প্রভাষক
২৭ আগস্ট, ২০২০ ১১:০৩ অপরাহ্ণ
চলতি বছর থেকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু করতে কাজ চলছে
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলাম এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এমপিও নীতিমালা বিভিন্ন সংকট সমাধানে কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ ও আলোচনার মাধ্যমে সারাদিন বদলি বাস্তবায়ন কমিটির নেতৃবৃন্দ ব্যস্ত সময় পার করেন বলে নিশ্চিত করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির দাবিতে এমপিও নীতিমালা ও জনবল সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোমিনুর রশিদ আমিন এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা করেন এবং একটি খসড়া নীতিমালা প্রস্তাবনা আকারে জমা প্রদান করেন। অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন বলেন "বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু করতে সরকারের বিবেচনাধীন আছেন। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনির নির্দেশে নীতিমালার বিভিন্ন ধারা উপধারা সংশোধন করা হচ্ছে। তিনি শিক্ষকদের ধৈর্য ধরে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি (মোমিনুর রশিদ আমিন) আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি একটি চলমান প্রক্রিয়া হবে। সেই হিসেবে বিষয়টি গভীরভাবে গুরুত্ব দিয়ে বদলি বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনা করে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার এবং দ্রুত বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির সুখবর পাবেন বলে নিশ্চিত করেন ওই কর্মকর্তা।
বেসরকারি শিক্ষকদের ঐচ্ছিক বদলি ব্যবস্থা চালুর জন্য একটি খসড়া প্রস্তাবনা জমা দেন জনাব সিরাজুল ইসলাম। তিনি( সিরাজুল ইসলাম) আরও বলেন নীতিমালা সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত সচিব মহোদয় খসড়া নীতিমালাটি গ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন অংশ ব্যাখ্যা চেয়েছেন।
খসড়া প্রস্তাবে শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এবং দূরত্বের বিষয়টি বিবেচনা করে শূন্যপদ সাপেক্ষে প্রত্যেক গণবিজ্ঞপ্তির পূর্বে একবার কিংবা দুইবার বদলির সুযোগ প্রদানের বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন এবং কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জবাব দেন। জনাব সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থার পাশাপাশি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমএলএসএস থেকে অধ্যক্ষ পর্যন্ত আবেদন সাপেক্ষে স্বেচ্ছায় বদলি ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করেন। নীতিমালা সংশোধন কমিটির আহবায়ক, অতিরিক্ত সচিব আরও নিশ্চিত করেন যে," বাস্তবে বাস্তবিকতার নিরিখে এবং আপনাদের প্রস্তাবের কথা বিবেচনায় রেখে বেসরকারি শিক্ষকদের যত দ্রুত এবং সহজে বদলি ব্যবস্থা চালু করা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।"
বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালুর দাবিতে খসড়া নীতিমালা প্রস্তাবনা জমা দেওয়ার পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় শিক্ষা সচিব জনাব মোঃ মাহবুবুর রহমানের নিকট একটি অনুরোধ পত্র জমা দেন।
বদলি বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলাম আরো বলেন বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থার পাশাপাশি ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত শিক্ষকদের একীভূত করে আলাদা সার্কুলার এর মাধ্যমে অনলাইন সফট্ওয়ারে বদলি ব্যবস্থা চালু, প্রভাষকদের অনুপাত প্রথা বাতিল করে শতাংশ কিংবা অনুপাত কোনটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন। তিনি কর্তৃপক্ষের নিকট সহকারি শিক্ষকদের বিএড স্কেল কোন উচ্চতর স্কেল নয় বরং এটি মূল স্কেল হিসেবে গণনা করার জন্য কর্মকর্তাদের নিকট বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করেন এবং পূর্বের নীতিমালা ২০১০ এর আলোকে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য অনুরোধ করেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান কিংবা অধ্যক্ষ নিয়োগ পূর্বের নীতিমালা অনুরূপে সমন্বয় করে নানা সংকট দূরীকরণে নীতিমালা সংশোধন কমিটির নিকট প্রস্তাব রাখেন। সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে আরো বলেন চলতি বর্ষে বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য পূর্ণাঙ্গ বাড়িভাড়া ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রসঙ্গত বেসরকারি শিক্ষকরা দীর্ঘদিন যাবত বদলি ব্যবস্থা চালুর জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাচ্ছেন যার ফলশ্রুতিতে সরকার ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সম্পূর্ণ অনলাইন সফট্ওয়ারে বদলি ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নেন কিন্তু জানুয়ারি পেরিয়ে গেলেও আজও বদলি ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় শিক্ষকরা হতাশ। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে প্রভাষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি বাস্তবায়ন কমিটির নাম সংগঠন গঠিত হয়। বদলির দাবিতে মানববন্ধন, প্রতীকী অনশন, পদযাত্রা, স্মারকলিপি ও সরকারের সাথে বিভিন্ন সময় দফায় দফায় আলোচনা করেন। যার ফলে বেসরকারি শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবির পাশাপাশি বদলি ব্যবস্থা চালু একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবি হিসেবে শিক্ষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।