Loading..

ম্যাগাজিন

১৮ জানুয়ারি, ২০২১ ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ

"মালটা" নাম কেন ও কিভাবে এর উৎপত্তি ? পুষ্টিগুণ যার অসাধারণ !

"মালটা" নাম কেন কিভাবে এর উৎপত্তি ? পুষ্টিগুণ যার অসাধারণ !

 

> কমলালেবু এবং জাম্বুরা এই দুই ফলের cross breeding বা সংকরায়নের মাধ্যমে মাল্টা ফলের উদ্ভাবন করা হয়েছে।

মালটা এবং জাম্বুরা সংকরায়ন হয় দক্ষিণ স্পেনে মালটায়। চীন দেশের কমলালেবু ওয়েস্ট ইন্ডিজের জাম্বুরা শেষমেষ স্পেনে ক্রস ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে রূপান্তরিত হয় মালটায়।

 

অবাক ‌‌‌‌‌‌‌‌কান্ড, তাই না?‌‌‌ পৃথিবীর দুই প্রান্তের দুই মহাদেশের দুই ফল নিয়ে ইউরোপিয়ানরা বানিয়ে ফেলে মালটা। কোথাকার পানি কোথায় গড়ায় ? ইউরোপের মাল্টা দ্বীপের নাম থেকেই ফলটির নামকরণ মালটা হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে বলা হত Maltese orange বা Blood orange.

উর্দু ভাষাতেও একে 'মাল্টা' বলা হয়। এছাড়া হিন্দিতে একে 'সান্তারা' বলা হয়।

 

মালটা প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় এবং দামেও বেশ সস্তা। একমাত্র মালটা ফলেই ফরমালিনমুক্ত ফল হিসাবে দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। মাল্টা গাছ থেকে পাড়ার পরও একমাস অক্ষত থাকে বলেই ফরমালিন মেশাতে হয়না। জনপ্রিয় এই ফলটির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। মালটাতে আছে, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, এবং চর্বিমুক্ত ক্যালরি। এছাড়াও মালটাতে আর অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে।

 

. এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস মূহের সমৃদ্ধ উৎস। এটি ত্বকে সজীবতা বজায় রাখে এবং ত্বকের বলি রেখা প্রতিরোধ করে লাবণ্য ধরে রাখে। মালটা ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি প্রদাহ জনিত রোগ সারিয়ে তোলে।

 

. এক গ্লাস মাল্টার জুসকে ভিটামিন সি এর সবচেয়ে কার্যকর উৎস বলে মনে করা হয়। এটাকে ভিটামিন সি ট্যাবলেট হিসেবেও গ্রহণ করা যায়।

 

. মালটার ভিটামিন সি উপাদান আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এটি আমাদের শরীরের কোলন ক্যান্সার ব্রেস্ট ক্যান্সারের অন্যতম সেল প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

 

. উচ্চ মাত্রায় ওষুধ সেবনের সময় মালটার লো-কলেস্টরেল শরীরে ওষুধের পার্শ প্রতিক্রিয়া হৃাস করে।

 

. এতে উপস্থিত পটাশিয়াম ইকেট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখে এবং কার্ডিও ভাস্কুলার সিস্টেম ভালো রাখতে সহায়তা করে।

 

. মালটা পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে। নিয়মিত মালটা খাওয়ার অভ্যাস পাকস্থলীর আলসার কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সুরক্ষা দেবে। পাকস্থলীকে রাখবে সবল।

 

. গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, মাল্টায় উপস্থিত লিমিণয়েড, মুখ, ত্বক, ফুসফুস, পাকস্থলী কোমল স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।

 

. মাল্টায় উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন সেল ড্যামেজ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, যা দাঁত হাঁড়ের গঠনে সাহায্য করে।

 

. প্রতিদিন একটি করে মাল্টা খাওয়ার অভ্যাস আপনার দৃষ্টিশক্তিকে ভাল রাখে। কারণ, মালটায় রয়েছে ভিটামিন , সি পটাসিয়াম। ভিটামিনগুলো আপনার দৃষ্টিশক্তির জন্য বেশ উপকারী।

 

১০. এতে ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে। এন্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে ওজন কমাতেও সহায়তা করে।

 

বিঃদ্রঃ মালটার বেশ কিছু ঔষধি গুণের কারণে একে প্রাকৃতিক টনিকও বলে। যেমন- সর্দি, নাক বন্ধ থাকা, টনসিলের সমস্যা, গলাব্যথা, জ্বরজ্বর ভাব, হাঁচি, কাশি, মাথাব্যথা ঠান্ডাজনিত দুর্বলতা সমস্যাগুলো দূর করে খুব সহজে।

শীতকালীন ঠোঁট ফাটা, পা হাতের তালু ফাটা রোগ রোধ করে মালটা। এটি দাঁত, চুল, ত্বক, নখের পুষ্টি জোগায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত মালটা খান, তাদের দাঁতের রোগ অনেক কম হয়।

জিহ্বায় ঘা, ঠোঁটের কোণায় ঘা, জ্বরের সময় জ্বরঠুঁটোসহ ত্বক জিহ্বার অনেক রোগ ভালো করে ফলটি।

নিয়মিত মালটা খেলে দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়। চোখের বা দেহে যে কোনো ঘা, কাটা, সেলাইজনিত ত্বক দ্রুত ভালো হতে প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত ভিটামিন সি মালটায় পাওয়া যায়। প্রবীণ, গর্ভবতী নারী, মাতৃদুগ্ধদানকারী মহিলাকে নিয়মিত মালটা খাওয়া উচিত, কারণ এতে দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। ত্বক চেহারার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে মালটার জুড়ি নেই।

 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি