Loading..

প্রকাশনা

২৮ অক্টোবর, ২০২০ ১১:০৯ অপরাহ্ণ

বেসরকারি শিক্ষক পরিবারের দিনলিপি

বেসরকারি শিক্ষক পরিবারের দিনলিপি

#মুজিব_বর্ষে_শিক্ষা_জাতীয়করণ_অাবশ্যক

প্রজম্ম-১

"আসছ মাষ্টরের(শিক্ষক) ঘরে, দেখবা টেকা(টাকা) না থাকলে কি হইব, হাড়া(খাটুনি)

আছে৷"

আমার মায়ের কাছ থেকে শুনেছি মা যখন নতুন বৌ হয়ে সংসারে আসে একদিন রান্না করতে করতে আমার দাদি মাকে এ কথা বলেছেন ৷

আমার দাদা ছিলেন বেসরকারি হাইস্কুলের শিক্ষক৷ প্রথমে নোয়াখালীর  চাটখিল হাইস্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন৷ পরে লক্ষ্মীপুরের দিঘলী হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন৷

শুনেছি ,দাদার বাবা ছিলেন মূলতঃ কৃষক৷ সেই সাথে সিজনাল জিনিসপত্রের ব্যবসা করতেন৷ সাত মেয়ে ,এক ছেলে ছিল তাঁর৷ তিনি চেয়েছিলেন পড়ালেখা বাদ দিয়ে দাদা তাঁর ব্যবসাটা ধরুক৷

কিন্তু দাদা চেয়েছিলেন পড়ালেখা করতে- শিক্ষক হতে৷ তাই একদিন ঘরে থাকা পাট বিক্রি করে বেরিয়ে পড়লেন৷ পরিবারের কাছে বেশ কয়েকবছর কোন খবর ছিলনা কোথায় ছিলেন৷

চাটখিল এক বাড়িতে লজিং থেকে পড়ালেখা করে BN পাস করে , বাড়িতে আসলেন৷ এরপর শিক্ষকতায় ঢুকলেন৷

তাই সবাই ডাকত BN স্যার. নাম ছিল সৈয়দ আহমেদ৷

বেসরকারি শিক্ষকদের আর্থিক অবস্থা ভেতরে জর্জরিত হলেও বাহিরে ঠাট আর নাম - সুনাম আছে৷

দাদা-দাদির সংসারেও সেই অবস্থা ছিল৷ শিক্ষিত মানুষ, স্যার !সেই সুনামে দূরের দূরের আত্মীয়-স্বজনও বেড়াতে আসত৷ পাড়া - প্রতিবেশি আবদার নিয়ে আসত৷ আর এসবের বেশিরভাগ সামলাতে হত দাদীকে৷

স্কুল ছিল বাড়ি হতে দূরে, তাই ভোরে ঘুম থেকে উঠে দাদিকে রান্না-বান্না করার খাটুনিটা করতে হত৷ ফজর নামায পড়েই চুলা ধরাত৷ আবার বিকালে স্কুল থেকে আসার আগেই খাবার রেডি রাখা৷

দাদার বাবার অনেক  সম্পত্তি ছিল৷ কোন ভাই না থাকায় উত্তরাধিকার সূত্রে দাদাই সব পেয়েছেন৷

ফসল ঘরের খাবার রেখে উদ্ধৃত বিক্রি করতেন৷ তবুও তিন ছেলে চার মেয়ের সংসারে খুব জৌলস ছিল না৷ টানাটানির ঘানি ছিল৷

দাদার বাবা নাকি তাই মাঝে তিরষ্কার করত৷

শিক্ষক হিসাবে আমার দাদা বড় কাজ করেছেন সমাজের অন্যদের মাঝে শিক্ষার সচেতনতা সৃষ্টি করেছেন৷ অনেককে নিজের খরচে পড়িয়েছেন৷

নিজের সন্তানদের সুশিক্ষিত করে তুলেছেন৷ সামাজিক দায়িত্ব, কুসংস্কারমুক্ত করে গড়ে তুলেছেন৷

এখনও বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া দাদার কোন ছাত্রের সাথে দেখা হলে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করেন দাদাকে৷

দাদার নাতনী হিসাবে সমীহ করেন আমাকে৷ তখন এক সুখ পাই৷

স্বাধীনতার যুদ্ধের  ঝড়ে ভেঙ্গে যায় দাদার অনেক স্বপ্ন৷ বড় ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে শহীদ হয়৷ ছেলের কথা শুনে তিনিও স্টোক করেন৷( তখন শুনেছি কলিজা ধরেছে)৷ মারা যান এক মাসের ব্যবধানে৷

মেঝ ছেলে তখন ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ভার্সিটি ভর্তির অপেক্ষা৷ ছোট ছেলে কুমিল্লা বোর্ডে মেট্রিকে সপ্তম স্ট্যান্ড করেন৷

মাস গুণে দিন যাওয়া বেসরকারি শিক্ষক, জমা অার কই?

ছোট ছেলে -মেয়েদের রেখে কোন ব্যাংক ব্যালেন্স ছাড়াই চলে গেলেন পারাপারে৷

অন্য সন্তানদের  নিয়ে জীবন সাঁতরিয়ে কূলে উঠেছেন আমার দাদী৷

 

#প্রজম্ম-২

- নাত জামাই, ভেবে দেখ৷ ছেলে ভদ্র, মেধাবী৷ ছোট ভাই ইঞ্জিনিয়ার৷ এটাও ভাল কিছু করতে পারত!বাবা বড় ভাই মারা যাওয়ায়  পরিবারের দায়িত্বে পারেনি৷

- নানা, আপনার কথা মানলাম৷ ছেলে ভদ্র, মেধাবী সব ঠিক৷ ভাই কি করে তা দিয়ে লাভ নেই! ছেলে কী করে, সেটাই বড়! ছেলে বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক৷ এখানে মেধাবী হয়েও লাভ  নেই, কোন প্রমোশন নাই৷

তাই আমার মতামত যদি চান তো, বলব আমি রাজি নই৷ শিক্ষকদের সংসার চালাতেই মুশকিল, তারপর পারিপার্শ্বিক৷"

আমার নানুর মামা তথা আমার মায়ের নানা বেসরকারি শিক্ষক আমার বাবার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলে, আমার বিমানবাহিনীর এয়ারক্রাফ্ট ইঞ্জিনিয়ার বড় খালু নিচের উক্তিটি করে প্রস্তাবের বিপক্ষে ছিলেন৷

মায়েরর নানা অনেকটা জোর করেই বেসরকারি শিক্ষকের কাছে মাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন৷

আমার নানুর বাড়ি ঐতিহ্যবাহী ভূঁইয়া বাড়ি৷ আমার দেখা একটা আদর্শ গ্রামের বাড়ী৷

শান বাঁধানো পুকুর ঘাট, কাচারি ঘর, মোক্তব, প্রাইমারী স্কুল, মসজিদ,  মাদরাসা, বড় মাঠ  আছে বাড়ির সামনে৷ বাড়িটাও বেশ বড়৷ বেশীরভাগ সবাই শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, ব্যাংকার,প্রবাসী, সরকারি চাকুরিজীবি৷

তখন মোটামুটি লোকজন ছিল, বর্তমানে বেশিরভাগই শহরে৷

শুনেছি, আমার নানা টাইটেল পাস করার পর প্রথমে গ্রামের মাদরাসায় ঢুকে৷ নানার বড় ভাই তখন কলকাতা চাকুরি করতেন৷ উনি একদিন বাড়ি এসে শুনলেন নানা মাদরাসায় বাচ্চাদের পড়াচ্ছেন৷ উনি, রাত্রে নানা বাসায় আসলে বললেন, ঢাকায় চল৷ ওখানে ব্যবসা ধরিয়ে দেব৷

এত চিৎকার করলে বাচ্চাদের নিয়ে, মাথা থাকবে  না৷ কয় টাকা পাস? সেই থেকে নানাও মতিঝিল ব্যবসা করতেন ৷

অর্থবিত্ত পরিবার থেকে হঠাৎ নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে এসে আমার মাকে অনেক বিব্রত আর হোঁচট খেতে হয়েছে৷ আমার ধৈর্য্যশীল মা সব নীরবে সহে গেছেন৷

       নিজের বোনেরা, চাচাতো বোনেরা অনেক দামী দামী ড্রেস আপ করে আসত৷ আর এজন্য আমার নানুর কাছে প্রায়ই মায়ের জিনিস নিম্ন মানের লাগত৷ প্রায়ই বলত, জামাইকে বলতে পারসনি আরেকটু ভাল দেখে কিনতে!

একবার আমার বড়খালাদের পাশের বাসায় গেল৷ যাবার আগেই বড় খালা বললেন, ওরা কেউ জিজ্ঞাস করলে বলবি, তোর হ্যাজব্যান্ড প্রধান শিক্ষক৷ ওরা উকিল পরিবারের শিক্ষক শুনলে নাক কুচকায়৷

অথচ, আমার বাবা ছিলেন সহকারি শিক্ষক৷ মা কোন উত্তর না দিয়ে নীরব ছিলেন৷

আমার মায়ের বিয়ের সময় গহনার দাম কম ছিল৷ আমার দাদী তাই আব্বুকে বলে, পাঁচ ভরির মত গহনা দিয়েছিল৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, আমার নানু বাড়ী হতে, গহনাগুলো হারিয়ে যায়৷

মা কান্না-কাটি করতেছিলেন৷ পাশের ঘরের মায়ের এক চাচা (নির্মম সত্য, তবে, আমাদের কাছে বেদনার কথা )আরেকজনকে বলতেছিলেন,

 আহারে ! জিনিসগুলো হারিয়ে গেছে! মাস্টর মানুষ!  বললেই কী আবার জোগাইতে পারবে?"

আসলেই বেসরকারি শিক্ষক বাবার পক্ষে সম্ভব হয়নি আর গহনা বানিয়ে দেওয়ার৷

আমার বাবা তাঁর কম বেতন, আর্থিক দৈন্যতা ছোটবেলায় কখনও আমাদের বুঝতে দেননি৷ আমরা কোন ভাইবোনও কখনও অন্যায় আবদার ও করিনি৷

 এখন শুনছি, তখন বেসরকারি শিক্ষকদের ঈদে বোনাস দেয়া হত না৷ পরিবারের প্রথম সন্তান হিসাবে, আমিই অনেক দৈন্যতা দেখেছি৷ ঈদে নতুন জামা কাপড় ত কেনা হত না৷ আমরা বড় দুই ভাইবোন ছিলাম তখন৷প্রায়ই দেখতাম আমার নানা নতুন জামা পাঠিয়ে দেয়৷

আমার চাচা তখন সপরিবারের লিবিয়া থাকতেন৷ ১৯৯২ সালে ঢাকায় এসে সেটেল হলে, ঈদের পর একদিন উনাদের বাসায় যাই৷ চাচা বুয়েট ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ার৷ চাচী জিজ্ঞাস করলেন, ঈদে কোন জামাটা কিনলে?

বললাম, কোন জামা কিনিনি৷ আমার ছোট চাচাতো বোন আমার বাবাকে বলল, জেঠু আপনি আপুকে ঈদে জামা কিনে দেননি কেন?

আব্বু শুধু হাসল৷

এরপর থেকে আমার চাচা ঈদে সবার জন্য জামা কাপড় পাঠিয়ে দিতেন৷

আমার চাচা ইঞ্জিনিয়ার, মামা নিউজিল্যান্ডের ডাক্তার, নানা ব্যবসায়ী, ফুফা সেনাকর্মকর্তা, খালুরা বিমানবাহিনীতে এবং রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ার৷ সেই সুবাধে সবার কাছ থেকে গিফট পেতাম৷ জামা কাপড় চলত৷

তাছাড়া আমাদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বড় বাড়ি,পুকুর, ধানী জমি আছে৷

আম, জাম, কাঁঠাল, ডালিম, পেয়ারা, আমড়া, বরই, ডেউয়া, নারিকেল, সুপারি সহ বিভিন্ন ফলে ভরপুর আমাদের বাড়িটি৷ তেমন ফল কিনতে হয় না,বরং বিক্রি করে৷বড় বাগানে বড় বড় কাঠ গাছ ইত্যাদি ৷

তবু আমার মা মাঝে মাঝে বাবাকে খোঁচা দিত, সব বাচ্চাকে একত্রে জামা কাপড় দেওয়া লাগলে বুঝত!

  আমার সাথের অন্য বেসরকারি শিক্ষকের ছেলে- মেয়েদের দেখতাম আরও করুন অবস্থা৷ একটা জামা গায়ে দিয়ে আসত স্কুলে৷ সেটা ছিঁড়লে আরেকটা নতুন  কেনা হত৷

অবিবাহিত কিছু  শিক্ষকদের ছাড়া অন্য শিক্ষকদের দেখতাম রংউঠা, ছিঁড়ে পরিত্যাক্ত না হওয়া পর্যন্ত একটা জামা পরতো৷ বিলাসিতার বালাই ছিল না৷

নিজে শিক্ষকতা করে এখন বুঝি৷ আমি স্যালুট জানাই সেইসব শিক্ষককে যাঁরা এত দীনতার মধ্যেও হাসিমুখে দেশ, জাতি গড়ার কাজ করছেন৷

সত্যিকারে বলতে কী, বর্তমান  আমি নারী হিসাবে, বলি, নিজের  পরিবারে অর্থনৈতিক দায়িত্ব কিছুটা কম। সেখানে একজন পুরুষ শিক্ষককে পুরো সংসারের দায়িত্ব নিতে হয়;

 

প্রজন্ম -৩

ছোটবেলায চারিদিকে আত্মীয়-স্বজন সবার চাকচিক্য দেখে বেসরকারি শিক্ষক হব সে স্বপ্ন কখনো ছিল না । স্বপ্ন দেখতাম মামার মত ডাক্তার কিংবা চাচার মত ইঞ্জিনিয়ার হব। না হয় বিসিএস ক্যাডার ।

কিন্তু বেসরকারি শিক্ষক পরিবারের  আর্থিক দৈন্যতা বেসরকারি শিক্ষক বানিয়ে ছাড়ল ।

পরিবারের প্রথম সন্তান হিসেবে  ধাক্কাটা তাই আমিই পেলাম ।

"মেয়ে বড্ড  অহংকারী হয়ে গেছিস, ভার্সিটি/ মেডিক্যালে  কোথাও পরীক্ষা দিতে হবে না৷"

শিক্ষক বাবার মুখে এ কথা শুনে আমি বাকরুদ্ধ৷

বাবাই আমার আদর্শ৷

বাবাই আমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন ।

আমি রাতে পড়ালেখা করতাম, বাবাও জাগতেন৷ আমার পড়ার ডিস্টার্ব হবে ভেবে মাকে কাজে সাহায্য করতেন৷

অবশ্য এ মানসিক ধাক্কাটার জন্য দু' বছর আগেই প্রস্তুত থাকা উচিত ছিল! তবু চোখে  ঝর্ণাধারা!

বাবা পাড়া গাঁয়ের মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক৷ বাবা-মায়ের  অনুপ্রেরণাতেই প্রথম হতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত  ক্লাসে প্রথম হয়েছি৷ এসএসসি পরীক্ষায় সব বিষয়ে লেটার সহ স্টার মার্কস পেয়েছি৷

1997 এ এসএসসির পর নোয়াখালী মহিলা কলেজে এইচএসসি জন্য ভর্তি হতে চেয়েছি৷ ফরম এনে,বাবা বললেন, হোস্টেল খরচসহ মাসে চার হাজার লাগবে৷ বেতন পাই চার/  পাঁচ হাজার ,আরও চার বাচ্চা নিয়ে কিভাবে চলব?

এ প্রথম বাবার বেতন সম্পর্কে জানলাম৷ বিলাসিতা ছিলনা সত্য, কিন্তু বাবা আমাদের অভাব বুঝতে দেননি৷

অগত্য বাড়ী হতে  ছয় কিমি দূরে, জনতা কলেজে ভর্তি হলাম৷ পিছনের সারির  স্টুডেন্ট সহ সাতজন ছিলাম বিজ্ঞান বিভাগে৷

আমি ছাড়া আর কেউ ক্লাস করত না৷ বারোটার পর কলেজ খালি হয়ে যেত৷ বিজ্ঞানের স্যাররা দূরে হতে আসতেন, ক্লাস দেরিতে৷ কলেজের মহিলা পিয়ন  বসে থাকত  আমার জন্য৷ উনি রাগ হতেন৷ প্রাইভেট পড়ার সমর্থ নেই, আমাকে ক্লাস করত হত৷ দুপুরে নির্জন ছয় মাইল পথ হাঁটতাম 'আর চোখের জল মুচতাম৷

এইচএসসিতে রেজাল্ট  বেশি ভাল হয়নি, ছয় নম্বরের জন্য স্টার মার্কস পাইনি৷

কোচিংয়ের   সুযোগ হয়নি৷

তবু চেয়েছিলাম, মেডিক্যাল আর ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষাটা দেই৷ বাবার ধমকে থেমে গেলাম৷

 ভর্তি হলাম নোয়াখালী সরকারি কলেজে ইংলিশ অনার্সে৷

 শহরে বাসা না থাকায়  আত্মীয়ের বাসায় পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকার পেইনফুল  এক্সপিরিয়েন্স নিয়ে মাস্টার্স শেষ করলাম৷

প্রথম বুঝতে পারিনি। আব্বু খুব ব্যথিত ছিলেন আমাকে কোথাও ভর্তি পরীক্ষা না দিতে দিয়ে । ভাই বোন পাঁচ জনের পড়ার খরচ!  তবে, গ্রামের মানুষ বলত পড়ার যে খরচ!  বিয়ে দিয়ে দিন। তা করেননি । সাধ্যের মধ্যে আমাদের পড়ালেখা করিয়েছেন ।

মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েই  গেস্ট টিচার হিসাবে জনতা ডিগ্রি কলেজে ডুকে গেলাম ৷ শুরু হল বেসরকারি শিক্ষক হিসেবে যাত্রা ।

পরিচিত  অনেকেই বলত,  বীথি স্টুডেন্ট হিসেবে যত ভাল ছিল সে হিসেবে কিছু করতে পারেনি । লজ্জায় বলতে পারিনি তখন । আমাদের সামর্থ্য নেই।

আমার ভাইদের দুজনের একজন ও  শিক্ষক হতে চায়নি। অন্য অনেক  শিক্ষকদের সন্তানকে ও দেখেছি বেসরকারি  শিক্ষকতা অপছন্দ করতে। তাছাড়া কেউ চাইলে ও বেসরকারি শিক্ষকদের তো পোষ্য কোটা নেই ।

নিজে এখন বেসরকারী শিক্ষক হয়ে বুঝি, আর্থিক দৈন্যতার জন্যই বাবা আমাকে ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষা দেননি৷ শিক্ষকরা অন্যের সন্তানকে মানুষ করে,  কিন্তু নিজের সন্তানকে অর্থাভাবে পারে না৷

তাই মুজিব_বর্ষে_শিক্ষা_জাতীয়করণ_আবশ্যক ।

অবশেষে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার "ছুটির দিনে" আমার বাবার লেখা হতে উদ্ধৃতি দিচ্ছি -

" আমি একজন শিক্ষক৷ সমাজের উচ্চপদস্থদের আর্থিক দিক দিয়ে তাল মিলিয়ে চলতে পারিনা সত্য, চারপাশের মানুষের কাছে যে সম্মান পাই, তা কম কিসের?"

সমাপ্ত

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি