Loading..

খবর-দার

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১০:৩০ অপরাহ্ণ

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শনের মূলে “একটি বৈষম্যহীন শোষণহীন উন্নত রাষ্ট্রব্যবস্থা” ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আধুনিক বাংলাদেশ তথা তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমানে শিক্ষার একটি দর্শন প্রবর্তন করেছিলেন,যা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন নামে পরিচিত।বিভিন্ন দার্শনিক বিভিন্ন দর্শনের আলোকে শিক্ষার স্বরূপ উন্মোচনের মাধ্যমে শিক্ষা-চেতনার বিকাশ ঘটিয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষাদর্শন ভাববাদ, প্রয়োগবাদ বা বস্তুবাদের গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়—বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাতত্ত্ব মানবতাবাদ বা মানুষের মুক্তির নিষ্পন্ন ইতিহাস। বিশেষ করে বাঙালি জাতির মুক্তি ও বিশ্বরাষ্ট্রে বাঙালির মাথা উঁচু করে নেতৃত্ব দেওয়ার দর্শন।
বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শনের মূলে যদি আমরা দেখি, তাহলে দেখবো “একটি বৈষম্যহীন শোষণহীন উন্নত রাষ্ট্রব্যবস্থা” প্রবর্তনের জন্য আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক, প্রগতিশীল ও উৎপাদনমূখী দেশ প্রেমিক জনসমষ্টি সৃষ্টিতে শিক্ষাকে অভিযোজিত করণের দিক নির্দেশনা।১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনের লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালের সংবিধানের ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ অংশেই শিক্ষার কথা বলা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে প্রথমে মনোযোগি হয়েছিলেন এই যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশের শিক্ষাকে পূনর্গঠনের কাজে। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, “শিক্ষাই হবে জাতির মুক্তির হাতিয়ার।"এই মুক্তি হবে সংকীর্ণতা থেকে মুক্তি, এই মুক্তি হবে মানবতার মুক্তি, এই মুক্তি হবে দরিদ্র শোষিত জনগণের মুক্তি, এই মুক্তি হবে দেশের আর্থসামাজিক মুক্তি। আর তিনি শিক্ষার মাধ্যমেই গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তাঁর আজন্ম লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা।স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বেশি গুরুত্বারোপ করেছিলেন শিক্ষার ওপর, যার প্রতিফলন ঘটেছিল বাংলাদেশের প্রথম বাজেটে, প্রতিরক্ষা খাতের চেয়ে শিক্ষা খাতে বেশি বরাদ্দ প্রদানে।তিনি ৩৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকমণ্ডলীসহ জাতীয়করণ করেন। সীমিত অর্থ আর অপর্যাপ্ত বৈদেশিক অনুদান ছাড়া সরকারীকরণের এ পদক্ষেপটি ছিল সত্যিই দুঃসাহসিক।
বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন গণমুখী শিক্ষা ছাড়া অর্থনৈতিক সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব নয়। আর তাঁরই নির্দেশনায় সংবিধানের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদে একই পদ্ধতির গণমুখী ও সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. কুদরত-ই-খুদাকে প্রধান করে একটি শিক্ষা কমিশন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই শিক্ষা কমিশন বেশ কয়েকটি মূল্যবান পরামর্শ প্রদান করে। যার ভিত্তিতে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম চলতে থাকে। কিন্তু জাতির দূর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের হৃদয় বিধারক ঘটনার পরে আজ অবধি শিক্ষা সংস্কারে এই অমূল্য দিকদর্শন পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।
তাই আগামী ০৫ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের শিক্ষক সমাবেশে সকল শিক্ষক-কর্মচারি একত্রিত হয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহনের মাধ্যমে শিক্ষায় বৈষম্য বিলোপ সাধনে ভুমিকা রাখতে হবে।