সিনিয়র শিক্ষক
০৭ মে, ২০২০ ০৫:০৮ অপরাহ্ণ
মসজিদকুড়-মসজিদ, মোঃ আসাফুর রহমান (সহকারী শিক্ষক) আমাদী জায়গীরমহল তকিমউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়, কয়রা, খুলনা।
ধরন: সাধারণ শিক্ষা
শ্রেণি: দশম
বিষয়: বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা
মসজিদকুড়
মসজিদ
স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী খানজাহান (রঃ) এর সহচর বুড়া খাঁ ও তাঁর পুত্র ফতেখাঁ কে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার মসজিদকুড় গ্রামে অবস্থিত মসজিদের নির্মাতা বলে ধরা হয়। খানজাহান (রঃ) ঝিনাইদহের বারবাজার থেকে সদলবলে যশোরের মুড়লী পর্যন্ত পৌছে একদল সঙ্গী নিয়ে বাগেরহাটের দিকে যান এবং তাঁর বিশ্বস্ত সহচর বুড়াখাঁর নেতৃত্বে আর একটি দলকে মসজিদকুড়, বেদকাশী অঞ্চলের দিকে প্রেরণ করেন। খানজাহান (রঃ) এর নির্দেশ ও দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে পথের স্থানে স্থানে জলাশয় খনন, রাস্তা ও মসজিদ নির্মাণ করেন।
দক্ষিণ দিকে মস্জিদের প্রায় লাগোয়া কপোতাক্ষ নদী। পশ্চিম দিকে বর্তমানে যে খাল দেখা যায়, অধ্যাপক সতীশ চন্দ্র মিত্র এর মতে সেটি একটি পরিখা ছিল। অন্য দুই দিকেও পরিখা ছিল। একটি মসজিদের চারদিকে এমন শক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেন ছিল, তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। এই মসজিদে কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি। ছিল বলেও জানা যায় না। বাগের হাটের ষাটগম্বুজ ও নয়গম্বুজ মসজিদের সঙ্গে মসজিদকুড় মসজিদের গঠ প্রণালী ও স্থাপত্য কৌশলের সাদৃশ্য থাকার কারণে এটি খানজাহান (রঃ) কর্তৃক নির্মিত বা সমসাময়িক বলে ধারণা করা হয়।
মসজিদের চার কোণে ৪টি ঘোলাকার টারেট আছে। বিরাট আকারের মিনারগুলি ছাদের কার্ণিশের উপরে উঠেনি। এগুলিকে ৪টি গোলাকার ও উদ্গত ব্যান্ড বা স্ফীত রেখা দ্বারা অলংঙ্কৃত করা হইয়াছে। মসজিদের বাইরের দেয়াল দক্ষিণ, পূর্ব ও উত্তর দিকে পোড়ামাটির চিত্রফলক দ্বারা অলংকৃত ছিল। খিলান ও কার্ণিশের উপরেও অনুরূপ অলংকরণের কাজ ছিল। এগুলির মধ্যে ছিল পদ্মফুল, মালা, বিলম্বিত রজ্জু ও ঘন্টা ইত্যাদির প্রতিকৃতি। মসজিদের অভ্যন্তরে আছে ৪টি প্রস্তর স্তম্ভ। ইটের তৈরি ভিত্তিবেদীর উপরে প্রতিষ্ঠিত প্রত্যেক স্তম্ভ ২টি তরে পাথরের মাধ্যে নির্মিত। উচ্চতার সমতা রক্ষার জন্য নিচে ইটের তৈরি ভিত্তবেদী কমবেশি উঁচু করে নির্মিত। এই ৪টি প্রস্তর স্তম্ভ ও চারিদিকের দেয়ালের উপর খিলানের সাহায্যে নির্মিত হয়েছে মসজিদের ৯টি গম্বুজ। ভিতরের খিলান ও গম্বুজগুলির নির্মাণ-কৌশল খুবই উঁচু মানের। কেন্দ্রীয় গম্বুজটি অন্যাগুলির চেয়ে আকারে কিছুটা কড়। বর্তমানে মসজিদটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত একটি পুরার্কীতি।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার