Loading..

সফলতার গল্প

শিক্ষক হিসেবে আমার সফলতার গল্প
article

আমি, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, বর্তমানে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে সিনিয়র শিক্ষক পদে কর্মরত আছি এবং পাশাপাশি সিনিয়র একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছি।


ছোটবেলা থেকেই শিক্ষক হওয়ার সুপ্ত বাসনাকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে বিভিন্ন চ্যালেন্জ মোকাবিলার মাধ্যমে আমাকে অগ্রসর হতে হয়েছে। শিক্ষক হওয়ার আগে লেখালেখির ঝোঁক ছিল বেশ। অবশ্য লেখালেখির জগতে আসার পিছনে একটা পটভূমি রয়েছে। 


ছোটবেলায় ফুটবল খেলতে খুব পছন্দ করতাম। চট্টগ্রামের আসকার দিঘীর পশ্চিম পাড়ের কবিগুণাকর লেইনেই শৈশব-কৈশোর আর যৌবনের সময়গুলো অতিবাহিত হয়েছে। কবিগুণাকর লেইনের পিচঢালা রাস্তার উপরই বিকেলবেলা ফুটবল খেলতাম। পড়ে গিয়ে হাত ভেঙ্গেছে অনেকবার। আমার বাঁকাহাত যার প্রমাণ বহন করছে আজও।


আমি যখন ৮ম শ্রেণির ছাত্র, তখন একদিন চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামের বর্তমানে জিমনেমিয়ামের সামনের জায়গায় ক্রিকেট খেলছিলাম। খেলায় কাঠের বলে মাথায় হেলমেট ছাড়াই ব্যাট করতে নেমে গেলাম। আর সহপাঠির করা বাউন্স বলটি সজোরে আঘাত করে আমার গালের নিচের অংশে। ফলে উপরের পাটির দাঁত আর নিচের পাটির দাঁতের মাঝখানে পড়ে আমার জিহ্বা দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। ডানপাশে কেবল একটুখানি লাগানো ছিল। অত:পর আমার ভগ্নিপতি মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ আমাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে আমার জিহ্বা সেলাই করা হয়। সেই সেলাই করা জিহ্বা নিয়েই এখনো চলছে আমার পথচলা। এই দুর্ঘটনার পর পরিবার হতে আমার খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে পদার্পন করলাম লেখালেখির জগতে।


স্কুল জীবনে একবার জাতীয় পুরস্কার লাভ করায় নজরে পড়ি পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষাগুরু তৎকালীন চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক, জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক এ,কে, মাহমুদুল হক স্যারের, যাঁর দক্ষতা, সততা, কতর্ব্যপরায়নতা সর্বোপরি তাঁর কর্মনিষ্ঠা আমাকে এমনভাবে মোহিত করেছিল যে তখন থেকেই একজন শিক্ষক হওয়ার সুপ্ত বাসনা আমার মনে জাগ্রত হয়েছিল। এবং পরবর্তীতে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিটাগাং আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে আমার শিক্ষকতা জীবনের যাত্রা শুরু হয়।


এ,কে,মাহমুদুল হক স্যার আমার মধ্যে শিক্ষক হওয়ার স্পৃহা জাগ্রত করেছেন। আর আমাকে শিক্ষক হিসেবে তৈরি করেছেন চট্টগ্রাম টিচার্স ট্রেণিং কলেজের পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ। শহীদুল আমিন চৌধুরী স্যার, আখতার হোসাইন কুতুবী স্যার, শামসুদ্দীন শিশির স্যার, ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ স্যার, আব্দুল খালেক স্যার, প্রিন্স স্যার, বিষ্ণু স্যার, হুমায়রা পান্না ম্যাডাম, সুমিত্রা বড়ুয়া ম্যাডামসহ আরো অনেকেই ছিলেন "শিক্ষক গড়ার কারিগর"। সকাল ৯.৩০ হতে বিকাল ৪.৩০ পর্যন্ত শিক্ষক গড়ার নামে আমাদের উপর চলত নির্যাতন। যার কারনে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (TTC) অনেকের কাছেই টিচার্স টরচারিং কলেজ নামে পরিচিত ছিল, তবে সেই নির্যাতনের আড়ালে ছিল এক আলোকিত জগতের হাতছানি - "মানুষ গড়ার কারিগর" হওয়ার মূলমন্ত্র। লেসন প্ল্যান নিয়ে কুতুবী স্যারের যেমন ছিল কঠোরতা, তেমনি শিশির স্যারের ছিল মায়া ছড়ানো কোমলতা। ফরহাদ স্যারের ব্যক্তিত্ব, খালেক স্যারের অসাধারন বাচনভঙ্গী, বিষ্ণু স্যারের মিষ্টি কথা এসব কিছু থেকেই অল্প স্বল্প মন্ত্র নিয়ে নিজেকে সাজানোর চেষ্টা করেছি শিক্ষক হওয়ার পদযাত্রায়। নেতৃত্ব গুণাবলী অর্জনের অন্যতম একটি মাধ্যম ছিল ছাত্র প্রতিনিধি সংসদ নির্বাচন।


চারদিকে কেমন উৎসব উৎসব ভাব। নেতা হওয়ার সুপ্ত বাসনা থেকেই অংশ নিলাম ছাত্র প্রতিনিধি সংসদের বার্ষিকী সহ-সম্পাদক পদে। নির্বাচনে বিশিষ্ট সমাজসেবক বর্তমানে মা ও শিশু হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন  সম্পাদক এবং বন্ধু মৃদুল কান্তি সহ- সম্পাদক নির্বাচিত হন। নির্বাচনে পরাজিত হলেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনার দায়িত্ব পড়েছিল আমার উপরই।

 

চিটাগাং আইডিয়্যাল স্কুলে শিক্ষকতা করার সুযোগ পাওয়ার পিছনে একটি কাহিনী আছে। যেহেতু শিক্ষকতা পেশাই ছিল আমার লক্ষ্য, সেহেতু কর্মজীবনের আগেই চট্টগ্রাম টিচার্স ট্রেণিং কলেজ থেকে ২০০১ সালে বিএড সম্পন্ন করি। ফলাফল ভালই ছিল; স্কলারশিপসহ প্রথম বিভাগ। যে শিক্ষককে অনুসরণ করে শিক্ষকতা পেশায় আসার গল্প সাজিয়েছি, সেই এ কে মাহমুদুল হক স্যারকে ফলাফল না জানানো অপরাধের সামিল মনে করে জামালখানস্থ চিটাগাং আইডিয়্যাল স্কুলে স্যারের অফিসে চলে গেলাম দেখা করতে। সাথে নিয়ে গেলাম একটি "চাকুরি প্রদানের দরখাস্ত"। স্যারের নির্দেশে দরখাস্ত অফিসে জমা দিতে গিয়ে জানলাম আরো কিছু দরখাস্ত জমা পড়েছে।


৩০ ডিসেম্বর ২০০১ তারিখ সকালবেলা গেলাম আউটার স্টেডিয়ামে বিজয়মেলায়। নতুন কেনা মোবাইলে রিং হচ্ছে। ফোনে আমার বোন বলল, আইডিয়্যাল স্কুল থেকে একজন লোক এসেছেন, স্কুলে যোগাযোগ করতে বলে গেছেন। তড়িঘড়ি করে স্কুলে গিয়ে জানলাম জানুয়ারি ২০০২ এর ৩ তারিখ আমার নিয়োগ পরীক্ষা। কোন স্কুলে জীবনের প্রথম নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়া এই আমাকে জানুয়ারির ১২ তারিখের মধ্যে যোগদান করতে বলা হলো। যে শিক্ষকের অনুসরণে শিক্ষক হওয়ার তীব্র বাসনা ছিল; সেই শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে শিক্ষকতা করার বিরল সুযোগ - এতো পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমত।

এরপর শুরু হলো কাছ থেকে প্রিয় শিক্ষককে অনুসরণ করার পথচলা - অর্থ্যাৎ, নক্ষত্রের সাথে পথচলা।

 

২০০২ সালের ১২ জানুয়ারি সকাল ৮.০০টায়  চিটাগাং আইডিয়্যাল  স্কুল এন্ড কলেজে যোগদানের মাধ্যমে আমার শিক্ষকতা পেশায় পথচলা শুরু। প্রথমদিন ছিল কেবল পরিচয় পর্ব। বিজ্ঞান শিক্ষক মরহুম আবু তাহের মজুমদার স্যার তার অমায়িক হাসির মাধ্যমেই আমাকে অভ্যর্থনা জানালেন। জামাল খান সলিমা সিরাজ মাদ্রাসার পাশে দ্বিতল ভবনটিই  ছিল আইডিয়্যাল স্কুলের শহরকেন্দ্রিক প্রশাসনিক  শাখা যা ছিল ছাত্রীদের ক্যাম্পাস । তবে এই স্কুলের প্রধান শাখা ছিল পটিয়ার হরিনখাইনে। মহসিন কলেজের দক্ষিন গেটের বিপরীত পাশে ছিল বালক শাখা যেখানে আমার পোস্টিং হয়। বালক শাখাটি ছিল সেমিপাকা টিনশেড এল আকৃতির ভবন, সামনে খোলা মাঠ । বালক শাখার শিবলি নোমানী, মোহাম্মদ আলম, ছৈয়দুল আলম, শিউলি ম্যাডাম, হেনা ম্যাডাম, শাকের উল্লাহ স্যার, কাউসার স্যার, সাখাওয়াত স্যারসহ সবাই আমাকে আন্তরিকতার সাথেই গ্রহণ করেছেন। আমি চেয়ারম্যান স্যারের (এ কে মাহমুদুল হক স্যার) সরাসরি ছাত্র জেনে সবাই পুলকিতও হয়েছিলেন।


চিটাগাং আইডিয়্যাল স্কুলের বালক শাখাতেই এ কে মাহমুদুল হক স্যার বসতেন। নিজ ছাত্রকে আমরা যেমন হাতে ধরে শেখাই, তেমনি তিনি আমাকে হাতে ধরেই শিক্ষক হওয়ার মন্ত্র শেখাতেন। বিভিন্ন কমিটির দায়িত্ব, বৃত্তির কোচিং ক্লাস পরিচালনার দায়িত্ব, শ্রেণিশিক্ষকের দায়িত্ব, বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন এবং উপস্থাপনাসহ অনেক দায়িত্ব তিনি আমার  উপর অর্পন করে নির্ভার থাকতেন। আর আমিও কমিটির বিভিন্ন কাজগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করে  নিজের যোগ্যতাকে শানিত করতাম। অবশ্য দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আরেকটি প্রভাবক ছিল- তা হলো প্রিয় শিক্ষকের মন জয় করা।


ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ এমপিও যোগ্য নয়- এ তথ্য জানার পর মন আনচান করতে লাগল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। খুঁজতে শুরু করলাম নামীদামি এমপিও ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। একদিন পত্রিকায় চট্টগ্রাম পাবলিক স্কুল ও কলেজের (বর্তমানে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করে ফেললাম। ২০০৬ এর মার্চের ১০ তারিখ শুক্রবার সকাল ৯.০০ টায় লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য চিঠি পেলাম। সকাল ৮.০০ টায় উপস্থিত হয়ে নির্ধারিত কক্ষে গিয়ে দেখি পরীক্ষা কক্ষ কানায় কানায় পূর্ণ। সকাল ৯.০০টার পরীক্ষা সকাল ১০.০০টায় শুরু হয়ে চললো বেলা ১২.০০ টা পর্যন্ত। জানানো হলো ঐদিন বিকালেই লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রদান করা হবে এবং যারা নির্বাচিত হবে তাদের পরদিন ১১ মার্চ শনিবার মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে। পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্ব পালনকারী বেলাল স্যারের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারনা নিয়ে জানতে পারলাম সেখানে নতুনভাবে চালুকৃত ইংরেজি মাধ্যমে পাঠদানের জন্যই শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বাংলা ভার্সনে পড়ানো আমি ইংরেজি ভার্সনের কথা শুনেই চুপসে গেলাম। সেই চুপসানো মন নিয়েই ছুটে চললাম চকবাজার টিচার্স ট্রেনিং কলেজে বেলা ২.০০ টার এম এড সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার জন্য।


আত্মবিশ্বাসের জায়গা থেকেই লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। ফলে বিকাল ৫.০০ টায় এমএড পরীক্ষা শেষ করেই ছুটে আসলাম আবার পাবলিক স্কুলে। সন্ধ্যা ৬.০০ স্কুলে পোঁছে দেখি অনেকেই ফলাফলের জন্য অপেক্ষমান। সন্ধ্যায় স্কুলের গ্লোব চত্ত্বরে বসে বসে নিজের রক্ত বিলিয়ে দিয়েছিলাম পাহাড়ী মশার কল্যানে।


রাত ৮.০০ টায় তৎকালীন উপাধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম চৌধুরী স্যার ফলাফল ঘোষণা করে উত্তীর্ণদের পরদিন সকালবেলা মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা জানালেন। জীবনের দ্বিতীয় নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মনে মনে পরদিন মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নিতে বাসায় ফিরলাম যখন; তখন ঘড়ি জানান দিচ্ছে রাত ১০.০০ বাজে।


পরদিন সকালবেলা উপস্থিত হলাম মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য। উচ্ছ্বাস এবং ভয়ের এক সংমিশ্রণ পরিস্থিতিতে কেবলমাত্র নিজের আত্মবিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোজাফফর আহমেদ (তৎকালীন সভাপতি- পরিচালনা পর্ষদ), তৎকালীন অধ্যক্ষ কর্নেল শাহ মুর্তজা আলী, উপাধ্যক্ষ মো: মাহবুবুল আলম চৌধুরী, সরকারী প্রতিনিধি নাসিরাবাদ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হোসেন আহাম্মদ এবং অধ্যাপক তড়িৎ চক্রবর্তীর প্রশ্নবানে নিজের জড়তাকে কাটিয়ে সাবলিলভাবেই উত্তর দিয়ে নিজের যোগ্যতাকে আরেকবার শানিত করার সুযোগ পেলাম। সেই থেকেই শুরু চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে পথচলা। আর এই পথ চলতে গিয়ে ঝুড়িতে জমা হয়েছে অনেক সাফল্য তারই কথামালা জানাব এবার।


আমি বরাবরই একজন স্বপ্নবাজ মানুষ। স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি এবং সম্ভব হলে তা বাস্তবায়ন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। আর এ কাজে আমাকে সর্বদাই সহযোগিতা করে আমার অন্তরাত্মা যেখানে আমি ধারন করি, আগ্রহ + লেগে থাকা = সাফল্য।


শ্রেষ্ঠশিক্ষকের স্বীকৃতি:

আমি  বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রনালয় আয়োজিত জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ২০১৮, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হই।তাছাড়া ২০১৮,২০২২, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে মোট চারবার চট্টগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক এবং ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০২২, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে মোট ছয়বার  থানা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত হই। আমি  সার্বিক বিবেচনায় ২০১৯ সালে এবং ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মর্যাদা লাভ করি।


বৈদেশিক প্রশিক্ষণ:

২০১৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার Daegu Metropolition Office of Education এর আমন্ত্রণে আইসিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মনোনীত হওয়া ছিল শিক্ষকতা জীবনে আমার পরম পাওয়া। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) অর্জনের লক্ষ্যে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্যই আইসিটি বিষয়ক বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখার জন্য ছিল আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস। আর এ লক্ষ্য অর্জনে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত আইসিটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ ছিল আমার জন্য একটি মাইল ফলক।


আমি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ফেলোশিপ Fulbright Teaching Excellence and Achievement Program এর আওতায় U.S. Department of State's Bureau of Educational and Cultural Affairs এর অধীনে U.S. Government এর অর্থায়নে University of Nevada তে অনুষ্ঠিত ছয় সপ্তাহের Professional Development বিষয়ক প্রশিক্ষন গ্রহণ করি। বিশ্বের ১০০ টির বেশি দেশ হতে সর্বমোট ১৬০ জন উক্ত প্রশিক্ষনের জন্য নির্বাচিত হন।

আমি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত "ইন্টারন্যাশনাল হাই স্কুল টিচার প্রোগ্রাম (HST)" এ অংশগ্রহণ করি। বিশ্বের ৩৮টি দেশ  থেকে মাত্র ৪৮ জন শিক্ষককে এই প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচন করা হয়।

বাংলাদেশের ইতিহাসে আমি ২য় ব্যক্তি যিনি এই মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচিত হয়েছি। প্রোগ্রামটি আয়োজন করছে European Organization for Nuclear Research (CERN)।


এই ছিলো শিক্ষক হিসেবে আমার সফলতার গল্প। সকলের নিকট দোয়া কামনা করছি।  

মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন
সিনিয়র শিক্ষক
CHITTAGONG CANTONMENT PUBLIC COLLEGE
বায়জিদ বোস্তামী, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম
ইমেইলঃ mjuccpc@yahoo.com
মন্তব্য করুন