Loading..

প্রেজেন্টেশন

১৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ

কুঁজো বুড়ির গল্প।

এক  ছিল কুঁজো বুড়ি। বুড়ির ছিল তিনটি কুকুর। রঙ্গা, বঙ্গা আর ভুতু। বুড়ি ঠিক করলেন নাতনির বাড়ি যাবেন। তাই রঙ্গা, বঙ্গা আর ভুতুকে ডাকলেন। বললেন,”তোরা বাড়ি পাহারা দে। আমি নাতনিকে দেখে আসি।”

 

কুকুর তিনটি বলল,”আচ্ছা।”

 

বুড়ি রওয়ানা হলেন। লাঠি ঠুক ঠুক  করে কুঁজো বুড়ি চললেন। খানিক দূরে যেতেই এক শিয়ালের সঙ্গে বুড়ির দেখা। শিয়াল বলল,”আমার খুব খিদে। বুড়ি, তোমাকে আমি খাব।” বুড়ি বুদ্ধি করে বললেন,”আমাকে এখন খেয়ো না। আমার গায়ের কি মাংস আছে? আগে নাতনির বাড়ি যাই। খেয়েদেয়ে মোটাতাজা হয়ে আসি। তখন বরং খেয়ো।” শিয়াল বলল, “ঠিক আছে। তবে তাই যাও, মোটাতাজা হয়ে এসো।”

 

বুড়ি সামনে এগিয়ে চললেন। তিনি লাঠি ঠুক ঠুক করে যান। হঠাৎ এক বাঘ সামনে এসে বলল, “হালুম! বুড়ি, তোমাকে আমি খাব।আমার খুব খিদে পেয়েছে।” বুড়ি দেখেন, এ তো মহা মুশকিল। বাঘকে একই কথা বলেন তিনি। বাঘ দেখল বুড়ির কথা মিছে নয়। বলল,”তবে যাও। কিন্তু ফিরে আসতে হবে, হ্যাঁ।”

 

আবার কুঁজো বুড়ি পথ চলেন। আস্তে আস্তে লাঠিতে ভর দিয়ে।  এক সময় নাতনির বাড়ি পৌঁছে গেল্বন বুড়ি। নাতনির বাড়িতে কদিন মজার মজার খাবার খেলেন। তাতে বুড়ি মোটা হলেন। বুড়ি মহাচিন্তায় পড়লেন। এবার ফিরবেন কীভাবে? বুড়ি নাতনিকে সব কথা খুলে বললেন। নাতনি বলল, “চিন্তার কিছু নেই। আমি সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।”

 

নাতনি একটা মস্ত লাউয়ের কোল জোগাড় করল। তার ভিতরে ঢুকিয়ে দিল বুড়িকে। সঙ্গে দিল কিছু চিঁড়ে আর গুড়। এবার খোলটাকে দিল জোরে এক ধাক্কা। গড়িয়ে চলল সেই লাউয়ের খোল। খোল গড়াতে গড়াতে চলে বাঘের কাছে। বাঘ গর গর করে খোলে দিল এক ধাক্কা। আবার গড়িয়ে চলল লাউয়ের খোল। বুড়ি ছড়া কাটেন-

লাউ গুড় গুড় লাউ গুড় গুড়

চিঁড়ে খায় আর খায় গুড়

বুড়ি গেল অনেক দূর।

 

খোল গড়াতে গড়াতে এলো শিয়ালের কাছে। শিয়াল দেখল খোলের ভিতরে বুড়ি। বলল,”বুড়ি এবার তোমাকে এক্ষুনি খাব।” বুড়ি বলল, খাবি তো খুব ভালো কথা। কিন্তু আমারও তো কিছু ইচ্ছে আছে। আমি যে তোর গান শুনতে চাই।” শিয়াল তক্ষুনি গান ধরল, হুক্কা হুয়া। হুক্কা হুয়া। বুড়ি গিয়ে দাঁড়ালেন একটা উঁচু ঢিবির উপর। বুড়ি গানের সুরে ডাকলেন-

আয় আয় তু তু

রঙ্গা বঙ্গা ভুতু

আয় আয় আয়

জলদি চলে আয়।

নিমেষেই ছুটে এলো বুড়ির কুকুর তিনটি। শিয়ালকে ঘিরে ফেলল তারা। একটা কামড় দিল শিয়ালের কানে, আরেকটা দিল ঘাড়ে, একটা পায়ে। বাছা এবার যাবে কোথায়? শিয়াল তখন নাস্তানাবুদ, মরমর দশা।

 

কুঁজো বুড়ি মহানন্দে চললেন তার বাড়ির দিকে  সঙ্গে রঙ্গা, বঙ্গা আর ভুতু।