সিনিয়র শিক্ষক
১৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ০৬:৩১ অপরাহ্ণ
"গঠনকালীন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন"
গঠনকালীন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন-
সারা বছর ধরে শিখন কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের শিখন অগ্রগতি এবং আচরণের বিভিন্ন দিকের বিকাশ সম্পর্কে অবহিত হওয়ার জন্য ধারাবাহিক যে মূল্য যাচাই তাই গঠনকালীন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন।
এক কথায় পাঠ চলাকালীন বা নিদিষ্ট পাঠ্যাংশ থেকে শিক্ষার্থীর অর্জন ও অগ্রগামিতা হল গঠনকালীন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন।
শ্রেণীকক্ষে পর্যবেক্ষণ, মৌখিক অভীক্ষা, শ্রেণির কাজ, বাড়ির কাজ, কুইজ, চেক লিস্ট গঠনকালীন মূল্য যাচাই।
গঠনকালীন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন কেন প্রয়োজন?
১।
শিক্ষার্থীর দুর্বলতা চিহ্নিত করা যায়।
২। পদ্ধতির কার্যকারিতা নির্ণয় করা যায়।
৩। শিক্ষা উপকরনের কার্যকারিতা নির্ণয় করা যায়।
৪। শিক্ষার্থীর অর্জন ও অগ্রগামিতা অবগত হওয়া যায়।
৫। প্রেষণা সৃষ্টি।
৬। পরিস্কার ধারণা গঠন।
৭। শিক্ষার্থী মত বিনিময় করার সুযোগ পায়।
৮। দলগত শিক্ষণ শিখন সম্পন্ন হয়।
৯। শিক্ষার্থীর আত্ম সক্রিয়তা ও আত্ম প্রত্যয় বৃদ্ধি পায়।
১০। নিয়মিত উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়।
১১। ঝরে পড়ার প্রবনতা হ্রাস পায়।
১২। শিক্ষার্থীর জ্ঞান, আচরণ ও মনোপেশীজ দক্ষতার মূল্যায়ন হয়।
গঠনকালীন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন কৌশল-
শিক্ষাক্রমে ধারাবাহিক মূল্যায়নের জন্য ২০% নম্বর আছে। বিষয় শিক্ষক বুদ্ধিবৃত্তীয়,ও মনোপেশীজ এবং আবেগীয় ক্ষেত্রের ধারাবাহিক মূল্যায়ন করবেন। এজন্য ১০০ নম্বরের বিষয়ে শ্রেণির কাজে ৫ নম্বর, বাড়ির ও অনুসন্ধান মূলক কাজে ৫ নম্বর, এবং শ্রেণি অভীক্ষায় ১০ নম্বর বরাদ্দ আছে। চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষার ৮০% নম্বরের সাথে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ২০% নম্বর যুক্ত করে মোট ১০০ এর মধ্যে প্রাপ্ত নম্বর গণনা করা হবে।
শ্রেণির কাজ- শ্রেণি কক্ষে শিক্ষাক্রম ভিত্তিক আলোচনায় অংশ গ্রহন, ব্যবহারিক কাজ এবং দল ভিত্তিক কাজ। শ্রেণির কাজ একক ও দলগত দু ভাবেই করা হয়। বিষয় শিক্ষক নিয়মিত ভাবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে শ্রেণির কাজের জন্য মূল্যায়ন করবেন। প্রতি সাময়িকে অর্থাৎ ৬ মাসে ৩ বার মূল্যায়ন রেকর্ড করতে হবে।
বাড়ির কাজ- প্রতি বিষয়ে প্রতি সাময়িকে দুটি বাড়ির কাজের মূল্যায়ন রেকর্ড করতে হবে। শিখনফলের চাহিদার উপর ভিত্তি করে শিক্ষক বাড়ির কাজ দিবেন। শিক্ষক নিশ্চিত হবেন এমন বাড়ির কাজ দিবেন যাতে শিক্ষার্থী নিজেই করে, চিন্তন দক্ষতা, সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ থাকে, ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন করা যায়। মূলত বাড়ির কাজ হবে শিক্ষাক্রম ভিত্তিক বাড়িতে শিক্ষক নির্দেশিত কোন কিছু লেখা।
অনুসন্ধানমূলক কাজ- বাড়ির ও অনুসন্ধান মূলক কাজে ৫ নম্বর থেকে এ কাজে নম্বর ভাগ করে নিতে হবে। প্রতি সাময়িকে একটি অনুসন্ধান মূলক কাজের রেকর্ড করতে হবে।এতে কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন লাগতে পারে। শিক্ষক কাজের বিষয়টি নিদিষ্ট করে দিবেন।
অনুসন্ধান মূলক কাজ পাঠ সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়, সমস্যা, ঘটনার কারণ ও ফলাফল বের করা। এতে শিক্ষার্থীর অস্পষ্ট ধারণা স্পষ্ট হয়। ধাপগুলো হচ্ছে সমস্যা নির্বাচন, তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ, অনুমিত সিদ্ধান্ত গ্রহন, পরিকল্পনা প্রণয়ন, তথ্য সংগ্রহ,তথ্য বিশ্লেষণ ও অনুমিত সিদ্ধান্ত গ্রহন,সিদ্ধান্ত গ্রহন ও সুপারিশ প্রণয়ন, প্রতিবেদন প্রস্তুত।
শ্রেণি অভীক্ষা- প্রতিটি অধ্যায় পাঠের শেষে শ্রেণি অভীক্ষা নিতে হবে। এটি লিখিত বা ব্যবহারিক দুইই হতে পারে। প্রতি সাময়িকে ৩টি শ্রেণি অভীক্ষার রেকর্ড করতে হবে। বিজ্ঞানে হাতে কলমে ১টি ও ২টি লিখিত পরীক্ষার রেকর্ড করতে হবে।
আবেগীয় ক্ষেত্রের মূল্যায়ন- শিক্ষক প্রতি সাময়িকে ১ বার শিক্ষার্থীর আবেগীয় ক্ষেত্রের মূল্যায়ন করবেন।
আবেগীয় ক্ষেত্রের মূল্যায়ন-নিয়মানুবর্তিতা, দেশপ্রেম, সততা, সহিষ্ণুতা ইত্যাদি।