Loading..

খবর-দার

০৮ এপ্রিল, ২০২০ ০৪:৫২ অপরাহ্ণ

উহানে উঠে গেল লকডাইন, ফিরে এল মুক্তজীবন।

উহানে উঠে গেল লকডাইন, ফিরে এল মুক্তজীবন।

দুই মাসের বেশি সময় ধরে ঘরে বন্দিদশায় ছিল চীনের উহানের মানুষ। অবশেষে আজ বুধবার তাদের বন্দী অবস্থার অবসান হলো। মুক্ত জীবনের স্বাদ পেল তারা। কর্তৃপক্ষ আজ আনুষ্ঠানিকভাবে লকডাউন তুলে নিয়েছে। আবার আগের মতো ঘরের বাইরে বের হতে পারছে তারা। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আনন্দ তাদের চোখে-মুখে। খবর এএফপির।

গত বছরের ডিসেম্বরে এই উহান থেকেই প্রথম করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই এই ভাইরাসের ভয়াবহ রূপ দেখছে। এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৮২ হাজারের বেশি মানুষ। আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে ১৩ লাখেরও বেশি। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক দেশের মানুষ লকডাউনের কারণে গৃহবন্দী। অবর্ণনীয় মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে মানুষকে। বর্তমান নিয়ে ভয়, ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ—এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে গোটা বিশ্ব। ইউরোপের দেশ স্পেন-ইতালিতে মরণকামড় দিয়ে করোনাভাইরাস এখন যুক্তরাষ্ট্রকে তছনছ করে দিচ্ছে। এত কিছুর পরও উহানবাসীর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আয়োজন মানুষের মনে আশার সঞ্চার করছে। এই বার্তা দিচ্ছে, ভাইরাস চিরস্থায়ী নয়। মানুষ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে।

উহানের জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ। গত ২৩ জানুয়ারি এ শহর লকডাউন করা হয়। চীনের সরকারি সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ শহরের ৫০ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এখানে মারা যায় আড়াই হাজারের বেশি মানুষ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মরে যাওয়া মানুষের ৮০ শতাংশই এ শহরের।

উহানের লকডাউন উঠে যাওয়ায় চীনের জন্য খুশির খবর। তবে এ খবরটির পাশে আরেকটি শঙ্কার খবরও আছে। তা হলো, দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ায় উত্তরের একটি শহরে নতুন করে লকডাউন করা হয়েছে।

অন্তত ৫৫ হাজার মানুষ শুধু আজই ট্রেনে উহান ছাড়বে বলে কর্তৃপক্ষের ধারণা। এর আগে বিমান চলাচল চালু করার পর অন্তত ১০ হাজার মানুষ এ শহর ছেড়েছে ইতিমধ্যে।

লকডাউনের কারণে আটকা পড়েছিলেন হাও মি নামের এক মা। তিনি ছিলেন উহানে আর তাঁর সন্তানেরা ছিল এনশিতে। এভাবেই কেটেছে তাদের গত দুটি মাস। আজ লকডাউন উঠে যাওয়ার কারণে তিনি সন্তানদের কাছে ফিরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আপনি ভাবতেও পারবেন না! সেই ভোর চারটা থেকে উঠে বসে আছি। এত ভালো লাগছে! আমার বাচ্চারা ভীষণ খুশি। অবশেষে মা বাড়ি ফিরছেন। মায়ের সঙ্গে দেখা হবে তাদের।’

হুনানে নিজের বাড়িতে ফেরার জন্য ট্রেনের অপেক্ষায় স্টেশনে বসেছিলেন এক যাত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি ৭৭ দিন ধরে উহানে আটকে ছিলাম। ৭৭ দিন!’

তবে মুক্তির আনন্দে মানুষ যেন আবার আগের মতো গায়ে গা লাগিয়ে চলাচল না করে, সে ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। যেখানে ভিড়, সেখানে রোবট মানুষকে মাস্ক পরতে, দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে বলছে।
আর উহান ছেড়ে যারা রাজধানী বেইজিংয়ে যাচ্ছে, তাদের কিন্তু দুই দফা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

উহানের লকডাউন উঠে গেলও চীনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ হেইলংজিয়াংয়ে নতুন করে করোনায়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। এ প্রদেশের সুইফেনহি শহরে তাই চলাফেরায় নিষধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষ বাইরে থেকে আসা।