সিনিয়র শিক্ষক
২৩ নভেম্বর, ২০২০ ১০:০৬ অপরাহ্ণ
ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা কমাতে কী করবেন?
অনেকেই
ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভোগেন। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
এক জটিল সমস্যা। শরীরে এই অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে
যায়। এমনকি কিডনি অকেজো হওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। সাধারণত অস্বাস্থ্যকর
খাদ্যাভাস এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার কারণে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ
বেড়ে যায়। এ ছাড়া কারও কারও ক্ষেত্রে জিনগত সমস্যার কারণেও এটা হতে পারে।
ইউরিক
অ্যাসিড এমন এক ধরণের রাসায়নিক, যা খাবার হজম করার সময় শরীরে উৎপন্ন হয়।
ইউরিক অ্যাসিডে 'পিউরিনস' নামে এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা কিছু
কিছু খাবারের মধ্যে পাওয়া যায়। ইউরিক অ্যাসিড রক্তের সঙ্গে মিশে কিডনিতে
পরিশোধিত হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। কিন্তু মাঝেমধ্যে শরীর এত বেশি
পরিমাণের ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদন করে যে তা ঠিক মতো পরিশোধিত হতে পারে না।
তখন নানা সমস্যা দেখা দেয়। শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমাতে বা
বাড়াতে কিছু কিছু খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ কারণে ইউরিক অ্যাসিড
নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাবারের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। সেই সঙ্গে জীবনযাপন
পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা জরুরি। যেমন-
১.
রান্নায় তেল মসলা কম দিন। এছাড়া বড় মাছ, রেড মিট, দুধ, বেকন, কলিজা,
চিনি এড়িয়ে চলুন। ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা হলে সামুদ্রিক মাছও এড়িয়ে চলুন।
২.
ফ্যাট ফ্রি দুধ খাওয়া শুরু করুন। এছাড়া পিনাট বাটার, ফল, শাকসবজি বেশি
পরিমাণে খান। শস্যদানা, রুটি, আলু খেতে পারেন। এছাড়া দুধ ও চিনি ছাড়া
ব্ল্যাক কফি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৩. অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ থেকে দূরে থাকুন।
৪.
নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এ জন্য হাঁটা বা সাঁতার বেছে নিতে পারেন। ওজন
নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, হৃদরোগ থাকলে ইউরিক
অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে সবসময় নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল
হোন।
৫. বাজারে পাওয়া জুস, কোমল পানীয়, লাচ্ছি খাওয়া একদমই ঠিক নয়। এতে বিপাকে সমস্যা হয়।
৬.
চায়ের বদলে কফি খাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন তিন থেকে চার কাপ কালো কফি
খেলে শরীর ভালো থাকে। তবে এতে যাতে কিডনির সমস্যা না হয় সেদিকে লক্ষ্য
রাখতে হবে।
৭. খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি রাখুন। নিয়মিত লেবু বা ভিটামিন সি-যুক্ত ফল খান। ভিটামিন সি ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে দারুণ কাজ করে।
৮.
প্রোটিন হজমের পর শরীর অ্যামোনিয়া উৎপন্ন করে। এর থেকেও ইউরিক অ্যাসিড
সৃষ্টি হয়। তাই অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ বন্ধ করুন। যারা নিয়মিত ব্যায়াম
করেন বা পরিশ্রমসাধ্য কাজ করেন তারা সামান্য বেশি প্রোটিন খেতে পারেন।
ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা কমাতে খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার যোগ করতে পারেন। যেমন-
১. চর্বিহীন মাংস। এক্ষেত্রে ছোট মুরগির মাংস খেতে পারেন। এছাড়া মাছ, কুসুম ছাড়া ডিম পরিমাণ মতো খাওয়া যেতে পারে।
২.
বেশি আঁশযুক্ত ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার খেতে পারেন। এর জন্য লেবু
চা, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল (পেয়ারা, আমলকী, কমলা, মাল্টা), গ্রিন টি
ইত্যাদি খেতে পারেন।
৩. প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করুন।