সহকারী শিক্ষক
১৮ জানুয়ারি, ২০২১ ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ
উদ্ভিদের নাম: বকুল, Bokul. বোটানিক্যাল নাম: Mimusops elengi Linn. ফ্যামিলি নাম: Sapotaceae. ভেষজ নাম: Mimusops.
উদ্ভিদের নাম: বকুল, Bokul.
বোটানিক্যাল নাম: Mimusops elengi Linn. ফ্যামিলি নাম: Sapotaceae.
ভেষজ নাম: Mimusops.
ব্যবহার্য অংশ: গাছ বা মূলের ছাল, কাঁচা ও পাকা ফল, ফুল ও বীজ। গ্রীষ্মকাল থেকে শুরু করে শরত কাল পযন্ত গাছে ফুল আসে। তাছাড়া কোনো কোনো গাছে সারা বছর ফুল হয়, চির হরিৎ বৃক্ষ। বকুল ফুল, ফল, পাকা ফল, পাতা, গাছের ছাল, কাণ্ড, কাঠ সব কিছুই কাজে লাগে।
দেখতে ছোট ছোট তারার মতো ফুল গুলো যখন ফোটে তখন গাছের চেহারা হয় অন্যরকম। এবং মাটি যখন ঝড়ে পরে তার দৃশ্য নয়নাভিরাম। বকুল ছোট তারার মত হলুদাভ সাদা বা ক্রীম রঙের হয়। এই ফুল রাত্রে ফোটে এবং সারাদিন ধরে টুপটাপ ঝরতে থাকে। ভারি সুগন্ধী এই বকুল। শুকনো বকুল ফুলের সুগন্ধটা অনেকদিন থাকে তাই এই ফুলের মালা অনেকদিন ঘরে রেখে দেয়া যায়। ফুল দিয়ে মালা গাথার প্রচলন অনেক পুরনো দিন থেকে চলে আসছে। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন এলাকার নারীরা এই ফুলের মালা চুলে পরে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্যে।
উদ্ভিদের ঔষধি গুণাগুণ:
বকুলের ফল থেকে উৎকৃষ্ট মদ তৈরী হয়। এ ছাড়া শ্বেতীরোগ, দাঁতেরপোকা রোগ, মাথার যন্ত্রনা, শিশুদের কোষ্ঠবদ্ধতায় পুরাতন আমাশয় শুক্র তারল্য ইত্যাদি রোগে ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। পাকা ফল খাওয়া যায়। মালয়'রা বকুল ফল সংরক্ষণ করে রাখে এবং আচার তৈরি করে।
মুত্রশিথিলতায়ঃ যাদের মুত্রবেগ কখনো ঢিলে কখনো কষা হয় এক্ষেত্রে বকুলছাল ১০ গ্রাম একটু করে কুটে থেঁতো করে ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ২ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে সেটাকে সকাল, বিকাল ও রাত্রে ৩ বার খেতে হবে। প্রত্যহ আহারের পর ১ চা চামচ করে ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে ১৫/২০ দিন খেলে অপুষ্টি জনিত শুক্রতারল্যও সেরে যায়।
শ্বেতী রোগে: সব শ্বেতীর রং একরকম হয়না। যার রং দুধের মত সাদা হয়ে গিয়েছে সেগুলি দুঃসাধ্য বলা চলে। এই রকম সাদা দাগ একটু মেদযুক্ত লোকের বেশী হয়। রোগা লোকের সাধারনত: বেশী হয়না। আর যে দাগ গুলি একটু লালচে বা তামাটে রঙের, সেগুলি সকলের হ’তে পারে। এ ক্ষেত্রে বকুল ছালের ঘন ক্বাথে বকুল বীজ ঘষে ঐ দাগে আস্তে আস্তে ঘসে লাগাতে হবে। এর দ্বারা ঐ দাগগুলি ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে।
মাথার যন্ত্রনায়: বকুল ফুলের গুঁড়োর আট ভাগের এক ভাগ ফিটকিরির গুঁড়ো মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। সর্দি হয়ে সে সর্দি বসে মাথার যন্ত্রনা হলে এই নস্যিটা ব্যবহার করলে যন্ত্রনা সেরে যাবে।
দাঁত পড়ায়- অল্প বয়সে যাঁদের দাঁত নড়ে যাছে বা পড়ে যাছে তারা কাঁচা বকুল ফল কিছুদিন চিবুলে দাঁতের গোড়া শক্ত হয়ে যাবে। তা না হলে কাঁচা ফলকে পেড়ে শুকিয়ে সেই শুকনো ফলের শাঁসের গুঁড়ো দিয়ে দাঁত মাজলে অকালে আর দাঁত পড়া ও নড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
শিশুদের কোষ্ঠ বদ্ধতায়:
বকুল বীজের অভ্যন্তরেরটা বাদ দিয়ে শক্ত অংশটা মিহি চূর্ণ করে পুরাতন ঘি এর সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেটাকে পানের বোঁটায় লাগিয়ে শিশুর মলদ্বারে দিলে ১০/১৫ মিনিটের ভিতর কোষ্ঠ পরিষ্কার হয়ে যায়।তারপর কোনো স্নেহ জাতীয় দ্রব্য যেমন নারকেল তেল বা ঘি লাগিয়ে দিতে হয়।
পুরাতন আমাশয় রোগে: প্রত্যহ কয়েকটি পাকা বকুল ফলের শাঁস খেলে এ রোগের উপশম হয়।
সূত্রঃ চিরঞ্জীব বনৌষধী আয়ুর্বেদাচার্য ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা-২৬৪।