Loading..

প্রকাশনা

০১ আগস্ট, ২০২০ ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ

অন লাইন স্কুল ও বাংলাদেশ_অজয় কৃষ্ণ পাল

‘অন লাইন স্কুল’- এ স্কুলটি এখন সবার কাছে পরিচিত একটি স্কুল। করোনা মহামারী-র কারণে মূলত এ স্কুলগুলো তৈরী হয়েছে। করোনায় যখন সারা বিশ্ব আক্রান্ত, বাংলাদেশও এর বাহিরে নয়। ১৭মার্চ ২০২০ সালে বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীরা যাতে বাড়ীতে বসে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে সে কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরী শিক্ষা অধিদপ্তর ও এটুআই এর সমন্বয়ে সংসদীয় টেলিভিশন এর মাধ্যমে ক্লাসের জন্য ব্রডকাষ্টিং এর ব্যবস্থা করা হয়।

অনলাইন কার্যক্রম ভার্চ্যুয়াল জগতে নতুন না হলেও আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি নতুন। এর আগে গুটি কয়েক শিক্ষক ও কিছু ইউটিউবার ক্লাস আপলোড করত। আর এর ব্যবহার সীমিত। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের অন লাইন জগতে বেশ পরিবর্তণ সাধিত হয়। টিটিসি, পিটিআই, নেকটার, ব্যানবেইজ, নায়েম, বিয়াম ছাড়াও সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের আইসিটি ট্রেনিং এর সুফল এখন এই অন লাইন স্কুল। এডভান্স ট্রেনিং বা বিটিটি এর মত ট্রেনিং দেওয়া হয় তাতে অন লাইন স্কুল পরিচালনা করা বেশ কষ্টসাধ্য। মূলত আমাদের শিক্ষকরা যে কতটুকু এডভান্স তার প্রমাণ সারা বাংলাদেশে প্রতিটি জেলায় গড়ে উঠেছে ‘অন লাইন স্কুল’।শিক্ষক বাতায়ন, মুক্তপাঠ, কিশোর বাতায়ন এর মত জাতীয় পোর্টাল তৈরীর সুবিধাভোগ শুরু করেছে বাংলাদেশ। এজন্য এটুআই এর সংশ্লিষ্ট কর্মর্তাবৃন্দ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

বহুবিধ সীমাবদ্ধতা থাকার পরও বৈশিক মহামারীর এই দুঃসময়ে শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে তাদের লেখাপড়ার চর্চা অব্যাহত রাখার ব্রত নিয়ে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষকদের ব্যক্তিগত উদ্যোগেও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অন লাইন ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন। বহুবিধ সীমাবদ্ধতা থাকার পরও বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফেসবুক পেজ খুলে শিক্ষকরা লাইভ ক্লাস নিচ্ছেন। এ ক্লাসগুলো শিক্ষার্থীদের নিকট কীভাবে পৌঁছানো যায় সে কারণে জুম মিটিং করে বিভাগওয়ারী বিভিন্ন পেইজ ও গ্রুপে শেয়ারিং এর ব্যবস্থা করা হয়। প্রথম দিকে শিক্ষার্থীদের আগ্রহকম থাকলেও বর্তমানে এর অবস্থার অনেক উন্নত হয়েছে।

সত্যিকার অর্থে আমাদের যে এত এক্সপার্ট শিক্ষক রয়েছে অন লাইন স্কুল না খুললে বুঝা যেত না। প্রথমদিকে একটু এলোমেলোভাবে ক্লাসগুলো পরিচালিত হত। ক্লাসগুলোর ধারাবাহিকতা কম ছিল, শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারত না কোন ক্লাস দেখবে। পরবর্তীতে শিক্ষকের একটি জুম মিটিং করে সুন্দর করে ক্লাসগুলো সাজিয়ে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া এটুআই কর্তৃপক্ষ থেকে শ্রদ্ধেয় কবির স্যার, সূজন স্যার ও অভিজিৎ স্যার জুম মিটিং করে বিভাগ ও জেলাওয়ারী একটি সমন্বয় করে স্কুলগুলো সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। অচিরেই অনেক সমস্যা কেটে গিয়ে ক্লাসগুলো শিক্ষার্থীদের নিকট পৌঁছে যাবে।

আরেকটি বিষয়, অনেকেই ভাবেন অন লাইন ক্লাসে বুঝি পেডাগোজি ফলো করা হয় না। এ ধারণা ঠিক নয়। যারা এখানে ক্লাস নিচ্ছেন তারা বেশিরভাগই এটুআই কর্তৃক নির্বাচিত এম্বাসেডর, সেরা কনটেন্ট নির্মাতা, সেরা উদ্ভাবক, সেরা নেতৃত্ব ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ। তাঁরা যথাযথ নিয়ম মেনে ক্লাসগুলো তৈরী করছে। যেহেতু বিষয়টি নতুন এবং এ ধরণের কোন ট্রেনিং নেই তাই ভুল থাকতেই পারে। সেটির জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। আর যাদের জন্য শিক্ষকরা, এটুআই কর্তৃপক্ষ, জেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা শিক্ষা অফিস পরিশ্রম করছে তাদের নিকট পৌঁছাতে হবে। এজন্য সারা বাংলাদেশে উপজেলা ভিত্তিক জুম মিটিং এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে যেখানে এটুআই কর্তৃপক্ষ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, প্রতিষ্টান প্রধান, অভিভাবকবৃন্দ, শিক্ষার্থীরা থাকতে পারে। এছাড়াও আরকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।এছাড়াও আরেকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। যেহেতু বর্তমানে ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিশ লাইন চলে গেছে, তাদের সহযোগিতায় উপজেলা ভিত্তিক অন লাইন কার্যক্রম স্থানীয়ভাবে করা যেতে পারে।

যেহেতু শিক্ষকরা নিজ দায়িত্বে ক্লাসের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে তাই তাদের অনেক

ডাটা খরচ হচ্ছে। মোবাইল কোম্পানীর সাথে আলাপ করে বিশেষ প্যাকেজ করে শিক্ষকদের দেওয়া যায় কিনা । সারাদেশে অনলাইন ক্লাসের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষকবৃন্দ এবং উনাদের যারা সহযোগীতা করছেন সবার জন্য রইল শুভ কামনা।

 

অজয় কৃষ্ণ পাল

সহকারী শিক্ষক(আইসিটি)

ছাতক সরকারি বহুমুখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

ছাতক, সুনামগঞ্জ।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি