Loading..

শিক্ষায় অগ্রযাত্রা

১২ জুলাই, ২০২০ ০৬:১৮ অপরাহ্ণ

গার্ল গাইডিং নেতৃত্বঃ আমার কলেজে রেঞ্জার ইউনিট

আমি কলেজে যোগদান করি ২০১২ সালের ০৪ ফেব্রুয়ারি। যোগদানের পর থেকে লক্ষ করছিলাম- কলেজের ছাত্রছাত্রীরা কেউই সহপাঠ কার্যক্রমের সাথে জড়িত নয়। তারা কলেজে আসে,  ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কেউ কেউ আড্ডা দেয়। অনেকেই বাজে নেশার হাতছানিতে লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে তারা। মেয়েরা প্রায়ই ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছে। কেউ কোন গঠনমূলক কাজ করেনা। অথচ আর অল্প কিছুদিন পরেই এদের উপর ন্যস্ত হবে আগামি বাংলাদেশের দায়িত্ব। বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে থাকি। এক পর্যায়ে নিজে উদ্যোগী হয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে কথা বলি। ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কিছু সৃজনশীল কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করি।

ইতোমধ্যে কলেজে সরকারি পরিপত্র আসে-  সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কাউট ও গার্ল গাইডিং কার্যক্রমকে আবশ্যিকভাবে বেগবান করার নির্দেশনা নিয়ে। আমার স্বপ্ন পুরনের পথ যেন আপনা-আপনি খুলে যায়। আমি গার্ল গাইডিং এ দীক্ষাপ্রাপ্ত। কাজেই কলেজ পর্যায়ে গার্ল গাইডিং (যাকে রেঞ্জার বলা হয়) কার্যক্রম শুরু করার ইচ্ছার কথা প্রিন্সিপাল স্যারকে জানাই। স্যার অত্যন্ত খুশি হয়ে সানন্দে আমাকে রেঞ্জার গাইডার প্রশিক্ষণে পাঠাবার ব্যবস্থা করেন।

২০১৬ সালের ১৩-১৬ নভেম্বর প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে কলেজে প্রথম ১৫ জন ছাত্রী একটি রেঞ্জার ইউনিট খুলি। বাংলাদের গার্ল গাইডস এসোসিয়েশন থেকে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে আমরা ডিসেম্বর ২০১৬ থেকেই কার্যক্রম শুরু করি।

আমি যেহেতু নারী শিক্ষক, তাই ছাত্রীদের নিয়ে আলাদাভাবে এই ইউনিট পরিচালনা করে আসছি। যদিও কলেজটি কো-এডুকেশন কলেজ। ছাত্রদের নিয়ে আমি সাহিত্য ও সংস্কৃতিনামের আরেকটি ফোরামে সম্পৃক্ত।  

 

 

সপ্তাহে একদিন সকল ক্লাস শেষে আমরা রেঞ্জার ক্লাস করি। সেখানে মেয়েদের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করি। মেয়েদেরকে চারপাশের পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করি, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ও যৌন হয়রানি সম্পর্কে সচেতন করি। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসে কর্মসূচি পালন করি, বিভিন্ন ক্যাম্পে ও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করি। বই পড়া কার্যক্রম ও দেয়াল পত্রিকা প্রকাশনার কাজ করি। নৈতিক চরিত্র গঠন ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করি।

২০১৮ সালে ২৬ মার্চ  পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত কুচকাওয়াজে আমার রেঞ্জার ইউনিট দ্বিতীয় স্থান লাভ করার গৌরব অর্জন করে। ২০১৯ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে আমি উপজেলা (পূর্বধলা), জেলা (নেত্রকোনা) ও বিভাগীয় (ময়মনসিংহ) পর্যায়ে ‘শ্রেষ্ঠ রেঞ্জার শিক্ষক’ হবার গৌরব অর্জন করি।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি