Loading..

ভিডিও ক্লাস

১৭ নভেম্বর, ২০২০ ০৮:৫২ অপরাহ্ণ

অনলাইন ক্লাস || মোঃ নূরুল আমিন || সহকারী মৌলভী || শ্রেণীঃ ৮ম || তাওহীদ ফিল ইবাদাহ || আকাইদ অংশ || Nurul Amin || By NIDM
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ তোমার প্রতিপালক অকাট্য আদেশ জারি করেছেন যে, তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত করো, অন্য কারো ইবাদত করো না। (সূরা ১৭ বনি ইসরাঈল, আয়াত ২৩) আল্লাহ ব্যতীত মনগড়া উপাস্যসমূহকেও যেহেতু মঙ্গল-অমঙ্গলের মালিক ভাবা হয় এবং এ-কারণে সেগুলির সন্তষ্টির লক্ষে পূজা দেওয়া হয়, তাই আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজীদের বিভিন্ন জায়গায় অত্যন্ত পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, এরা সম্পূর্ণ নিঃস্ব এবং অক্ষম। কারো কপাল গড়ে দেওয়া কিংবা ভেঙ্গে ফেলার ক্ষমতা এদের হাতে নেই। ইরশাদ হয়েছে, وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَمْلِكُ لَهُمْ رِزْقًا مِنَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ شَيْئًا وَلَا يَسْتَطِيعُونَ আর তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন সব জিনিসের পূজা-অর্চনা করে, যারা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী থেকে তাঁদেরকে কোনো রিযিক প্রদানের অধিকার রাখে না এবং সেই ক্ষমতা তাদের নেই-ও। (সূরা ১৬ নাহল, আয়াত ৭৩) অন্য আয়াতে এসেছে, قُلْ أَتَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا نَفْعًا وَاللَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ তাদেরকে বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুর উপাসনা করছো, যা তোমাদের কোনোই অপকার করার (নিজস্ব) সাধ্য রাখে না এবং উপকারেরও না। অথচ আল্লাহই সব কিছুর শ্রোতা এবং সকল বিষয়ের জ্ঞাতা? (সূরা ৫ মায়েদা, আয়াত ৭৬) যে সকল জাতি শিরকে লিপ্ত হয়েছে এবং আল্লাকে বাদ দিয়ে অন্য জিনিসকে নিজেদের মাবুদ বানিয়ে নিয়েছে, তাদের নিকট আগত আল্লাহ পাকের নবী ও রাসূলগণ তাদেরকে শিরকের তালিম দেননি, বরং সবাই বিশুদ্ধ তাওহীদের দাওয়াত দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا إِلَهًا وَاحِدًا لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ سُبْحَانَهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ অথচ তাঁদেরকে কেবল এই আদেশই দেওয়া হয়েছিলো যে, তারা সেই অদ্বিতীয় মাবুদের ইবাদত করবে, যিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। তারা যে সমস্ত শিরকী কার্যকলাপ করে চলেছে, তিনি তা থেকে পবিত্র। (সূরা ৯ তাওবা, আয়াত ৩১) অন্য আয়াতে এসেছে, وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ নিশ্চই আমি প্রত্যেক উম্মতের ভিতর কোনো না কোনো রাসূল পাঠিয়েছি এই পথ-নির্দেশ দিয়ে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, শয়তানের বন্দেগী পরিহার করো। (সূরা ১৬ নাহল, আয়াত ৩৬) আরও এসেছে, وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُولٍ إِلَّا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُونِ হে রাসূল! আমি আপনার পূর্বে যতজনকে রসূলরূপে পাঠিয়েছি, তাদের সবাইকে ওহীযোগে এ-কথাই জানিয়েছি যে, আমি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই। অতএব তোমরা আমরাই ইবাদত-বন্দেগী করো। (সূরা ২১ আম্বিয়া, আয়াত ২৫) তাওহীদ ফিল ইবাদাহ সম্পর্কে এই ইজমালী বর্ণনা ছাড়াও কোরআন মাজীদের যেখানে যেখানে নবীগণের দাওয়াত ও তালীমের বিস্তারিত বিবরণ এসেছে, সেখানে তাঁদের সম্পর্কে পরিষ্কার ভাষায় বলা হয়েছে, সকল নবী-রাসূল আপন আপন উম্মতকে বলেছেন, তোমাদের ইবাদত-বন্দেগীর উপযুক্ত একমাত্র আল্লাহ তাআলা। সুতরাং তোমরা কেবল তাঁরই ইবাদত কারো, অন্য কারো বন্দেগী করো না। নবীগণ বলতেন, اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ এক আল্লাহরই ইবাদত করো। কারণ তিনি ব্যতীত ইবাদতের উপযুক্ত আর কোনো ইলাহ নেই। (সূরা ৭ আরাফ, আয়াত ৫৯) কোরআন মজীদ আমাদেরকে জানিয়েছে যে, এ কথাই নূহ নবী তাঁর উম্মত বলেছেন, হুদ ও সালেহ নবীদ্বয়ও বলেছেন। বলেছেন শুআইব আলাইহিস সালাম এবং ইবরাহীম ও তাঁর পরবর্তী সকল নবী-রাসুল। কিন্তু খৃস্টানরা তিন খোদার আকিদা জন্ম দিয়েছে। আল্লাহর সঙ্গে যীসু অর্থাৎ ঈসা মাসীহ এবং রুহুল কুদ্দুস (জিবরাঈল) ফেরেশতাকে শরিক করেছে। আবার কেউ জিবরীলের পরিবর্তে মাতা মরিয়মকে আল্লাহর শরিক সাব্যস্ত করেছে। আর তারা আল্লাহ ও তাঁর পবিত্র রাসূলের প্রতি অপবাদ দেয় যে, আমাদেরকে তাঁরাই এসব শিক্ষা দিয়েছেন! কোরআন মাজীদ খৃস্টানদের এই আকিদা রদ করে দিয়েছে। জায়গায় জায়গায় আল্লাহ পাক বলেছেন, অন্যান্য নবীদের মতো ঈসা নবীও উম্মতকে তাওহীদের দাওয়াত দিয়েছেন। তিনি তার কওমকে বলেছেন, وَقَالَ الْمَسِيحُ يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ اعْبُدُوا اللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمْ إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ অথচ মাসীহ নিজে বলেছেন, হে বনি ইসরাঈল! তোমরা কেবল ঐ আল্লাহর ইবাদত করো, যিনি আমারও বর তোমাদেরও রব। যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে, আল্লাহ পাক তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। তাঁর ঠিকানা হবে জাহান্নাম। এমন অবিচারীদের কোনো সহায় থাকবে না। (সূরা ৫ মায়েদা, আয়াত ৭২) ঈসা মাসীহ যখন বনি ইসরাঈলের সামনে নিজেকে নবী হিসাবে উপস্থাপন করলেন এবং বললেন, আমি আল্লাহর হুকুমে অন্ধকে চক্ষু দিতে পারি, মুর্দাকে জিন্দা করতে পারি এবং বিভিন্ন মুজেযা আমি দেখাতে পারি, তখন তিনি এ কথাও বলেছিলেন, আমি খোদা নই। বরং আল্লাহর একজন বান্দা, তোমরাও তাঁর বান্দা। আমার প্রতিপালক তিনি, যিনি তোমাদের প্রতিপালক। ইবাদতের উপযুক্ত কেবল তিনি। আমি তাঁরই ইবাদত-বন্দেগীর প্রতি তোমাদের আহ্বান করছি। তাঁর বন্দেগীতেই নাজাত ও মুক্তি।