Loading..

প্রকাশনা

১৯ জানুয়ারি, ২০১৫ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় পরিচয়পত্র হবে স্মার্টকার্ড: ২৬ মার্চ থেকে বিতরণ শুরু
ঢাকা, ১৯ জানুয়ারি- ভোটারদের উন্নত মানের স্মার্ট কার্ড দেওয়ার আগে বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে শিগগির। রোববার ইসি সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন। সুলতানুজ্জামান জানান, অনলাইনে আবেদনের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। সোমবার কমিশন সভায় অনুমোদনের জন্য এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। “কমিশনের সম্মতি পেলে এক সপ্তাহের মধ্যে এনআইডি তথ্য সংশোধনের জন্য সবাইকে সুযোগ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে অনলাইন ও লিখিত আবেদন করতে পারবে ভোটাররা।” বর্তমানে যে জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাল করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। উন্নতমানের এই কার্ড ব্যবহার করে ২০ ধরনের নাগরিক সেবা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ভবিষতে ই-পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন সেবাসহ বহুবিধ কাজে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে। ডিজি সুলতানুজ্জামান মো: সালেহ বলেন, এই কার্ড এতই বহুবিধ কাজে ব্যবহার করা যাবে যে, তা এখন ধারণাই করা যাচ্ছে না। কেননা এটি পৃথিবীর যেকোনো দেশের স্মার্টকার্ডের চেয়ে বেশি মেমোরি বা তথ্য ধারণক্ষমতাসম্পন্ন কার্ড। বর্তমানে জাতীয় আইডি কার্ডে কোনো ভুল থাকলে অনলাইনেই সেই ভুল সংশোধনের সুযোগ থাকবে। ইতোমধ্যে একটি অত্যাধুনিক সফটওয়্যার কেনা হয়েছে। সোমবার কমিশন বৈঠকে অনুমোদন হলে আগামী সাত দিনের মধ্যেই এ সুযোগ অবারিত করা হবে। ফলে অনলাইনেই ভুলগুলো সংশোধন করা যাবে। তবে এ েেত্র ফরম পূরণের পর সংশ্লিষ্ট উপজেলা কর্মকর্তার সাথেই যোগাযোগ করতে হবে বলে জানান সুলতানুজ্জামান মো: সালেহ। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে ৯ কোটি নাগরিককে স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ছয় লাখ করে ধাপে ধাপে কার্ডগুলো সরবরাহ করা হবে। এ ক্ষেত্রে যাদের বর্তমানে পরিচয়পত্র আছে তারাই অগ্রাধিকার পাবেন। এই কার্ডের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করাসহ দুর্নীতি দমনও সহজ হবে বলেও তিনি মনে করেন। কার্ড সংশোধনে ভোগান্তির বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, ভালোভাবে দেখে আবেদনপত্র পূরণ করেই একজন নাগরিক জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়ে থাকেন। তার দেয়া তথ্য সংশোধন করতে হলে সুনির্দিষ্ট কারণ অবশ্যই দেখাতে হবে। ভুল সংশোধনের ইনটেনশন দেখেই আমরা আবেদন আমলে নিই। কারো আবেদনের সত্যতা থাকলে তাকে কিন্তু ভোগান্তিতে পড়তে হয় না। তাই যারা সংশোধনের জন্য আসবেন নিশ্চয়ই প্রমাণ দেখিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারলেই শুধু কার্ড সংশোধন করা হবে। তিনি বলেন, কাউকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানি করা হলে তা বরদাশত করা হবে না বলেও উল্লেখ করেন সামরিক এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমার অফিসে কেউ দুর্নীতির আশ্রয় নিলে বা দালাল থাকলে তাদের ধরিয়ে দিন। আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নেবো। এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি জানান, ২০০৮ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করেছে মাত্র দুই লাখের কিছু ভোটার, যা ০.০২ শতাংশ। ২৫টি খাতে এই পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। এখানে তিন স্তরে ২৫টির মতো নিরাপত্তাবৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রথম স্তরের নিরাপত্তাবৈশিষ্ট্য খালি চোখে দেখা যাবে, দ্বিতীয় স্তরের বৈশিষ্ট্যগুলো দেখার জন্য প্রয়োজন হবে বহনযোগ্য যন্ত্রাংশ এবং শেষ স্তরের জন্য কোনো ল্যাবরেটরিতে ফরেনসিক টেস্ট করার প্রয়োজন হবে। এটিকে আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করার জন্য আটটি আন্তর্জাতিক সনদপত্র ও মানপত্র নিশ্চিত করা হবে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশে ৯ কোটি ১৯ লাখ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ১৩ শতাংশ ভোটারের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যে সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। ইতোমধ্যে মাত্র ২ লাখ (শূন্য দশমিক ২ শতাংশ) ভোটার তথ্য সংশোধন করেছেন। স্মার্টকার্ড দেওয়ার আগে সবার জন্য অনলাইন ও অফ লাইনে [লিখিত আবেদন জমা দিয়ে] তথ্য সংশোধনের সুযোগ রাখা হবে। এবার হালনাগাদের আরো প্রায় ৫০ লাখ নাগরিক নতুন করে ভোটার হতে নিবন্ধন করেছেন। এই প্রকল্পের ব্যয় ১৩৭৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা, যার মধ্যে সরকারি খাতের অর্থায়ন ১৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আর বাকি ১৩৬৫ কোটি টাকা বিশ্বব্যাংকের আইডিএ ঋণ।

আরো দেখুন