Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

১৯ জুন, ২০২১ ১০:৪৫ অপরাহ্ণ

সাইবার_বুলিং_একটি_মানসিক_বৈকল্য

রাত ১২ টায় হয়ত কোন আর্টিকেল পড়ছি, কোন পোস্ট লিখছি কিংবা শুনছি পছন্দের কোন গান। আবার  কখনো নামের পাশে সবুজ বাতি, আমি অন্য কাজে ব্যস্ত। সেলফোন হাতে বসে নেই।  হঠাৎ আসল একটা নোংরা গা ঘিনঘিনে মেজেস!বলতে হয়, বলে শেখাতে হয় "Please be respectful at comment section."

এটিও একটি সাইবার বুলিং।

" সাইবার বুলিং "একটি মানসিক বৈকল্যর নাম। আজ শুক্রবার সাইবার বুলিং প্রতিরোধ দিবস। জুন মাসের তৃতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়। বাংলাদেশে এর আগে সেভাবে পালন করা না হলেও এবার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান দিবসটি পালন করছে। ‘স্টপ সাইবার বুলিং ডে’ ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৬০ শতাংশ অনলাইন বুলিং বা হয়রানির শিকার হয়। বাংলাদেশেও দিন দিন বাড়ছে এর মাত্রা। কীভাবে অনলাইনে হয়রানি থেকে শিক্ষার্থীসহ সবাই সচেতন হতে পারি, ভাবতে হবে।

অনলাইনে প্রলুব্ধ করে কাউকে অন্যায় কিছুতে উৎসাহিত করা বা কারো এ ধরণের কোনো দুর্বলতা নিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করা, ভয় দেখানো বা মানসিক নির্যাতন করা ‘সাইবার বুলিং’। শুরুতে টিনএজাররাই কেবল এ ধরণের সাইবার হয়রানির শিকার হলেও পরে দেখা যায় মধ্যবয়সীরাও প্রায়ই সাইবার বুলিং ভিক্টিম হয়ে থাকেন। নারীরা,মধ্যবয়সিরাও, বিশেষত শিক্ষিকাবৃন্দ বেশিরভাগ টার্গেটে পরিণত হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তালিকায় আছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ ফেসবুক ব্যবহারকারী গোষ্ঠীর একটি বড় অংশ। একটি বাজে কমেন্ট থেকে সারাদিন মন খারাপ তারপর আত্বহত্যার ঘটনাও ঘটেছে ।  দৈনিক প্রথম আলো প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী – বাংলাদেশের ৪৯% স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীই সাইবার বুলিং-এর নিয়মিত শিকার।

ইন্টারনেট আমাদের স্বাভাবিক জীবনের সঙ্গে যেমন জড়িয়ে আছে ঠিক তেমনি করোনা পরিস্থিতিতে এটি হয়েছে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অফিসের মিটিং, কেনাকাটা, অনলাইন ক্লাস সব কিছু এখন সম্পন্ন হচ্ছে ইন্টারনেটের দ্বারা। ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি)’ তথ্যানুযায়ী ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ১১ কোটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে।

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই সঙ্গে বাড়ছে ইন্টারনেট অপরাধও। ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে অপরাধ সংঘটিত হয় তাকে সাইবার অপরাধ বলে। বর্তমানে সাইবার অপরাধ একটি অতি পরিচিত আতঙ্কের নাম। ইন্টারনেট ব্যবহার করে সাইবার অপরাধীরা ব্যক্তি বা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক করে তথ্য চুরি বা বিকৃতি করা, ভুয়া আইডি বা ই-মেইল ব্যবহার করে ব্লগ বা মেইলে বা ওয়েবসাইটে হুমকি বা প্রতারণা করা, যৌন হয়রানি, ব্যক্তির নামে অপপ্রচার, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ চুরি, হ্যাকিংয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন লোভনীয় অফার লিংকের মাধ্যমে দেয়া ইত্যাদি সাইবার অপরাধগুলো সংঘটিত করে।

অপরাধের মধ্যে সাইবার বুলিং অন্যতম। সাইবার বুলিং হচ্ছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কারো ব্যক্তিগত দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে সম্মানহানি করা, ব্যক্তির নামে অপপ্রচার করা, ভয় দেখানো বা মানসিক নির্যাতন করা।  

আমাদের নিরাপদ ইন্টারনেটের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সাইবার বুলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় যথাযথ আইনের প্রয়োগ থাকতে হবে। ইন্টারনেটে যেন কাউকে হয়রানির শিকার হতে না হয়, কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক সহিংসতার সূত্রপাত যেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু না হয়, সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখতে হবে। সবার জন্য ইন্টারনেট হোক নিরাপদ।


তথ্যসুত্রঃ গুগল, ভোরের কাগজ, অভিজিৎ।

আরো দেখুন