Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

২৪ আগস্ট, ২০২৩ ১০:৩৫ অপরাহ্ণ

গ্যালাক্সি

গ্যালাক্সি কাকে বলে? গ্যালিক্সির গঠন, গ্রুপ এবং প্রকারভেদ।

গ্যালাক্সিঃ গ্যালাক্সি বলতে আমরা সাধারণত গ্যাস, মেঘযুক্ত ধূলিকণা এবং কোটি কোটি নক্ষত্রের

সমাবেশকে  বুঝি, যা সৌরজগতে মধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা আবদ্ধ ও একত্রিত থাকে। গ্যালাক্সি (Galaxy) শব্দটি গ্রিক শব্দ galaxias থেকে এসেছে যাকে বাংলায় ছায়াপথ বলে। নিম্নে গ্যালাক্সির কতিপয় সংজ্ঞা দেয়া হলোঃ

স্পেসপ্লেস নাসা এর মতে, গ্যালাক্সি হল গ্যাস, ধূলিকণা এবং কোটি কোটি নক্ষত্র এবং তাদের সৌরজগতের একটি বিশাল সমাবেশ, যা মাধ্যাকর্ষণ দ্বারা একত্রিত হয়।

ব্রিটিনিকা এর মতে, একটি ছায়াপথ হল নক্ষত্র এবং আন্তঃনাক্ষত্রিক পদার্থের যে কোনো সিস্টেম যা মহাবিশ্বকে তৈরি করে। এই ধরনের অনেক সমাবেশ এতই বিশাল যে তারা শত শত কোটি তারা ধারণ করে। গ্যালাক্সিগুলি সাধারণত ক্লাস্টারে থাকে, যার মধ্যে কয়েকটি লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ জুড়ে অবস্থান করে।

গ্যালাক্সির গঠণঃ আমাদের সৌরজগতের মত কোটি কোটি নক্ষত্র নিয়ে গ্যালাক্সি গঠিত। সৌরজগত  অর্থাৎ সূর্য ও পৃথিবী সহ গ্রহসমূহ গ্যালাক্সির পেঁচাল (Spiral) বাহুগুলোর একটিতে অবস্থিত এবং এটা গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে প্রায় ২৮,০০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করে, প্রায় ২০ কোটি বৎসরে একবার গ্যালাক্সিকে প্রদক্ষিন করে। এক আলোকবর্ষ মানে আলো যে গতিতে চলে অর্থাৎ ১ সেকেন্ডে ১,৮৬,০০০ মাইল হিসাবে আলো এক বছরে যত দূর যেতে পারে, সেই পরিমাণ দূরত্ব। পৃথিবী থেকে গ্যালাক্সির কেন্দ্র দেখা যায়না। গ্যালাক্সিতে আলো শোষণকারী মেঘ ও ধূলিকনা রয়েছে। গ্যালাক্সির বয়স প্রায় ১,২০০ কোটি বৎসর। অন্যান্য আরো অনেক পেঁচাল বাহু সম্পন্ন গ্যালাক্সির মত আমাদের গ্যালাক্সিকেও পেঁচাল বাহু মনে হয়। গ্যালাক্সির গঠনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথাঃ



(১) কেন্দ্রের স্ফীত অংশ (Bulge), যার ব্যাস প্রায় ৩০,,০০০ আলোক বর্ষ। 

(২) চাকতির আকারের ছড়ানো অংশ (Disk), যেখানে  আমাদের সৌর জগৎ অবস্থিত, যা প্রায় ১,০০০ আলোকবর্ষ পুরু এবং প্রায় ১,০০,০০০ আলোক বর্ষ লম্বা এবং 

(৩) গ্যালাক্সির চারপাশের আলোক বলয় (Halo) , যার ব্যায় প্রায় ৩,০০,০০০ আলোকবর্ষ এবং এখারে রয়েছে বিভিন্ন তারকাগুচ্ছ ও বিছিন্ন নক্ষত্র সমূহ।

গ্যালাক্সি গ্রুপ এবং গ্রুপের প্রকারভেদঃ নিম্নে গ্যালাক্সির গ্রুপ ও গ্রুপের প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলোঃ

গ্যালাক্সি গ্রুপঃ গ্যালাক্সি গ্রুপ হলো ৫০ বা তার কম সদস্য নিয়ে গঠিত একটি গ্যালাক্সির সংগঠন বা গোষ্ঠী। এই গ্যালাক্সি গ্রুপ মাধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা আবদ্ধ থাকে। গ্যালাক্সি গ্রুপের চেয়ে বড় কোন গ্রুপ অর্থাৎ কোন গ্যালাক্সি গ্রুপে যদি ৫০ এর অধিক সদস্য থাকে তাকে গ্যালাক্সি ক্লাস্টার বা সুপারক্লাস্টার বলা হয়। কয়েকটি ক্লাস্টার এর উদাহরণ হলো, বুলেট ক্লাস্টার, এবেলা-৫২০, এবেলা-২১৪২ ইত্যাদি। আমাদের নিজস্ব গ্যালাক্সিমিল্কিওয়ে৪০ টিরও বেশি ছায়াপথের স্থানীয় গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত  রয়েছে।

অমপ্যাক্ট গ্রুপঃ একটি অমপ্যাক্ট গোষ্ঠীতে অল্প সংখ্যক ছায়াপথ থাকে। সাধারণত পাঁচটির কাছাকাছি। অন্যান্য ছায়াপথ থেকে তুলনামূলকভাবে গ্যালাক্সির কম্প্যাক্ট গোষ্ঠীগুলিতে  অন্ধকার পদার্থের প্রভাব বেশি  থাকে। 

জীবাশ্ম গ্রুপঃ ফসিল গ্যালাক্সি গ্রুপ বা ফসিল ক্লাস্টারগুলিকে বিশ্বাস করা হয় যে, এই ধরণের গ্রুপ গ্যালাক্সি গোষ্ঠীর মধ্যে মিলিত হওয়ার শেষ ফলাফল, যা পূর্বপুরুষ গোষ্ঠীর এক্স-রে হ্যালোকে পিছনে ফেলে। একটি গোষ্ঠীর মধ্যে গ্যালাক্সিগুলি মিথস্ক্রিয়া করে এবং একত্রিত হয়। এই গ্যালাক্সিগুলো একত্রিত হওয়ার পিছনের ভৌত প্রক্রিয়া হল গতিশীল মিল্কিওয়ের নিকটতম জীবাশ্ম গোষ্ঠী NGC 6482। হারকিউলিস নক্ষত্রমণ্ডলে অবস্থিত প্রায় 180 মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরত্বে একটি উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সি।

প্রোটো-গ্রুপঃ প্রোটো-গ্রুপ হল গোষ্ঠী যা গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তারা প্রোটোক্লাস্টারের ছোট রূপ। এর মধ্যে গ্যালাক্সি এবং প্রোটোগ্যালাক্সি রয়েছে যা ডার্ক ম্যাটার হ্যালোতে এমবেড করা হয়েছে যেগুলি একক ডার্ক ম্যাটার হ্যালোর গ্রুপ-গঠনে মিশ্রিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

কয়েকটি গ্যালাক্সি গ্রুপঃ 

লোকাল বা স্থানীয় গোষ্ঠী: পৃথিবী সহ মিল্কিওয়ে যে গোষ্ঠীতে অবস্থিত। 

স্টেফানের কুইন্টেট: সবচেয়ে ফটোজেনিক গ্রুপগুলির মধ্যে একটি। 

রবার্টস কোয়ার্টেট: আরেকটি খুব উল্লেখযোগ্য গ্রুপ। বুলেট গ্রুপ: একত্রিত হওয়া দলটি স্বাভাবিক পদার্থ থেকে অন্ধকার পদার্থের বিচ্ছেদ প্রদর্শন করে

ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত। 

আরো দেখুন