Loading..

ম্যাগাজিন

১১ জুলাই, ২০২০ ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

আমরা কবে সচেতন হবো?

জনাব কদম আলী তার নব বিবাহিতা স্ত্রী ফুলজান কে নিয়ে শ্বশুর বাড়ী থেকে নিজ বাড়ির দিকে যাত্রা করলেন। পথিমধ্যে এক প্রশস্ত খাল। জৈষ্ঠ্যমাস। কোমর সমান পানি হবে। ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করে পাড় হওয়ার কোন ব্যবস্থা করতে পারলেন না। পুল- সাঁকো - নৌকা কিছুই নাই। কদম আলী জাতে বাঙ্গালী, বুদ্ধির তো আর অভাব নাই। ঠিক করলেন স্ত্রীকে কোলে করেই খাল পার হবেন। নিজ বাড়িতে ই তো যাচ্ছেন তাই নিজের কাপড় ভিজলে সমস্যা নাই। অন্ততঃ স্ত্রীকে তো নিরাপদে পার করা যাবে।

বিশাল দেহী স্বামীর কোলে উঠে খাল পার হতে ফুলজানের কোন আপত্তি নাই কিন্তু তার কথা একটাই- পায়ে আলপনা করা সখের আলতায় যেন পানি না লাগে। সে বুদ্ধি ও বের করে ফেললেন কদম আলী। পা দুটো উপরের দিকে মাথা নীচের দিকে রেখে কোলে নিলেই তো ফুলজানের আলতা আর ভিজবে না। নদীও পার হওয়া যাবে এবং আলতাও ঠিক থাকবে। যেই ভাবা সেই কাজ। নামলেন নদীতে। কোমরজলে নামা মাত্রই বেচারির মাথা গেল পানিতে ডুবে। শ্বাসকষ্টে পা আছড়াতে লাগলো। কদমআলী ভাবলেন আলতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার টেনশনে ফুলজান তার পা দুটো নাচাচ্ছে। কদম আলী জোরে সুরে বলতে লাগলেন -"তোমার আলতা ঠিক আছে, চিন্তা করিওনা"।

খাল পার হয়ে উপরে উঠলেন জনাব কদম আলী। দেখলেন, তার স্ত্রীর সখের আলতা অক্ষত থাকলেও ফুলজান আর বেঁচে নেই। আদরের স্ত্রীকে হারিয়ে মনে আঘাত পেলেন কিন্তু স্বান্তনার বিষয় হলো - আলতা তো ঠিকই আছে!

এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। করোনার ভয়াবহতা যতই বাড়তে থাকুক, আমরা বাঙ্গালী, শপিং আমাদের করতেই হবে। মরে যাই তাতে কি, শপিংটাতো ঠিক ঠাক থাকলো।

পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়ালে শপিংয়ের কথা বাদ দিয়ে জীবনের কথা ভাবে। আর আমাদের এখানে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে আমরা জীবনের কথা বাদ দিয়ে শপিংয়ে যাওয়ার কথা ভাবি।

বেঁচে থাকুক ফুলজানের সখের আলতা, বেঁচে থাকুক বাঙ্গালির শপিং

“ঈদের আগে সচেতনতা ও এক প্রকার অভিমান থেকে গল্পটি লেখা”

 

ধন্যবাদ ...সবাইকে ।

মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান

সিনিয়র শিক্ষক (গণিত)

আহমেদ বাওয়ানী একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি