Loading..

উদ্ভাবনের গল্প

২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:৪০ অপরাহ্ণ

"শিশুর বিকাশ ঘটাই, সৃজনশীলতায় মন মাতাই"

আসসালামু আলাইকুম। ছোট ছোট সোনামণিদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য, বিদ্যালয়ে আনন্দে রাখার জন্য আমার উদ্ভাবনী গল্প শিশুর বিকাশ ঘটাই সৃজনশীলতায় মন মাতাইএই গল্পে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রত্না খাতুন সহকারী শিক্ষক ধাদাশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুঠিয়া, রাজশাহী।

কাজটা কেন হাতে নিলাম-

প্রাক-প্রাথমিক শিশুদের সৃজনশীলতা বিকাশের জন্য পাঠ্যবইতে বিভিন্ন ধরনের এক্টিভিটিস দেওয়া আছে। প্রথমে আমি ক্লাসগুলো গতানুগতিক ভাবেই নিতাম। কিন্তু ভেবে দেখলাম শিক্ষার্থীদের এই কাজগুলো যদি একটু ভিন্নভাবে করা যায় তবে তারা যেমন আনন্দ পাবে তেমনি বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে

 কিভাবে কাজটা করেছি

এখানে আমি শিশুদের পাঠ্য বইয়ের সাথে সম্পর্ক রেখে একটু ভিন্নভাবে কাজটি করার চেষ্টা করেছি। প্রথমে আমি প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের চারটি দলে ভাগ করেছি i) গোলাপ দল করবে কাদামাটির কাজ ii) জবা দল কাগজ দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি iii) শিমুল দল পাতার কাজ,  iv) শাপলা দল কাপড়ের কাজ। প্রতিটা দলের জন্য তৃতীয় চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১জন করে মেন্টরের দায়িত্ব দিয়েছি এই কাজগুলো আমরা বেশিরভাগ সময় করেছি তাদের সৃজনশীল কাজের সময় ফ্রি টাইমে এমনকি স্কুল বন্ধের দিনেও এই কাজগুলো করেছি কাজগুলোর মাঝে তারা এনেছে নানান বৈচিত্র্যপূর্ণ শিক্ষার্থীরা কাদামাটি নিয়ে খেলতে বরাবরই পছন্দ করে কাদামাটি দিয়ে বাড়ি, নৌকা, হাড়ি পাতিল, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, রেডিও, পুতুল, পাখি, বিভিন্ন রকমের ফল, পশু পাখি, ইংলিশ ক্যাপিটাল লেটার, ইত্যাদি তৈরি করতে শিশুদের সহায়তা করেছি নিজেদের হাতে তৈরি এই উপকরণগুলো নিয়ে তারা আজ মহা খুশি  শিক্ষার্থীরা কল্পনা কৌতুহল প্রবণ তাদের শেখার জানার আগ্রহটা একটু বেশিই থাকে তাদেরকে শুধুমাত্র কাগজ আঠা দিয়ে তৈরি করতে সহযোগিতা করেছি নিত্য নতুন জিনিসপত্র যেমন জাতীয় পতাকা, পাখি, নৌকা, রকেট, এরোপ্লেন, খেলনা, বিভিন্ন রকমের ফুল, ঝুড়ি, বাড়ি, পাখা, ব্যাগ, ইত্যাদি কাগজের ওপরেও এঁকেছে বিভিন্ন রকমের ছবি এছাড়াও কাগজ দিয়ে তৈরি করেছি খেলা গল্পের বিভিন্ন উপকরণ যা খেলার জন্য গল্প শোনার জন্য শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে বসে থাকত নিজেদের হাতে তৈরি এই উপকরণগুলো নিয়ে আজ তারা খুব আনন্দিত  গাছের পাতা দিয়ে বিভিন্ন আকৃতি, চশমা, ঘড়ি, আংটি, ব্যাস লাইট, ব্যাগ, ইত্যাদি তৈরি করতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছি  টুকরো টুকরো কাপড় দিয়ে পুতুল, জামা কাপড়,ব্যাগ ইত্যাদি বানাতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছি এই কাজগুলো হাতে কলমে করতে পেরে তারা খুব মজা আনন্দ পেয়েছে  চারটি দলের সমস্ত কাজ শেষে একটু একটু করে জমানো উপকরণগুলো আয়োজন করেছি হাতের কাজের এক্সিবিশন এই এক্সিবিশন শিশুদেরকে এনে দিয়েছে সীমাহীন আনন্দ উল্লাস অভিভাবকরাও আজ অনেক খুশি সন্তানদের নিজের হাতের কাজগুলো দেখে আমাদের এই এক্সিবিশন আরো বেশি পরিপূর্ণতা লাভ করেছে যখন দেখি হঠাৎ করে সময় টিভি রিপোর্টার শাহিন আলম আমাদের মাঝে এসে উপস্থিত সাংবাদিক শাহিন আলমকে পেয়ে শিক্ষার্থীরাও অনেক মজা পেয়েছে

আমার এই উদ্ভাবনী আইডিয়া বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষার্থীরাও হয়ে উঠেছে আত্মবিশ্বাসী, সৃজনশীল, নান্দনিক। তাদের বুদ্ধিবৃত্তীয়, ব্যবহারিক দক্ষতা বেড়েছে, তারা বিদ্যালয় মূখি হয়েছে। শতভাগ শিখন ফল অর্জন করেছে এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে

 ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

একজন মানুষ যত সৃজনশীল, সে তত সফল, আত্মবিশ্বাসী এবং বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী তাই শিশুকে তার সম্ভাবনার সর্বোচ্চ বিকাশে সহায়তা করতে, তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে তাকে নানা ধরনের সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিতে আমার এই প্রচেষ্টা এতক্ষন আমার উদ্ভাবনী গল্পের সাথে থেকে আমাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য সকলের প্রতি রইল আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ। 

আরো দেখুন