Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

০৬ জুন, ২০২০ ০৫:০৩ অপরাহ্ণ

সউদীতে ১১ হাজারের বেশি বাংলাদেশী করোনা আক্রান্ত

সউদী আরবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়ছে। দেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর প্রায় অর্ধেক সংখ্যক বাংলাদেশি উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। তবে সউদী আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস মনে করছে অন্য দেশের অভিবাসীদের তুলনায় সেখানে বাংলাদেশিদের আক্রান্ত হওয়ার হার কিছুটা বেশি হলেও তা অস্বাভাবিক বা আশঙ্কাজনক নয়। খবর বিবিসি বাংলা’র।
ওয়ার্ল্ডওমিটারসের তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার পর্যন্ত সউদী আরবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯৩ হাজার ১৫৭ জন। আর দেশটির সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২৫ মে পর্যন্ত সেখানে করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশির সংখ্যা ১০ হাজার ৯০৫ জন বলে জানান সউদী আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। তিনি জানান, ওই সময় পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৮৭ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন।
বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের হিসেবে নিশ্চিতভাবে করোনাভাইরাস আক্রান্ত এই ৮৭ জনের পাশাপাশি গত তিন মাসে কোভিড-১৯ এর উপসর্গ নিয়ে সউদী আরবে মারা গেছে মোট ২২৪ জন বাংলাদেশি। ওই কর্মকর্তা জানান, মারা যাওয়া ২২৪ জনের মধ্যে ৮৭ জন নিশ্চিতভাবে কোভিড-১৯ রোগী ছিলেন। বাকিদের মৃত্যু সনদে কারণ হিসেবে ‘কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু উল্লেখ ছিল। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সউদী আরবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৭৯ জন। রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, সউদী আরবে প্রায় ২২ লাখ বাংলাদেশি রয়েছেন। সেই অনুপাতে যদি চিন্তা করেন তাহলে যেই পরিমাণ বাংলাদেশি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হচ্ছেন, সেই হার খুব একটা আশঙ্কাজনক নয়। তা সত্ত্বেও তুলনামূলকভাবে অন্যান্য দেশের অভিবাসী শ্রমিকদের চেয়ে বাংলাদেশিদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি বলে মন্তব্য করেন গোলাম মসীহ। তিনি বলেন, এখানকার বাংলাদেশিদের অধিকাংশের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা বা সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। বেশি সংখ্যক বালাদেশির আক্রান্ত হওয়ার একটি কারণ সেটি হতে পারে।
স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতার বিষয়টি বেশি বলে মনে করেন সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকরা। তাদের বক্তব্য, জীবন ও জীবিকার তাড়নায় তারা অসচেতন জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। বাংলাদেশিদের অধিকাংশই কম দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বদ্ধ জায়গায় একসঙ্গে গাদাগাদি করে বসবাস করেন। কোথাও এক রুমে ৮-১০ জন, কোথাও কোথাও তার চেয়েও বেশি থাকতে হয়। চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রেও এদের অনেকেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মুখে পড়েন। অনেকেই করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাতে পারছেন না। অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গাড়ি না থাকায় শ্বাসকষ্টের রোগী হাসপাতালে যেতে পারছেন না এবং বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন।
বাংলাদেশিদের মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার আরেকটা কারণ এদের মধ্যে অপুষ্টির হার বেশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। এখানে বাংলাদেশিরা যা আয় করে তার প্রায় পুরোটাই দেশে পাঠিয়ে দেয়। তাদের স্বাস্থ্যজ্ঞানও শূন্যের কোঠায়।
এদিকে লকডাউনের কারণে গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় এ সময় সউদী আরবে মারা যাওয়া বাংলাদেশিদের লাশ দেশে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। তিনি বলেন, মৃতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে আমরা তাদের লাশ এখানেই দাফন করছি।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি