Loading..

প্রকাশনা

০৮ মার্চ, ২০২১ ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

**ইসলামে নারীর আধিকার/মর্যাদা** **ইসলামে নারীর আধিকার/মর্যাদা**

**ইসলামে নারীর আধিকার/মর্যাদা**

 

পবিত্র কুরআন হাদীস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ইসলাম নারীজাতিকে যে আধিকার দিয়েছে, সে মর্যাদা বা সম্মান ইতোপূর্বে কোন ধর্ম দিতে পারেনি।

মহান আল্লাহ নারীজাতি তথা মায়ের জাতিকে সম্মান মর্যাদা দিতে গিয়ে কুরআনের যেখানেই পুরুষের কথা উল্লেখ করেছেন, সেখানেই নারীর কথা উল্লেখ করেছেন। এতে করে তিনি উভয়ের মর্যাদা, অধিকারকে সমান সমুন্নত করেছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে ইসলাম নারীজাতিকে সমান অধিকারের জায়গায় বরং বেশি অধিকারই দিয়েছেন। যেমন: বিবাহে দেন মোহর প্রাপ্তি, মাতা-পিতার রেখে যাওয়া সম্পদের অধিকার ইত্যাদি। তাছাড়া নারীদের বিবাহপূর্ব ভরণ-পোষণের দায়িত্ব থাকে মা-বাবার ওপর আর বিবাহের পর সে দায়িত্ব গিয়ে পড়ে তাঁর স্বামীর ওপর। আবার স্বামীর ইন্তেকালে সন্তানরাই তারঁ ভরণ-পোষণের ভার গ্রহণ করেন। কিন্তু অন্য কোন ধর্মে অধিকার দেওয়া হয়নি। তাছাড়া ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ শ্রেষ্ঠ নবী এক সাহাবির সবচেয়ে বেশি মর্যাদাপূর্ণ ব্যবহার পাওয়ার হকদার কে? প্রশ্নের উত্তরে পরপর তিনবার মায়ের কথা উল্লেখ করে চতুর্থবার বাবার কথা উল্লেখ করেছেন।

কিন্তু সবার মনে রাখতে হবে, অধিকার সমান হলেও দায়িত্ব যে আলাদা এবং দায়িত্বের ক্ষেত্রে পূরুষ যে আবার নারীর পরিচালক একথাও তিনি স্পষ্ট করেছেন। কারণ প্রতিটা ক্ষেত্রে একটা প্রতিষ্ঠান কিংবা সংসারে কোন একজনকে অবশ্যই পরিচালক হতে হয়। ক্ষেত্রে সংসারে পরিচালকের দায়িত্বটা আল্লাহ পূরুষকেই ন্যস্ত করেছেন। আল্লাহ তাআলা যেহেতু আমাদের খালেক তথা সৃষ্টিকর্তা সেহেতু তিনিই ভাল জানেন কার দায়িত্ব বা কাজ কোনটা হলে ভাল হবে, যেমন একজন মোবাইল তৈরি কারক বলতে পারবেন তার মোবাইলের কোন অংশের কি কাজ হবে। আর তাইতো তিনি সূরা নিসার ৩৪ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন- পূরুষরা হচ্ছে নারীদের পরিচালক।

এভাবে রাসূল (সা.) নারীদের দায়িত্ব কর্তব্যের উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন- এবং মহিলারা হচ্ছে স্বামীর ঘর সন্তানের রক্ষক তথা রক্ষণাবেক্ষণকারী। (বুখারী: ৪৯০৪)

হাদীসে নারীজাতির দায়িত্বের ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট করেছেন। তিনি অন্য হাদীসে নারীজাতি তথা মায়ের জাতিকে সম্মানিতা মর্যদাশীলা করতে গিয়ে বলেন- মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। [নাসাঈ: হা. ৩১০৪, মুসনাদে আহমদ: হা ১৫৪৭৫] হাদীসে তিনি নারীজাতি তথা মায়ের জাতিকে মর্যাদার উচ্চ শিখরে বসিয়েছেন। এত অধিকার মর্যাদা দেওয়ার পরও বিশেষ কারণে আল্লাহ তাআলা নারীজাতির এই সব মর্যাদা সম্মান ধরে রাখতে তাদের চলাফেরা মেলামেশা আচার-আচরণের ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা আরোপ করেছেন। তিনি স্বয়ং নবী করীম (সা.) এর স্ত্রী পরিজন মুমিন নারীদের ব্যাপারে সূরা আহযাবের ৫৯ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন- হে নবী! আপনি আপনার বিবি, কন্যা এবং মুমিন মহিলাদের বলে দিন তারা যেন তাদের শরীর মুখণ্ডল চাদর দ্বারা আবৃত করে রাখে। [সূরা আহযাব : ৫৯]

আয়াতে কারীমা বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি নারীরা সৃষ্টিগতভাবে একটু দুর্বল প্রকৃতির এবং সৃষ্টি বৈচিত্রে তারা হচ্ছেন আকর্ষণীয়া। তাই মহান আল্লাহ তাদের হেফাজতের জন্য একথা বলেছেন। কুরআন, হাদীস ইসলামী সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন আর যুক্তি চিন্তার আলোকে বলা যায়, মহান আল্লাহ তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন উপাদানগত দিক দিয়ে পূরুষদের চোখে মোহনীয়া, আকর্ষণীয়া করেই। অনেক ক্ষেত্রে তাই তাদের লাগামহীন চলাফেরা পূরুষের সুপ্ত পাশবিকতাকে জাগিয়ে তোলে এবং অঘটনের সম্ভাবনা থাকে। কারণে সেদিকে খেয়াল রেখেই নারীদের চলাফেরা করা দরকার। আর কারণেই সমাজের প্রত্যেক কাজ কিংবা আচার-অনুষ্ঠানে তাদের অবাধ অংশ গ্রহণ বাঞ্চনীয় নয়। তবে তাদের উৎসাহ-উদ্দিপনা, ঐকান্তিক সহযোগিতা ছাড়া যে পুরুষজাতি কোন কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারবেনা তা আমি অস্বীকার করছিনা।

প্রসংঙ্গে কবির ভাষায় বলি-

পৃথিবীর যত সুন্দর সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর। আসুন সকলে ইসলামের আইন কানন মেনে চলে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করি।

 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি