয়ে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

১৬ আগস্ট যুগান্তরে ‘সঞ্চয়পত্রে বাড়ল করের বোঝা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে নতুন আয়কর আইনে কর পরিগণনা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনায় সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগকারীদের ওপর কীভাবে করের খক্ষ নেমে আসবে- সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়। 

অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, নতুন পদ্ধতির ফলে অতিরিক্ত করভার সাধারণ মধ্যবিক্ত করদাতা, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং মহিলা করদাতাদের পারিবারিক ব্যয়সহ অন্য ব্যয়ের সুযোগ সংকুচিত করবে। ফলে প্রান্তিক করদাতাসহ সব করদাতার মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও রপ্তানির বিপরীতে নগদ প্রণোদনা হতে উৎসে কর চূড়ান্ত করদায় হিসাবে পরিগণিত না হওয়া রপ্তানিকারক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিরুৎসাহিত করতে পারে মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে। 

এতে আরও বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে রিটার্ন দাখিল হতে অব্যাহতি (এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ) প্রদান করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে ব্যাংক সুদ বা মুনাফার বিপরীতে অতিরিক্ত কর আদায়ের সুযোগ নেই। অর্থাৎ এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঞ্চয়ী ও স্থায়ী আমানত হতে অর্জিত মুনাফার বিপরীতে কর্তনকৃত উৎসে কর চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচিত হবে। 

এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম যুগান্তরের বলেন, শিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে এনবিআরকে অবশ্যই সাধুবাদ দিতে হবে। তবে শুধু নগদ সহায়তাতেই কর জটিলতা নেই, আরও অন্য খাতেও বিদ্যমান রয়েছে। সেগুলোর দিকে এখন মনোযোগ দেওয়া উচিত। যেমন রপ্তানির আয়ের বিপরীতে এক শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখা হচ্ছে, এটি বিদ্যমান পরিস্থিতি গার্মেন্টস মালিকদের জন্য বোঝা। আবার কাস্টমসে এইচএস কোডের ঝামেলা পোহাতে হয়, রপ্তানিমুখী শিল্প ভ্যাট অব্যাহতিপ্রাপ্ত হলেও নিয়মিত অডিটের নামে হয়রানি হতে হয়। এসব সমস্যারও সমাধান প্রয়োজন জরুরি। 

জানা গেছে, পুরনো আইনে ৮২(সি) ধারায় ৬টি খাতের আয়ের বিপরীতে কর্তনকৃত উৎসে করকে চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচনা করা হতো। এগুলো হচ্ছে- সরকার কর্তৃক জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ, সঞ্চয়পত্রের সুদ আয়, রপ্তানিকারকদের নগদ সহায়তা, এমপিওভুক্ত স্কুলের এফডিআরের প্রাপ্ত সুদ, জমি বিক্রর অর্থ এবং জমি ডেভেলপারদের সঙ্গে সাইনিং মানির বিপরীতে প্রদত্ত উৎসে কর। নতুন আয়কর আইনে ধারাটি বিলুপ্ত করায় করদাতার অন্য আয় (বেতন-ভাতা, সঞ্চয়পত্রের সুদ, বাড়ি ভাড়া ইত্যাদি) বার্ষিক আয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে এবং সে মোতাবেক করদাতাকে স্ল্যাব ভিত্তিক অথবা মূলধনী আয় হিসাবে উৎসে কর রিটার্নের সঙ্গে জমা দিতে হবে। 

প্রজ্ঞাপন জারি হলে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারী ও রপ্তানিমুখী শিল্পের করের বোঝা বহুলাংশেই লাঘব হবে। তবে সরকার জমি অধিগ্রহণ করলে বা জমি বিক্রি করলে সেই অর্থ করদাতার আয় হিসাবে গণ্য হবে এবং মূলধনী আয়ের ওপর (বিক্রয়মূল্য-ক্রয়মূল্য) ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স দিতে হবে।

নতুন আইনে, ব্যক্তি করদাতাদের জমি বিক্রির মূলধনী আয়কে দুটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত; জমি কেনার ৫ বছরের মধ্যে বিক্রি বা হস্তান্তর করলে ব্যক্তি শ্রেণির স্ল্যাব অনুযায়ী কর দিতে হবে। অন্যদিকে ৫ বছর পর জমি বিক্রি বা হস্তান্তর করলে ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স দিতে হবে।

আরো দেখুন