Loading..

ভিডিও ক্লাস

০৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

الرحمة علي الخلق - সৃষ্টি জীবের প্রতি দয়া - নুরুল হক - BY NIDM
পৃথিবীর সবকিছু আল্লাহর সৃষ্টি। সব সৃষ্টির প্রতি দয়া করতে হবে। বিশেষভাবে সৃষ্ট জীবের প্রতি দয়া করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জরুরি। আল্লাহ সেই বান্দাকে বেশি ভালোবাসেন যে সৃষ্ট জীবের প্রতি বেশি দয়াবান। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব সময় দয়া ও মেহেরবানির প্রতি উদ্বুদ্ধ করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ মেহেরবান। তিনি মেহেরবানি পছন্দ করেন। মেহেরবানির জন্য তিনি যা দান করেন কঠোরতার জন্য তা দান করেন না। মেহেরবানি ছাড়া অন্য কিছুতেই তা দান করেন না।’ মুসলিম। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আমি কি তোমাদের ওই ব্যক্তির সংবাদ দেব না যার ওপর দোজখের আগুন হারাম এবং যে ব্যক্তি দোজখের জন্য হারাম। সে হলো ওই ব্যক্তি, যে ভদ্র, মিশুক ও বিনম্র।’ আবু দাউদ, তিরমিজি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘অনুগ্রহকারীদের প্রতি পরম করুণাময় অনুগ্রহ করেন। তোমরা দুনিয়াবাসীর ওপর অনুগ্রহ কর, এতে আসমানে অবস্থানকারী তোমাদের ওপর অনুগ্রহ করবেন।’ আবু দাউদ, তিরমিজি। সৃষ্ট জীবের ওপর দয়া করার কারণে আল্লাহ কঠিন গুনাহও মাফ করে দেন। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে চলছিল। তার খুব পিপাসা পেল। তারপর একটি কুয়া পেল। সে তাতে নেমে পানি পান করল। কুয়া থেকে বেরিয়ে দেখল, একটি কুকুর পিপাসায় বারবার জিভ বের করে কাদামাটি চাটছে। লোকটি মনে মনে বলল, পিপাসার কারণে আমার যে অবস্থা হয়েছিল কুকুরটিরও সে অবস্থা হয়েছে। তারপর সে আবার কুয়ায় নেমে নিজের পা-মোজায় পানি ভরে ওপরে নিয়ে এলো এবং কুকুরটিকে পানি পান করাল। এ কারণে আল্লাহ তাকে প্রতিদান দিলেন এবং তাকে মাফ করে দিলেন।’ সাহাবিরা আরজ করলেন, ‘হে আল্লাহর রসুল! চতুষ্পদ প্রাণীর কারণেও কি আমাদের জন্য সওয়াব রয়েছে?’ তিনি বললেন , ‘হ্যাঁ, প্রত্যেক জীবন্ত প্রাণীর মধ্যেই সওয়াব রয়েছে।’ বুখারি, মুসলিম। প্রিয় পাঠক! সৃষ্ট জীবের প্রতি দয়া করা যেমন সওয়াবের কাজ তেমন সৃষ্ট জীবকে কষ্ট দেওয়া গুনাহের কারণ। হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘এক মহিলা একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছে। কেননা সে তাকে বেঁধে রেখেছে আর কোনো খাবার দেয়নি। জমিনে পোকামাকড় খাওয়ার জন্য তাকে সে ছেড়ে দেয়নি।’ বুখারি, মুসলিম। আমরা যদি কারও উপকার করতে না-ও পারি তাহলে যেন সবার সঙ্গে ভালো কথা বলি। কারণ, ভালো কথা বলার বিনিময়েও রয়েছে সওয়াব। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘উত্তম কথাও সদকা।’ বুখারি। অর্থাৎ সদকা করলে যে সওয়াব, উত্তম কথা বললেও সেই সওয়াব। আল্লাহ যেন আমাদের সেই তৌফিক দান করেন।