Loading..

ম্যাগাজিন

২৬ অক্টোবর, ২০২০ ০৮:৫৮ অপরাহ্ণ

“একান্ত নিজস্ব ভাবনা- একজন হেমি হোসাইন স্যার, আমি ও আমরা।”

না জানি কেন রে এতদিন পরে জাগিয়া উঠিল প্রাণ….।”

সত্যি  এতদিন পরে অনেকেরই মতো আমারও জাগিয়া উঠিল প্রাণ । আমার শিক্ষকতা জীবনে ছিল অনেক দূর্বলতা, ছিল অনেক ঘাটতি। আমি এই পথে কখনও আসতে চাইনি। নিয়তিই আমায় এ পথে ডেকে আনলো। তবে আমার অল্প বিদ্যার অর্জিত জ্ঞান প্রতিনিয়ত আমি সবাইকে বিলিয়ে দিতে চেষ্টা করছি এবং প্রতিনিয়ত শিখেই চলেছি।

রবি ঠাকুরের ভাষায় বলি---"পথের শেষ কোথায়….কি আছে শেষে…”

আমরা সত্যি জানি না আমাদের জ্ঞানার্জনের এই পথের শেষ কোথায়? প্রত্যেক ব্যক্তিরই  প্রতিটি পথে এগিয়ে যেতে বা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে একজন পথ প্রদর্শক লাগে । তেমনই একজন পথ প্রদর্শক হলেন সবার প্রিয় হেমি হোসাইন স্যার। যিনি কিনা আমারই মতো অনেকরই অগ্রদূত ।

জীবনে অনেক শিক্ষাগুরুর সানিধ্য লাভ করেছি ।তাঁদের কাছ থেকে অনেক অনেক কিছুই শিখেছি। তা নাহলে আজকের আমি- আমিই হতে পারতাম না। তাঁদের সবাই প্রতি অন্তরের অন্তরস্থল থেকে ধন্যবাদ এবং বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

ধন্যবাদ জানাচ্ছি, COVID-19 মহামারী  পরিস্থিতিতে গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের a2i, ক্যারিয়ার হার্ব বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন মেট্রোপলিটন কলেজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের (অভিজিত স্যার, আরিফ স্যার, কবির স্যার,তানহা দিলরুবা তাসনিম ম্যাম সর্বোপরি হেমি হোসাইন স্যার প্রমুখ), যাঁদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের জন্য Digital Transformation  in Education to Win IR 4.0  বিষয়ক ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণে ৫ম ব্যাচে অংশগ্রহণ করতে পেরে। যদিও আমি ৪র্থ ব্যাচে  কিছুটা সময় অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পরে চালিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হয়নি।

দীর্ঘ টানা ৫ ঘন্টা এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে আমি অভিভূত, স্তব্ধ এবং বিমোহিত। জানিনা আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়ে   প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান কতটুকু প্রয়োগ করতে পারব– তবে চেষ্টা অবিরত থাকবে।

সদা হাস্যোজ্জ্বল হেমি স্যারের এই প্রশিক্ষণের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আজ দুদিন ধরে আমায় ভাবিয়ে তুললো যার প্রয়োগ সঠিক সময়ে সঠিকভাবে করতে পারব কিনা।

স্যারের এই প্রশিক্ষণে জানলাম-

ক) পরিকল্পনা ছাড়া জীবনের কোন কাজই সম্ভবপর হয় না।

খ) No English no job- যেখানে আমার জ্ঞান হয়তো বা অতীব সীমিত।

গ)Learning Style- VAK model (Visual, Auditory and Kinesthetic Model)

ঘ) Project Base Learning-যেখানে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের এমনভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন যেন   শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনের অগ্রগতিতে চারটি দিক অবশ্যই অনুসরণ করে –(i) সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করা ,(ii)সমাধান মুখী হওয়া (iii) সহযোগিতার মানসিকতা থাকা, দলগত কাজ করা এবং (iv) সময় জ্ঞান থাকা।

ঙ) GROW model-(Goal, Reality, Option and Way Forward) এটা একজন শিক্ষক শুধু নয় জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে আমাদের সকলের এই মডেল দিক সম্পর্কে অবগত হওয়া উচিত।

চ) একজন শিক্ষকের কর্তব্য কি হওয়া দরকার- শিক্ষার্থীর জীবনে-(i) আজীবন শিক্ষার একটি মডেল হয়ে থাকা, (ii) সমবেদনশীল একটি মডেল, (iii) শিক্ষক হবেন বিশ্বব্যাপী নাগরিক, (iv) ডিজিটালভাবে সাক্ষর, (v)শিক্ষকের থাকতে হবে STEAM (Science, Technology, Engineering and Math) একীকরণ জ্ঞান এবং হতে হবে মানবিকতার প্রেমিক (vi) একুশ শতকের একজন দক্ষ মডেল।

ছ) OARBED model- Above the line (Ownership, Accountability, Responsibility) Below the line (Blame, Excuse, Deny)

জ) শিক্ষকতা তথা ব্যক্তি জীবনের দূর্বলতা কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজন- প্রধানত মানসিকতা, খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এবং এরপর দরকার দক্ষতা ও সরঞ্জাম/ সম্পদ।

 বিখ্যাত দার্শনিক ও মনীষি “ সক্রেটিস” এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উক্তি মনে পড়ে গেল- “Know Thyself” – প্রকৃত জ্ঞান অন্যকে জানানোর আগে নিজেকে জানা উচিত। হেমি স্যারের বক্তব্যে উঠে আসা উক্তি “Changes Start from me” তাঁরই প্রেক্ষিতে VAK model নিয়ে যখন ‍একটু চিন্তা করলাম -ভাবলাম আমার জানা উচিত শিক্ষার্থীর আগে আমি কোন পর্যায়ে পরি ?আমি কি দেখে শিখি, আমি কি শুনে শিখি? নাকি আমি কি আদর যত্নে লালিত হয়ে কোন উপলদ্ধির মাধ্যমে  জ্ঞান অর্জন করি? VAK Test মাধ্যমে নিজেকে কিছুটা যাচাই করতে সমর্থ হলাম- প্রত্যাশা করি যা পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রয়োগ করব।

OARBED model এ  জীবনের কোন না কোন ক্ষেত্রে ছিলাম আমি Below the line. এখন উপলব্ধি করলাম জীবনের সাফল্যে নিজেকে ১০০% Above the line এ আনা উচিত। এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে বুঝলাম শিক্ষকতা পেশায় - বিষয় ভিত্তিক দক্ষতার পাশাপাশি দরকার মানসিকতার পরিবর্তন করা, সহযোগিতার মনোভাব বৃদ্ধি করা , সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে শিক্ষার্থী/ অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ানো , পড়ার দক্ষতা এবং সর্বোপরি গবেষণার দক্ষতা বৃদ্ধি করা। নতুন সংস্কৃতি, সামাজিক ধারণা ও সমস্যা সমাধানের উপায় চিহ্নিত করা। শিক্ষার্থীর সাথে বন্ধুত্ব সুলভ মনোভাব গড়ে তোলা। শিণ্প বৈপ্লবিক যুগে শিক্ষার গুরত্ব সম্পর্কে অবগত হওয়া।

 হেমি স্যারের তিনটি প্রশ্ন আমায় ভাবালো-“ Did I live” , “ Did I love” এবং “ Did I Matter”. এখনই আমাদের সময় এসেছে- “If not me then who?” “ If not now then when”?

 বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ  হেমি হোসাইন স্যারের “FIRE your BOSS” বইটির সফট কপি পেয়ে। আমি এগিয়ে যেতে চাই বহুদূর , সমৃদ্ধ করতে চাই আমার নিজ জ্ঞান ভান্ডারকে । তাই আমার মতো অনেকেরই  প্রয়োজন আরও বেশী বেশী এধরনের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া। তবেই চতুর্থ  শিল্প বিপ্লবে হাজারো প্রতিবন্ধকতার মাঝে আমরা পৌঁছতে পারব Good থেকে Great  এ।

ধন্যবাদ সকলকে। স্যারসহ সকলের সুস্থতা ও শুভকামনা।

 (আমার লেখায় কোন ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর প্রার্থনা)

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি