Loading..

প্রকাশনা

২৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৪:৩৩ অপরাহ্ণ

অভিনেতা আবদুল কাদের

অভিনেতা আবদুল কাদের

ক্যান্সারের_পর_করোনায়_আক্রান্ত_হয়ে আজ সকাল ৮:২০মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন অভিনেতা আবদুল কাদের। তাঁর বিদেহী আত্মার চির শান্তি কামনা করি।

বেশ কিছুদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ ছিলেন অভিনেতা আবদুল কাদের। চিকিৎসা করাতে চেন্নাইতে গিয়েছিলেন। পরে সেখানকার হাসপাতালের পরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়েছিল। তাঁর শরীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল । এই অভিনেতার রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গিয়ে অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যায়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই অভিনেতার পুত্রবধূ।

চেন্নাইয়ের ক্রিস্টিয়ান মেডিকেল হাসপাতাল থেকে বিস্তারিত জানান পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি। জানালেন, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর শ্বশুর অসুস্থ ছিলেন। ঠিকমতো খেতে পারছিলেন না। বিভিন্ন হাসপাতালে একাধিকবার পরীক্ষা নিরীক্ষার করেও তাঁর কোনো রোগ ধরা পড়ছিল না। পরে সর্বশেষ পুরো শরীর সিটি স্ক্যান করে জানা যায় এই অভিনেতার টিউমার হয়েছে। তিনি বলেন, ‘টিউমার ধরা পড়ার পর আমরা পারিবারিক সিদ্ধান্তে ৮ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ের হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলাম। ১৫ ডিসেম্বর ডাক্তাররা বোর্ড মিটিংয় করে বললেন, আমার শ্বশুরের ক্যানসার যা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল যেটা চতুর্থ স্টেজে আছে।

স্থানীয় হাসপাতালে ধারণা দেওয়া হয়েছিল তার শরীরে ক্যানসার হতে পারে। সেটিই চেন্নাইতে চূড়ান্ত জানিয়ে দিলছিল।

কোথাও কেউ নেইধারাবাহিক নাটকে বদিচরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন আবদুল কাদের

আবদুল কাদের কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা কোথাও কেউ নেইধারাবাহিক নাটকে বদিচরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। এ ছাড়া জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির পরিচিত মুখ তিনি। হাস্যরসাত্মক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি তুমুল জনপ্রিয় টেলিভিশনের পর্দায়।

#অভিনেতা আবদুল কাদের

#জন্ম: মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার সোনারং গ্রামে। #পিতা: মরহুম আবদুল জলিল।#মাতা: মরহুমা আনোয়ারা খাতুন।

#স্ত্রী: খাইরুননেছা কাদের।তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।

সোনারং হাইস্কুল ও বন্দর হাইস্কুল থেকে এস.এস.সি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচ.এস.সি ও #ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স ও এমএ করেন।

অর্থনীতিতে সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনা এবং বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ হিসেবে চাকরির পর ১৯৭৯ সাল থেকে আর্ন্তজাতিক কোম্পানী বাটাতে চাকুরিরত।

এদেশের #নাট্যাঙ্গনে আবদুল কাদের একটি সুপরিচিত নাম। স্কুল জীবন থেকেই অভিনয় শুরু হয় তার।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ডাকঘরনাটকে অমল চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার #প্রথম নাটকে অভিনয় শুরু।

১৯৭২-৭৪ পরপর তিন বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মহসিন হল ছাত্র সংসদের #নাট্যসম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে আন্তঃহল নাট্য প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন মহসিন হলের নাটক সেলিম আল দীন রচিত ও নাসিরউদ্দিন ইউসুফ নির্দেশিত জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন’ -এ অভিনেতা হিসেবে পুরষ্কার লাভ করেন।

#বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রযোজিত বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ জ্ঞানের অনুষ্ঠান বলুন দেখি’ -তে চ্যাম্পিয়ান দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে পুরষ্কারও লাভ করেন আবদুল কাদের।

১৯৭৫ সাল পর্যন্ত #ডাকসু নাট্যচক্রের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সাল থেকে থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য এবং চার বছর যুগ্ম-সম্পাদকের ও ছয় বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে থিয়েটারের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) হিসেবে আছেন।

১৯৭৪ সালে ঢাকায় আমেরিকান কলেজ থিয়েটার ট্রুপ কর্তৃক আয়োজিত অভিনয় কর্মশালায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সাল থেকে টেলিভিশন ও ১৯৭৩ সাল থেকে রেডিও নাটকে অভিনয় শুরু হয় তার। টেলিভিশনে তার অভিনিত প্রথম কিশোর ধারাবাহিক

নাটক এসো গল্পের দেশে

আবদুল কাদের #বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাট্যশিল্পী ও নাট্যকারদের একমাত্র সংগঠন টেলিভিশন নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদটেনাশিনাস -এর #সহ-সভাপতি।

থিয়েটারের প্রায় ৩০টি প্রযোজনায় প্রতিটিতে অভিনয় এবং ১০০০টিরও বেশী প্রদর্শনীতে অভিনয়ে অংশগ্রহণ করেছেন।

উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক: পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, এখনও ক্রীতদাস, তোমরাই, স্পর্ধা, দুই বোন, মেরাজ ফকিরের মা।

১৯৮২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবে বাংলাদেশের নাটক থিয়েটারের পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ -এ অভিনয়। এছাড়া দেশের বাইরে জাপান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, কোলকাতা, দিল্লী, দুবাই এবং দেশের প্রায় সবকটি জেলায় আমন্ত্রিত অভিনয় করেছেন। এছাড়া টেলিভিশনে দুই হাজারের বেশী নাটকে অভিনয় করেছেন।

#উল্লেখযোগ্য_টিভিনাটক: কোথাও কেউ নেই, মাটির কোলে, নক্ষত্রের রাত, শীর্ষবিন্দু, সবুজ সাথী, তিন টেক্কা, যুবরাজ, আগুন লাগা সন্ধ্যা, এই সেই কন্ঠস্বর, আমার দেশের লাগি, প্যাকেজ সংবাদ, সবুজ ছায়া, কার ছায়া ছিল, দীঘল গায়ের কন্যা, কুসুম কুসুম ভালোবাসা, নীতু তোমাকে ভালোবাসি, আমাদের ছোট নদী, ভালমন্দ মানুষেরা, দুরের আকাশ, ফুটানী বাবুরা, হারানো সুর, দুলা ভাই, অজ্ঞান পার্টি, লোভ, মোবারকের ঈদ, বহুরুপী, এই মেকাপ, ঢুলী বাড়ী, সাত গোয়েন্দা, এক জনমে, জল পড়ে পাতা নড়ে, খান বাহাদুরের তিন ছেলে, ইন্টারনেটের বউ, ঈদ মোবারক, সিটিজেন, হতাই, ফাঁপড়, চারবিবি, সুন্দরপুর কতদুর, ভালবাসার ডাক্তার, চোরাগলী, বয়রা পরিবার।

চলচ্চিত্রে উল্লেখযোগ্য অভিনয়: রং নাম্বার।

অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনের কাজও করেছেন এ সফল অভিনেতা।

উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞাপনচিত্র: গরু মার্কা ঢেউ টিন, বম্বে সুইটস এর চিকেন ক্রেকার্স, ভালো বীজে ভালো ফসল, এলিফ্যান্ট কিং মশার কয়েল, ইকোনো বল পেন, চাকা বল সাবান, জংশেন মোটর সাইকেল, এলজি এয়ার কন্ডিশনার, কোয়ালিটি আইসক্রীম, ক্রাউন মেলামাইন, অশোক লিলেন্ড, কেয়া শেভিং ক্রিম, ডেক্সট্রোজ, পারফেক্ট মিটার, হার্ট ফাউন্ডেশন লটারী, গাজী ট্যাংক, মাইওয়ান টিভি, কোয়ালিটি গুড়ো দুধ, প্রমি গুড়া মশলা, মোবাইল বাজার, সবুজ ছায়া গোল্ডেন সিটি, হিমতাজ তৈল, তালুকদার গ্রপ ইউপিভিসি পাইপ।

পুরস্কার প্রাপ্তিঃ

১. চ্যানেল আই ঝিলিক ঈদ আনন্দ পুরষ্কার

২. টেনাশিনাস পদক

৩. মহানগরী সাংস্কৃতিক ফোরাম পদক

৪. অগ্রগামী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক

৫. যাদুকর পি.সি. সরকার পদক

৬. টেলিভিশন দর্শক ফোরাম এ্যাওয়ার্ড

৭. মহানগরী এ্যাওয়ার্ড

 

তথ্য সংগ্রহে ও সম্পাদনায়

মৃণাল কান্তি সাহা

সহকারি প্রধান শিক্ষক

বাংগাখাঁ উচ্চ বিদ্যালয়

লক্ষ্মীপুর।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি