Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

২৪ আগস্ট, ২০২৩ ১০:৪৩ অপরাহ্ণ

নীহারিকা

নীহারিকা বা নেবুলা (Nebula) হলো ধুলা, হাইড্রোজেন, হিলিয়াম ও আয়নিত গ্যাসের আন্তর্মহাকাশীয় মেঘ। ‘নেবুলা‘ একটি লাতিন শব্দ এবং এর আভিধানিক অর্থ ‘কুয়াশা বা মেঘনীহারিকা হলো নক্ষত্রের জন্মস্থান। মহাকর্ষের টানে গ্যাসীয় কণাগুলো একত্র হয়ে ধীরে ধীরে নক্ষত্র গঠন করে।

নীহারিকা প্রধানত গ্যাস, ধুলা ও প্লাজমা দ্বারা গঠিত। বেশির ভাগ নীহারিকায়ই শতকরা ৯০ ভাগ হাইড্রোজেন, শতকরা ৯ ভাগ হিলিয়াম আছে। এ ছাড়া বাকি শতকরা ১ ভাগ হিসেবে রয়েছে কার্বন, নাইট্রোজেন, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও পটাসিয়াম। নীহারিকাগুলো মূলত অবস্থিত আন্ত নাক্ষত্রিক শূন্যস্থান বা interstellar medium (ISM)-এ।

অর্থাৎ দুটি নক্ষত্রের মধ্যে বিদ্যমান ফাঁকা জায়গায়।

নীহারিকার কথা পাওয়া যায় আরবীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আব্দেল রাহমান আল সুফির বর্ণনা থেকে। তিনি কিছু স্বতন্ত্র নক্ষত্রগুচ্ছকে নীহারিকা হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন।

১৮৬৪ সালের শুরুর দিকে উইলিয়াম হাগিন্স (William Huggins) প্রায় ৭০টি নীহারিকার বর্ণালি পরীক্ষা করেন।

তিনি তাঁর দেখা নীহারিকার এক-তৃতীয়াংশকে দেখতে পান নিষ্প্রভ মেঘ হিসেবে। কারণ এসব নীহারিকার জমাটবদ্ধ উপাদান আলোক তরঙ্গ শোষণ করে নিচ্ছে। বাকি নীহারিকাগুলোকে আকাশে আলোকিত বা উজ্জ্বল অবস্থায় দেখতে পান। এসব উজ্জ্বল নীহারিকার অভ্যন্তরে তারকাগুচ্ছ আছে এবং ওই তারকাগুলোর কারণেই এই নীহারিকাগুলোকে উজ্জ্বল দেখায়।  ১৯১২ সালে এরূপ আলোকিত নীহারিকাগুলোকে পৃথক শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।

১৯২২ সালে বিজ্ঞানী হাবল ঘোষণা দেন যে প্রায় সব নীহারিকার সঙ্গেই বহুসংখ্যক নক্ষত্র আছে। আর সে কারণেই এগুলোকে আলোকিত অবস্থায় দেখা যায়। এসব নীহারিকাতেই অন্তত নীলাভ-সাদা বর্ণের বড় নক্ষত্র বা প্রধান ধারার নক্ষত্রের মতো বহু নক্ষত্র আছে। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে যখন বিজ্ঞানীরা গ্যালাক্সিগুলোর আসল ধর্ম জানতেন না, তখন অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সিকে অ্যান্ড্রোমিডা নীহারিকাও বলা হতো। প্রযুক্তির উন্নতিতে আজ আমরা জানতে পেরেছি তা নীহারিকা নয়, গ্যালাক্সি। পৃথিবী থেকে দূরত্বের কারণে  ছোট দেখা গেলেও মূলত নীহারিকা অনেক বড়। এগুলো সাধারণত ০.১ আলোকবর্ষ থেকে শুরু করে অনেক বৃহৎ এলাকাজুড়ে অবস্থান করে। এখানে এক বছরে আলো যত পথ অতিক্রম করে তাকে ১ আলোকবর্ষ বলে।

এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে ছোটো নীহারিকা NGC 7027 মাত্র ০.১ আলোকবর্ষ। অন্যদিকে, আবিষ্কৃত সর্ববৃহৎ ট্যারান্টুলা নেবুলা প্রায় ১৮৬২ আলোকবর্ষ।

আরো দেখুন