Loading..

প্রেজেন্টেশন

২৩ জুলাই, ২০২০ ১০:২৯ অপরাহ্ণ

রাদারফোর্ড এর পরমানুর মডেল ও আলফা কণা বিচ্ছুরন

রাদারফোর্ড আলফা কণা বিচ্ছুরণ পরীক্ষার সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে পরমাণুর গঠন সম্পর্কে একটি মডেল প্রদান করেন, যা সৌর মডেল হিসাবে পরিচিত। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ
# পরমাণুর কেন্দ্রস্থলে একটি ধনাত্মক চার্জবিশিষ্ট ভারী বস্তু বিদ্যমান। এই ভারী বস্তুকে পরমাণুর কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াস বলা হয়। পরমাণুর মোট আয়তনের তুলনায় নিউক্লিয়াসের আয়তন অতি নগণ্য। নিউক্লিয়াসে পরমাণুর সব ধনাত্মক চার্জ ও প্রায় সব ভর কেন্দ্রীভূত।
# পরমাণু বিদ্যুত্ নিরপেক্ষ। অতএব নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক চার্জযুক্ত প্রোটন সংখ্যার সমানসংখ্যক ঋণাত্মক চার্জযুক্ত ইলেকট্রন পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে পরিবেষ্টিত করে রাখে।
# সৌর জগতের সূর্যের চারদিকে ঘূর্ণায়মান গ্রহসমূহের মতো পরমাণুর ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসের চারদিকে অবিরাম ঘুরছে। ধনাত্মক চার্জবিশিষ্ট নিউক্লিয়াস ও ঋণাত্মক চার্জবিশিষ্ট ইলেকট্রনসমূহের পারস্পরিক স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণজনিত কেন্দ্রমুখী বল এবং ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রনের কেন্দ্র বহির্মুখী বল পরস্পর সমান। দেখা যাচ্ছে পরমাণুতে নিউক্লিয়াসের অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যায় শতভাগ সফল হলেও কয়েকটি বিষয়ে এই মতবাদটি ব্যর্থ; যেমন-
# সৌরমণ্ডলের গ্রহসমূহ সামগ্রিকভাবে চার্জবিহীন অথচ ইলেকট্রনসমূহ ঋণাত্মক চার্জযুক্ত।
# ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বানুসারে কোনো চার্জযুক্ত বস্তু বা কণা কোনো বৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকলে তা ক্রমাগত শক্তি বিকিরণ করবে এবং তার আবর্তন চক্রও ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। সুতরাং ইলেকট্রনসমূহ ক্রমেই শক্তি হারাতে হারাতে নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করবে। অর্থাত্ রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল অনুসারে পরমাণু সম্পূর্ণভাবে একটি অস্থায়ী অবস্থা প্রাপ্ত হবে। অথচ পরমাণু থেকে ক্রমাগত শক্তি বিকিরণ বা ইলেকট্রনের নিউক্লিয়াসে প্রবেশ কখনোই ঘটে না।
# পরমাণুর বর্ণালি গঠনের কোনো সুষ্ঠু ব্যাখ্যা এ মডেল দিতে পারে না।
# আবর্তনশীল ইলেকট্রনের কক্ষপথের আকার ও আকৃতি সম্বন্ধে কোনো ধারণা রাদারফোর্ডের মডেলে দেওয়া হয়নি।
# একাধিক ইলেকট্রনবিশিষ্ট পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসকে কীভাবে পরিক্রমণ করে, তার কোনো উল্লেখ এ মডেলে নেই।
এসব সমস্যা সমাধানে বিজ্ঞানী পরমাণুর গঠন এবং একই সঙ্গে পারমাণবিক বর্ণালি ব্যাখ্যার জন্য নিলস বোর তাঁর বিখ্যাত পরমাণু মডেল প্রকাশ করেন। এ মডেলের স্বীকার্যসমূহ হলো:
# পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে বৃত্তাকার পথে ইলেকট্রনসমূহ ঘুরতে থাকে। নিউক্লিয়াসের চারদিকে বৃত্তাকার কতগুলো স্থির কক্ষপথ আছে, যাতে অবস্থান নিয়ে ইলেকট্রনসমূহ ঘুরতে থাকে। এগুলোকে শক্তিস্তর বা অরবিট বলা হয়। এই নির্দিষ্ট শক্তিস্তরে অবস্থানকালে ইলেকট্রনসমূহ শক্তি শোষণ অথবা বিকিরণ করে না।
# যখন কোনো ইলেকট্রন একটি নিম্নতর কক্ষপথ থেকে উচ্চতর কক্ষপথে স্থানান্তরিত হয়, তখন নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি শোষণ করে। আবার যখন কোনো উচ্চতর শক্তিস্তর থেকে নিম্নতর কক্ষপথে স্থানান্তরিত হয়, তখন শক্তি বিকিরণ করে।