Loading..

শিক্ষায় অগ্রযাত্রা

২১ মার্চ, ২০২০ ০৭:০৫ পূর্বাহ্ণ

বর্তমানে অনেক বেশি সংখ্যক মেয়ে শিশু স্কুলে যাচ্ছে

আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেশি সংখ্যক মেয়ে শিশু স্কুলে যাচ্ছে এবং স্কুলে পড়াশোনা অব্যাহত রাখছে। তবে শিক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অর্জন থাকলেও তা মেয়েদের জন্য আরও সমতাভিত্তিক ও কম সহিংস পরিবেশ তৈরিতে সহায়তার ক্ষেত্রে সামান্যই ভূমিকা রেখেছে।

নারীর অবস্থা বিষয়ক কমিশনের ৬৪তম অধিবেশনের আগে প্রকাশিত মেয়েদের জন্য একটি নতুন যুগ: ২৫ বছরের অগ্রগতির খতিয়ানশীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত দুই দশকে বিশ্বব্যাপী স্কুলের বাইরে থাকা মেয়েদের সংখ্যা কমে ৭ কোটি ৯০ লাখে নেমে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই বেশি আগ্রহী ছিল শুধু গত দশকেই।

তা সত্ত্বেও নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এখনও নিয়মিত ঘটনা। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী পাচারের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের শনাক্ত করা গেছে তাদের ৭০ শতাংশই ছিল নারী এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যৌন শোষণের কারণে তারা পাচারের শিকার হয়। বিশ্বব্যাপী ১৫-১৯ বছর বয়সী প্রতি ২০ জন মেয়ের মধ্যে একজন বা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মেয়ে তাদের জীবনে ধর্ষণের শিকার হয়েছে, যা নারী ও মেয়ে শিশুরা যত ধরনের যৌন নির্যাতনের শিকার হয় তার মধ্যে সবচেয়ে সহিংস রূপগুলোর একটি।

শিক্ষা, পুষ্টি, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর ক্ষেত্রে অগ্রগতি সত্ত্বেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও এই নেতিবাচক প্রবণতা প্রত্যক্ষ করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে ১৪-২৪ বছর বয়সী প্রায় ৮৮.৭ শতাংশ মহিলা এখন সাক্ষর। তারপরও মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস) ২০১৯ অনুসারে, বিগত এক মাসে লালনপালনকারীদের দ্বারা যেকোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক শাস্তি বা আগ্রাসনের মুখোমুখি হওয়া ১-১৪ বছর বয়সী শিশুর হার ছিল ৮৮.৮ শতাংশ।

এমআইসিএস ২০১৯-এ আরও উঠে এসেছে যে, ১৫-১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের ৩৭ শতাংশ সন্ধ্যার পর একা চলাফেরার ক্ষেত্রে নিরাপদ বোধ করে না। ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের অর্ধেকের বেশির বিয়ে হয় তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগেই। প্রায় ২৪ শতাংশ নারী অপরিণত বয়সে সন্তানের জন্ম দিচ্ছে।

এদিকে, বাংলাদেশে ১৫-৪৯ বছর বয়সী প্রতি চারজন নারীর একজন (২৫.৪ শতাংশ) নিম্নোক্ত পরিস্থিতিগুলোর যেকোনো একটি তৈরি হলে স্বামীর দ্বারা স্ত্রীকে প্রহার করা ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করেন: (১) স্বামীকে  কিছু না জানিয়ে ঘরের বাইরে গেলে, (২) সন্তানদের প্রতি অবহেলা করলে, (৩) স্বামীর সাথে তর্ক করলে, (৪) স্বামীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অস্বীকৃতি জানালে এবং (৫) খাবার পুড়িয়ে ফেললে।

জরীপের এসব নতুন ফলাফল সত্ত্বেও সহিংসতা বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গিকারকে ইউনিসেফ স্বাগত জানায়। চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ নম্বর, যেখানে শিশুরা সরাসরি সহিংসতার ঘটনা জানাতে ও এর থেকে প্রতিকারের জন্য সাহায্য চাইতে পারে, সরকার ও ইউনিসেফের যৌথ প্রচেষ্টার একটা সফল উদাহরন।  

আরো দেখুন