Loading..

ভিডিও ক্লাস

০২ ফেব্রুয়ারি , ২০২১ ০৪:০০ অপরাহ্ণ

বই পড়া-নবম, মোঃ মোকলেছ উদ্দিন- সিনিয়র শিক্ষক, নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা।

বই পড়া-নবম, মোঃ মোকলেছ উদ্দিন- সিনিয়র শিক্ষক, নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা। জীবনে সফলতা অর্জন করতে হলে বেশ কিছু গুণাবলি বা দক্ষতার প্রয়োজন পড়ে, হোক সেটি ব্যক্তিগত জীবন কিংবা চাকুরীজীবন। এমন অনেক সফল ব্যক্তিত্বের উদাহরণ রয়েছে যাঁরা নিজের চেষ্টায় বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন। Warren Buffett, Bill Gates, Mark Cuban, Elon Musk, Mark Zuckerberg তাদের কে না চেনে! তাঁরা রয়েছেন পৃথিবীর সবচেয়ে সফল ব্যক্তিদের তালিকায় শীর্ষ স্থানে।তোমরা কি জানো তাদের সবার মধ্যে একটি সাধারণ গুণাবলি রয়েছে। অনেকেই অনেক উত্তর বলবে কিন্তু সঠিক উত্তর কি জানো? সঠিক উত্তর হচ্ছে তাঁরা সবাই নিয়মিত বই পড়েন। তাঁদের মধ্যে জ্ঞান এর প্রতি যে অসীম তৃষ্ণা রয়েছে তা মেটানোর জন্যই হচ্ছে বই পড়া। Warren Buffett তাঁর পেশা জীবনের শুরুতে প্রতিদিন ৬০০-১০০০ পৃষ্ঠা নিয়মিত পড়তেন। Bill Gates প্রতিবছর ৫০ টি বই শেষ করেন। Elon Mask রকেট সায়েন্স এর বিদ্যা বই পড়ার মাধ্যমেই অর্জন করেছেন। Mark Cuban প্রতিদিন ৩ ঘণ্টার বেশি বই পড়েন।সুতরাং দেখা যাচ্ছে, তাঁরা সফল হওয়া সত্ত্বেও তাদের জানার প্রতি রয়েছে অসীম আগ্রহ। তাই তাঁদের কাছে বই পড়ার গুরুত্ব কমে যায় নি। কারণ তারা জানেন বই পড়েই হওয়া যায় অনেক গুণাবলির অধিকারী। আজকে আমরা দেখবো বই কীভাবে আমাদের বিভিন্ন দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে। ১। মানসিক উত্তেজনা: বই পড়ার সর্বপ্রথম উপকারিতা হচ্ছে মানসিক উত্তেজনা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, অধ্যয়ন Dementia এবং Alzheimer’s নামের এই রোগ দুটিকে হ্রাস এমনকি প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। মস্তিষ্ককে সচল রাখলে তা কখনোই তার ক্ষমতা হারাবে না। মস্তিষ্ককে শরীরের একটি সাধারণ পেশী হিসেবে বিবেচনা করে, নিয়মিত ব্যায়াম করলে তা শক্তিশালী এবং ফিট থাকবে। তোমরা একটি কথা নিশ্চয়ই শুনেছ ‘Use it or lose it’। মস্তিষ্কের ক্ষেত্রেও এ কথাটি প্রযোজ্য। এছাড়া তোমার মস্তিষ্ককে সচল রাখতে বিভিন্ন খেলা খেলতে পারো। যেমন: দাবা কিংবা ধাঁধা মেলানোও যেতে পারে। যা-ই কর না কেন বই পড়ার প্রয়োজনীয়তা ভুলে গেলে চলবে না। ২। মানসিক চাপ হ্রাস: কিছু মানুষ তাদের মানসিক চাপ কমাতে ব্যায়ামের আশ্রয় নেয়, কেউ কেউ আবার যোগব্যায়ামের দ্বারস্থ হয় তাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে। জীবনে এমন কোন মানসিক চাপ নেই সেটি যেই পরিমাণই হোক না কেন, যা একটি ভালো গল্প সমাধান করতে পারে না। বই পড়ার মজা হচ্ছে এটি তোমাকে মুহূর্তের মধ্যেই কোন এক অজানা জগতে নিয়ে যাবে কিংবা এমন কোন সময়ে তুমি ভ্রমণ করবে যা তুমি কখনো কল্পনাও করোনি। একটি ভালো অনুচ্ছেদ তোমাকে প্রতিদিনের বাস্তবতা থেকে একটু হলেও রেহাই দেবে। এমনিভাবে তোমার মানসিক চাপ কমিয়ে শেষে তোমার মানসিক প্রশান্তি ফিরিয়ে আনবে।৩। শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধি: বই পড়া শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধিতে অনেক বেশি সাহায্য করে। যত বেশি বই পড়বে তত বেশি তোমার শব্দভাণ্ডারে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শব্দ যোগ হতে থাকবে। এবং এক সময় লক্ষ্য করবে তুমি তোমার কথাবার্তায় প্রায়ই সেসব শব্দ ব্যবহার করছো। এসব শব্দ ব্যবহার করে তুমি খুব সহজেই এবং স্পষ্টভাবে নিজেকে অন্যের কাছে তুলে ধরতে পারছো। নিজেকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা তোমার চাকুরিজীবনে এমনকি বাক্তিগত জীবনেও কী পরিমাণ সহায়ক হবে তা অবশ্যই তোমার অজানা নয়। এমনকি তোমার আত্মবিশ্বাস জোগাতেও অনেক সাহায্য করবে। নতুন কোন ভাষা শিখতেও বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। এটি তোমাকে খুব দ্রুত নতুন কোন ভাষা আয়ত্ত করতে সহায়তা করবে। ৪। স্মৃতিশক্তি উন্নত করে: তুমি যখন একটি বই পড় সেখানে দেখবে বিভিন্ন তথ্য দেয়া থাকে যা তোমাকে গল্পের স্বার্থেই মনে রাখতে হয়। যেমন: বিভিন্ন চরিত্র, ইতিহাস, পটভূমি, গল্পের উদ্দেশ্য, উপ-খণ্ড ইত্যাদি। এসব তথ্য আমাদের কাছে অতিরিক্ত মনে হলেও মস্তিষ্কের অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে সবকিছু মনে রাখার। প্রত্যেকটি নতুন স্মৃতি একটি নতুন Synapse তৈরি করে এবং বিদ্যমান স্মৃতিকে আরও শক্তিশালী করে এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিকে আরও উন্নত করে। ৫। Analytical thinking কে উন্নত করে: বই পড়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হচ্ছে Analytical thinking কে উন্নত করা। অনেকের কাজের ক্ষেত্রে দেখা যায় Analytical thinking খুব দরকার পড়ে, সেই ক্ষেত্রে বই পড়া খুব কাজে লাগতে পারে। এমনকি কখনো হয়েছে যে তুমি কোন রহস্যমূলক বই পড়ছো এবং পুরো বই পড়ার আগেই তুমি রহস্যটি সমাধান করে ফেলেছো? তার মানে তোমার ভালো দক্ষতা রয়েছে। মানুষের জীবনেও এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি হয় যেখানে Analytical thinking দিয়েই সেসব পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। ৬। অন্যের থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন: তুমি বইয়ে যা পড়ছো তা মূলত কারও বিশেষ জ্ঞান কিংবা অভিজ্ঞতা থেকেই লেখা। সেই জ্ঞান তোমার সফলতাকে ত্বরান্বিত করবে একটি বিশেষ লক্ষ্যের দিকে, যেহেতু তোমাকে একটি সঠিক পথ অবলম্বন করার উপদেশ দেয়া হবে এবং ভুলগুলো চিহ্নিত করে দেয়া হবে। বিভিন্ন বইয়ে দেখবে লেখক তার জীবনের সফলতা এবং ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা করে এবং সেই ব্যর্থতা থেকে উপরে উঠতে থাকে বিভিন্ন উপদেশ।